বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৪
প্রথম পাতা » জেলার খবর | রাজনীতি » ভিতরবন্দ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে বাণিজ্যের অভিযোগ
ভিতরবন্দ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে বাণিজ্যের অভিযোগ
কুড়িগ্রাম থেকে মোঃ রফিকুল ইসলাম
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির যোগ-সাজসে গোপণ প্রক্রিয়ায় ১ জন প্রধান শিক্ষক সহ ৩ জন সহকারী শিক্ষক নিয়োগের মাধ্যমে প্রায় ২০ লাখ টাকা ঘুষ বাণিজ্যের চাঞ্চল্যকর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সম্প্রতি সময়ে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ ইয়াহিয়া খাঁন ও ম্যানেজিং কমিটির কতিপয় সদস্যের যোগসাজসে ১ জন প্রধান শিক্ষকসহ ৩ জন সহকারী শিক্ষক নিয়োগের গোপন প্রক্রিয়ায় নেয়া হয়। এরই লক্ষ্যে একটি জাতীয় ও একটি স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় গত ২৯/০৯/২০১৪ ইং তারিখে নিয়োগ বিজ্ঞাপন দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে পত্রিকা দুটি কুড়িগ্রাম জেলায় সম্পূর্ণ রূপে গোপন রাখার চেষ্টা চালানো হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের যোগসাজসে তাঁর মনোনীত লোকজনকে প্রায় ২০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে চাকুরী দিতে কিছু সংখ্যক লোকজনকে দিয়ে নাম মাত্র আবেদন পত্র দেখানোর অভিযোগ রয়েছে। এলাকায় বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সকল সদস্যদেরকে না জানিয়ে এমনকি অভিভাবক মহলও কোনভাবেই নিয়োগের বিষয়টি অবগত নয়। অভিযোগে আরও জানা যায়, কৌশলে জাল কাগজপত্রের মাধ্যমে শাখা অনুমোদন দেখিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়াটি চালানো হচ্ছে। ভিতরবন্দ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে মাধ্যমিক/উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড, রাজশাহীর নির্দেশনা মোতাবেক মোট ১৩/১৪ জন শিক্ষক কর্মরত থাকার কথা থাকলেও সেখানে বর্তমানে ২১ জন শিক্ষক কর্মরত রয়েছে। এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ভব শঙ্কর বর্মা জানান, এখনও ভিতরবন্দ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়ার কোন কাগজপত্র শিক্ষা অফিসার বরাবর দাখিল করা হয়নি। কাগজপত্র জমা দেওয়া হলে শাখা খোলার অনুমোদনের কাগজপত্র যাচাই সহ স্বচ্ছতার ভিত্তিতে সবকিছু দেখা হবে। ভিতরবন্দ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মোঃ মহিবুল হক খোকন বলেন, ভিতরবন্দ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি আমি ৬ ডিসেম্বও পর্যন্ত অবগত নই । তবে এটা কোন ধরণের নীতিমালা ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের না জানিয়েই কোন প্রকার রেজুলেশনে সহি, স্বাক্ষর না নিয়েই গোপনে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা। এ ধরণের অবৈধ কোন কাজ আমি মেনে নিব না। ভিতরবন্দ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও নিয়োগকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুল লতিফ বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে, ব্যাকডেটের শাখা খোলার কাগজ আমি সত্যায়িত করেছি। তবে কাগজের বৈধতার বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে আমার জানা নেই। বিদ্যালয়ের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে কয়েকবার মোবাইলে যোগযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। স্থানীয় শিক্ষার্থীর অভিভাবক মোঃ সহিদুল ইসলাম বলেন, গোপনে ভিতরবন্দ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের পায়তারা চলছে। শুনেছি জন প্রতি ৫/৬ লাখ টাকা করে প্রত্যেকের কাছ থেকে নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ ইয়াহিয়া খাঁন অপরিচিত কোন ফোন নাম্বার থেকে তাকে কল করা হলে তিনি রিসিভ করেন না। ভিতরবন্দ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির দাতা সদস্য ডাঃ মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, নতুন ম্যানেজিং কমিটি গঠন হওয়ার পর থেকে গোপন প্রক্রিয়ায় নিয়োগ সম্পূর্ণ করার প্রক্রিয়া চলছে বলে, আমিও শুনেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত নিয়োগের কোন বিষয়েই আমি জানি না। আমাকে কোন মিটিং এ ডাকা হয় না।