রবিবার, ৬ নভেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » বিএনপি নেতাকর্মীদের চোখে ‘হিলারি’ স্বপ্ন!
বিএনপি নেতাকর্মীদের চোখে ‘হিলারি’ স্বপ্ন!
পক্ষকাল ডেস্কঃ
নরেন্দ্র মোদি যেদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী হয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন, সেদিন বিএনপির নেতাকর্মীদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। দিশেহারা বিএনপির ভাঙা তরীতে যেন নতুন করে কিছুটা আশার সঞ্চার হয়েছিল। নতুন করে স্বপ্নও দেখেছিলেন অনেকে। অনেক নেতাকর্মীর উচ্ছ্বাস এতটাই বাঁধভাঙা ছিল যে, মোদির বিজয়ে যেন বিজয়ী হয়েছিল বিএনপিও।
তবে সেই স্বপ্ন ভাঙতে সময় লাগেনি। সব মিলিয়ে এখন টানা ১০ বছর ক্ষমতার বাইরে বিএনপি।
আবার নতুন আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে ঘিরে আবারও বিএনপির ঘরে বিরাজ করছে এক রকমের উচ্ছ্বাস। ঝিমিয়ে পড়া বিএনপিতে এমন উচ্ছ্বাসের কারণ হলো- হিলারি ক্লিনটন। হিলারি ক্ষমতায় আসতে পারেন- এমন সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখেই বিএনপিতে এখন চলছে নতুন জল্পনা-কল্পনা।
দলের এক অংশের নেতাকর্মীদের ধারণা, হিলারি ক্ষমতায় এলে বিএনপি লাভবান হবে। হারানো ক্ষমতা ফিরে পাওয়ায় সহযোগিতার হাত প্রসারিত করবেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের স্ত্রী হিলারি ক্লিনটন।
তারা মনে করছেন, হিলারি ক্লিনটন বিএনপির পুরনো বন্ধু। মোদি মুখ ফিরিয়ে নিলেও হিলারি হতাশ করবেন না বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে। এক্ষেত্রে গেল অক্টোবরে হিলারির জন্মদিনের অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদের উপস্থিতি তাদের স্বপ্ন আরও প্রসারিত করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই নির্বাচনে হিলারি ইস্যু বিএনপির কাছে এতো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠার পেছনে আরও যে কারণটি রয়েছে তা হলো- অধ্যাপক ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের মতপার্থক্য।
অন্যদিকে বিএনপির মধ্যকার আরেকটি অংশ মনে করছে- আসলে বিদেশনির্ভর রাজনীতিতে ক্ষমতার পটপরিবর্তন হবে -এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। যুক্তরাষ্ট্র বা ভারতে কে ক্ষমতায় এলো বা এলো না তাতে ওইসব দেশের পররাষ্ট্রনীতিতে যে আমূল পরিবর্তন হয়- এমনটা লক্ষ্য করা যায়নি।
ভারতের মোদি সরকারে যেমন বিএনপির স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা হতে পারে বলে শঙ্কা তাদের।
এ বিষয়ে দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহল কবির রিজভী বলেন, আমরা ৭ নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের’ সমাবেশ নিয়ে এখন ভাবছি। হিলারি ক্ষমতায় এলে বিএনপি লাভবান হবে কি না -এটা কূটনৈতিক বিষয়। এ নিয়ে এখন কিছু বলবো না।
সাবেক সেনাপ্রধান ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, হিলারি ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশ লাভবান হবে। কারণ, হিলারি ও তার স্বামীর সঙ্গে বাংলাদেশের ভালো সম্পর্ক ছিল। তারা অনেকবার বাংলাদেশে এসেছেন। তবে হিলারি ক্ষমতায় এলে বিএনপি লাভবান হবে -এটা ভাবা ঠিক নয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রবীণ অধ্যাপক ও বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন বেপারী বলেন, মোদি ক্ষমতায় আসার পর উচ্ছ্বসিত ছিল বিএনপি। কিন্তু ফল শূন্য। সম্প্রতি হিলারি ক্ষমতায় এলে বিএনপি লাভবান হবে -তাই তারা নতুন করে উচ্ছ্বসিত। তবে তাদের (যুক্তরাষ্ট ও ভারত) রাষ্ট্রীয় ‘পলিসি’ হেরফের হয় না।
তিনি আরো বলেন, তবে হিলারি ক্ষমতায় এলে ড. ইউনূস ইস্যুতে বিএনপি লাভবান হতে পারে। কারণ হিলারির পরিবারে ইউনূসের প্রভাব রয়েছে। গ্রামীণ ব্যাংক ইস্যুতে হিলারি বাংলাদেশে এসে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে গ্রামীণ ব্যাংকের তৎকালীন সংকট মিটিয়ে ফেলতে বলেছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হিলারির অনুরোধ রাখেননি। সেই ক্ষেত্রে কিছুটা…।
তিনি বলেন, ভারতের মতো জাতীয় স্বার্থ রক্ষা হলে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে। তখন হয়তো ভারতের মতো একই অবস্থা হবে।