রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি | শিক্ষা ও ক্যারিয়ার » একজন সৎ যোগ্য মানুষ সেলিনা হায়াৎ আইভি
একজন সৎ যোগ্য মানুষ সেলিনা হায়াৎ আইভি
পক্ষকাল ডেস্ক ; ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রভাবশালী সাময়িকী দ্য এশিয়ান’র চোখে এশিয়ার ক্ষমতাধর মেয়রদের মধ্যে অন্যতম।
তার বাবা আলী আহমেদ চুনকা ছিলেন নারায়ণগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি, স্বাধীনতার পর যিনি জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থেকে দু’দুবার (১৯৭৪ ও ১৯৭৭) নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগের জন্য নিবেদিতপ্রাণ পরিবারে বড় হয়ে তিনিও নিজেকে নিবেদিত করেন এ দলের তরে।
সেজন্য স্কলারশিপ পেয়ে রাশিয়ার একটি মেডিকেল ইনস্টিটিউট থেকে চিকিৎসাবিজ্ঞানে ডিগ্রি লাভের পর সেখানে স্থায়ী হয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকলেও সব ছেড়ে-ছুড়ে দেশে ফিরে আসেন। দলের হয়ে নেমে যান দেশসেবার রাজনীতিতে। তার এ আত্মনিবেদনের পুরস্কার দু’দুবার নারায়ণগঞ্জ শহরের মেয়র পদে (একবার পৌরসভা ও একবার সিটি করপোরেশন) লড়াইয়ে জয়।
এই তিনি ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রভাবশালী সাময়িকী দ্য এশিয়ান’র চোখে এশিয়ার ক্ষমতাধর মেয়রদের মধ্যে অন্যতম। জনপ্রিয় ও ক্ষমতাধর আইভী নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের আসন্ন নির্বাচনে মেয়র পদে আবারও লড়ছেন।
ডাক্তার আইভী ১৯৬৬ সালের ৬ই জুন নারায়ণগঞ্জের একটি রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। মাতা “মমতাজ বেগম” ও পিতা সাবেক পৌর চেয়ারম্যান “আলী আহাম্মদ চুনকা”।
চুনকা পরিবারের পাঁচ সন্তানের মধ্যে ডা. আইভী হলেন প্রথম সন্তান। তিনি দেওভোগ আখড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে শিক্ষা জীবন শুরু করেন।
পরবর্তীতে তিনি নারায়ণগঞ্জ প্রিপারেটরী স্কুলে ভর্তি হন এবং ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। অতঃপর তিনি মর্গ্যান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন।
১৯৭৯ সালে ট্যালেন্টপুলে জুনিয়র স্কলারশিপ পান এবং ১৯৮২ সালে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় স্টারমার্কসহ উত্তীর্ণ হন। এরপর তিনি ১৯৮৫ সালে রাশিয়ান সরকারের স্কলারশিপ নিয়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানে শিক্ষা গ্রহণের জন্য ওডেসা পিরাগোব মেডিক্যাল ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন এবং ১৯৯২ সালে কৃতিত্বের সাথে মেডিসিন ডাক্তার ডিগ্রি লাভ করেন।
পরবর্তীতে ১৯৯২-৯৩ সালে ঢাকা মিডফোর্ট হাসপাতালে ইন্টার্নি সম্পন্ন করেন। ডা. আইভী তাঁর সুদীর্ঘ শিক্ষা জীবনের পর ১৯৯৩-৯৪ সালে মিডফোর্ট হাসপাতালে এবং ১৯৯৪-৯৫ সালে নারায়ণগঞ্জ ২০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে অনারারি চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেন।
তিনি স্কুল ও কলেজ জীবন হতে বাবার সাথে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করতেন। ১৯৯৩ সালে তিনি নারায়ণগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদিকা ছিলেন।
২০০৩ সালে অনুষ্ঠিত পৌর চেয়ারম্যান নির্বাচনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাঁর সক্রিয় রাজনৈতিক জীবনের সূত্রপাত ঘটে। তিনি ১৬ জানুয়ারি ২০০৩ তারিখে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার প্রথম মহিলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এবং ২৭.০৬.২০১১ পর্যন্ত তিনি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
বর্তমানে তিনি নারায়ণগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির দায়িত্বে আছেন। তিনি আলী আহাম্মদ চুনকা ফাউন্ডেশন এবং নারায়ণগঞ্জ হার্ট ফাউন্ডেশন-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং তিনি স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ)-এর নারায়ণগঞ্জ জেলার আহ্বায়কের দায়িত্বে আছেন। এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত আছেন।
তিনি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রথম মেয়র এবং বাংলাদেশের প্রথম মহিলা যিনি কোনো সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
গতবারের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়েও কেবল জনপ্রিয়তার ভিতে নারায়ণগঞ্জ নগরের সর্বোচ্চ অধিকর্তার মুকুট জয় করে নিয়েছিলেন, দলের অভ্যন্তরীণ সব কোন্দলকে ডিঙিয়েই।