ক্যাম্পে যোগ দিলেন জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা
পক্ষকাল প্রতিবেদক: নতুন বছরে নতুন করে দল গোছানোর প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। এ মাসের ১৬ তারিখে শুরু হতে যাচ্ছে বহুল আলোচিত বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক গোল্ড কাপ। সে লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার দলের কোচ সাইফুল বারী টিটুর কাছে রিপোর্ট করেছেন বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের প্রাথমিক দলে ডাক পাওয়া ২৬ ফুটবলারের ১৯ জন। বাকিরা ঢাকার বাইরে থাকায় হরতালের কারণে আসতে পারেননি। কোচ জানিয়েছেন অন্য ৭ জন পরবর্তীতে বিকেএসপিতে এসে ক্যাম্পে যোগ দেবেন।
টুর্নামেন্টে নিজেদের লক্ষ্যের কথা জানালেন কোচ টিটু,‘ আমরা গেল বছরে বেশ কয়েকটি প্রীতি ম্যাচ খেলেছি শ্রীলংকা এবং নেপালের ও জাপান অনুর্ধ্ব-২১ দলে সঙ্গে । তাদের সাথে খেলে আমাদের দুর্বলতা ও ভুলগুলো শুধরে নিয়েছি। আমরা বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের স্বাগতিক হিসেবে আমাদের উচিৎ টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা। কিন্তু বাস্তবতাটাও তো মানতে হবে। কঠিন দলগুলো খেলছে এই টুর্নামেন্টে। সে অনুযায়ীই আমাদের লক্ষ্য স্থির করতে হবে। আমাদের লক্ষ্য থাকবে অন্তত সেমিফাইনাল খেলা।’
গত বছরটি ভালোই কেটেছে বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য। অনেকগুলো আন্তর্জাতিক ম্যাচও খেলেছে জাতীয় দল এবং ক্লাবগুলো। যার প্রভাব পড়তে পারে আসন্ন গোল্ডকাপে। অভিমত টিটুর,‘২০১৪ তে আমরা কিছু শক্তিধর দলের সঙ্গে খেলতে পেরেছি। তাদের সঙ্গে খেলার সুফলটা হয়তো আমরা বঙ্গবন্ধু কাপে পেতে পারি।
দলের খেলোয়াড়রাও কোচের সঙ্গে একমত দলের নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড় নাসিরুদ্দিন, ‘নিজেদের মাটিতে ভালো খেলতেই হবে। আমরা চাই টুর্নামেন্টে ভালো খেলে বছরটা ভালো ভাবে শুরু করতে।’
গত আগস্টে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকে (এনএসসি) সিলেট ভেন্যুতে বঙ্গবন্ধু কাপের ম্যাচ আয়োজনের সিদ্ধান্ত জানিয়েছিল বাফুফে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, বড় ধরনের সংস্কার ছাড়া সেখানে আন্তর্জাতিক মানের ম্যাচ আয়োজন করা সম্ভব নয়। উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সংস্কারকাজ এখনো আলোর মুখ দেখেনি!
দীর্ঘ দুই মাস চলে গেলেও সিলেট জেলা স্টেডিয়ামের সংস্কারকাজ শুরু হয়নি। এমনকি তহবিলও সংগ্রহ করতে পারেনি এনএসসি। তাদের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠকে বসার পরও সংস্কারকাজের অগ্রগতি নেই বলে জানিয়েছেন বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ। সংস্কারকাজের জন্য দুই কোটি টাকার বাজেট করেছে এনএসসি। তবে তাদের কাছে এই সংস্কারে বরাদ্দের জন্য নাকি মাত্র ৪০ হাজার টাকা জমা আছে এনএসসির কাছে। কিন্তু মাঠ ও ক্রীড়া কাঠামোর উন্নয়নে এ বছর ৩৮ কোটি টাকার বরাদ্দ আসছে সরকারের পক্ষ থেকে। এমন তথ্য জানিয়েছিলেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব শিবনাথ রায়।
সিলেট ভেন্যুর সবচেয়ে বড় সমস্যা আলোস্বল্পতা। ফ্লাডলাইট লাগানো না হলে নির্ধারিত সময় বিকাল ৫টায় খেলা পরিচালনা করা সম্ভব নয় বলে জানানো হয়েছে বাফুফের পক্ষ থেকে। এছাড়া স্টেডিয়ামের গেট, নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত বেষ্টনী, ডিজিটাল স্কোরবোর্ড এবং ভিআইপ রুমে জায়গা স্বল্পতাসহ অনেক কিছুই অনুপযোগী হয়ে পড়ে আছে। অথচ টুর্নামেন্টের বাকি আর মাত্র কয়েকদিন। ফলে এই ভেন্যুতে বঙ্গবন্ধু কাপের ৪টি ম্যাচ আয়োজন করা সম্ভব হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন অনেকে।
আদৌ সিলেট স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের ম্যাচগুলো করা সম্ভব হবে কিনা, এ নিয়ে ফুটবল অঙ্গনে চলছে নানা রকম গুজব। তবে বাফুফের সাধারণ সম্পাদক নিশ্চিত করলেন, এই দুই ভেন্যুতেই অনুষ্ঠিত হবে টুর্নামেন্ট, ‘বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম মোটামুটি প্রস্তুতই আছে। সিলেট স্টেডিয়ামের মাঠের কাজ শুরু হয়ে গেছে অনেক আগেই। ওই স্টেডিয়ামের মাঠে সমস্যা ছিল ক্রিকেট পিচ। সেটি ইতোমধ্যে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। বাকি যেসব আনুষঙ্গিক কাজ আছে, তা টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই শেষ করে ফেলা সম্ভব হবে।’
সব শ্রেণির দর্শকরা যাতে বঙ্গবন্ধু কাপের ম্যাচগুলো উপভোগ করতে পারে, সেজন্য ম্যাচগুলো মাঠে গড়াবে বিকাল ৫টায়। কিন্তু সিলেট স্টেডিয়ামের সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে ফ্লাডলাইট। সেখানে এখন পর্যন্ত ফ্লাডলাইট স্থাপন করা সম্ভব হয়নি। আর ফ্লাডলাইট স্থাপন করা সম্ভব না হলে বিকাল ৫টায় ম্যাচ খেলানো সম্ভব হবে না। দর্শকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে কোনোমতেই ম্যাচের সময় এগিয়ে আনতে রাজি নয় বাফুফে। তবে দু-একদিনের মধ্যেই ফ্লাডলাইটের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন।