শনিবার, ১৯ নভেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » অর্থনীতি » রাশিয়া তেজষ্ক্রিয় বর্জ্য ফেরত না নিলে রূপপুর প্রকল্প বাতিল কর: সর্বজন বিপ্লবী দল
রাশিয়া তেজষ্ক্রিয় বর্জ্য ফেরত না নিলে রূপপুর প্রকল্প বাতিল কর: সর্বজন বিপ্লবী দল
পক্ষকাল সংবাদঃ আজ ১৯ নভেম্বর ২০১৬ শনিবার সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে সর্বজন বিপ্লবী দলের উদ্যোগে ‘রাশিয়া তেজষ্ক্রিয় বর্জ্য ফেরত না নিলে রূপপুর প্রকল্প বাতিলের’ দাবিতে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্টিত হয়। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের আহবায়ক প্রকৌশলী ম. ইনামুল হকের সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধে সর্বজন বিপ্লবী দলের সদস্য সচিব ও সিটিজেনস রাইটস মুভমেন্টের মহাসচিব তুসার রেহমান বলেন, রূপপুর পানমানবিক বিদ্যুত কেন্দ্রের তেজষ্ক্রিয় জ্বালানি বর্জ্য (স্পেন্ট ফুয়েল) রাশিয়ার ফেরত নেওয়ার কথা ছিল। অথচ এখন এ বিষয়ে রাশিয়া বলছে তারা তেজষ্ক্রিয় বর্জ্য ফেরত নিবে না। এই নেয়া না নেয়ার অনিশ্চয়তায় সরকার উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।
তুসার রেহমান বলেন, রূপপুর পারমানবিক প্রকল্প নির্মাণ ও চালুর সিদ্ধান্তে দেশের সচেতন মহল বহু আগথেকেই তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়ে আসছে। এখন সরকারের এই উদ্বিগ্নতায় দেশের সকল শ্রেণী পেশার সচেতন মহল আজ দারুনভাবে উদ্বিগ্ন ও হতাশ। তুসার রেহমান তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তেজষ্ক্রিয় জ্বালানি বর্জ্য খুবই বিপজ্জনক। এর সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা একটি উচ্চ মাত্রার বিশেষায়িত বিষয়। এটা করার সামর্থ বাংলাদেশের নেই। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে, পরিবেশ সম্মত বাসযোগ্য ঢাকা বাস্তবায়ন পরিষদের সদস্য সচিব হাজী মোঃ শহীদ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট’র এডভোকেট জুলফিয়া আক্তার রিতা প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক বলেন, রাশিয়া তেজষ্ক্রিয় বর্জ্য ফেরত না নিলে রূপপুর প্রকল্প এখনই বাতিল করতে হবে। রূপপুর প্রকল্প বিষয়ে দুই দেশের সাধারণ চুক্তির ৮ নং অনুচ্ছেদের ২ নং ধারায় বলা হয়েছে, আলাদা একটি চুক্তিতে উভয় পক্ষ যেসব শর্তে একমত হবে, সেই অনুযায়ী তেজষ্ক্রিয় জ্বালানি ফেরত নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। ম. ইনামুল হক আরও বলেন, খসড়া চুক্তি নিয়ে উভয় পক্ষের আলোচনায় বাংলাদেশ তার আগের অবস্থান বজায় রাখলেও রাশিয়ার অবস্থান কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। রাশিয়ার বর্তমান অবস্থান হচ্ছে, তেজষ্ক্রিয় জ্বালানি বর্জ্য পরিবহন যোগ্য হওয়ার পর রাশিয়া তা নিয়ে পরিশোধন করবে। এর পর তা বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে এবং তারপর থেকে তা বাংলাদেশকেই সংরক্ষেণ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে তুসার রেহমান বলেন, রূপপুর প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লক্ষ ১ হাজার কোটি টাকা। আমরা জেনে বুঝে স্থায়ী বিপদের ন্যায় এমন একটি ব্যয়বহুল ও অত্যন্ত বিপজ্জনক প্রকল্প হতে দেবনা। ক্রান্তিয় অঞ্চলে অবস্থিত বাংলাদেশে আছে বিপুল পরিমাণের সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের সুযোগ ও সম্ভাবনা। তাছাড়া আমাদের আছে ষড় ঋতুনির্ভর উর্বর জমি, যেখানে বছরে ৩ থেকে ৪টি ফসল উৎপাদন করা যায়। আমরা নবায়নযোগ্য শক্তি ও সম্পদের ভিত্তিতে এবং কার্যকর অর্থে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করে জ্বালানি নিরাপত্তা অর্জন করতে পারি। তাছাড়া ফুলবাড়ি ও বড়পুকুরিয়ায় আমাদের আছে উন্নত মানের কয়লা। আমরা বড় পুকুরিয়ার মতো শাফট বসিয়ে টানেল পদ্ধতিতে উভয় স্থান থেকে কয়লা তুলে কয়লা খনির কাছে অনেক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে পারি।
আমাদের বক্তব্য, স্থাপিত কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি দূষণ দূর করে আমাদের কয়লা দিয়ে বিদুৎ কেন্দ্র স্থাপন করে বিশ্বের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও আমাদের দক্ষিণের নিরাপত্তা দেয়াল নামে খ্যাত সুন্দরবন রক্ষার্থে অবিলম্বে রামপাল প্রকল্প বাতিল কর।