রামেক থেকে চুরি হওয়া নবজাতক উদ্ধার আটক ৪
পক্ষকাল প্রতিনিধি, রাজশাহী : রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (রামেক) থেকে চুরি যাওয়া নবজাতককে তিন দিন পর পবা উপজেলার ভবানীপুর থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে পবা উপজেলার ভবানীপুর থেকে ওই শিশুকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িতের অভিযোগে রামেকের আয়া নার্গিস খাতুনসহ চারজনকে আট করা হয়েছে।
আটক অন্যরা হলেন— পবা উপজেলার ঘোলঘড়িয়া গ্রামের খালেদা আখতার, তার মা সখিনা বেগম ও স্বামী জালাল উদ্দিন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজশাহীর শাহমখদুম থানায় মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করেন মো. শামসুদ্দিন। এ সময় পরিবারের কাছে শিশুটিকে হস্তান্তর করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রাজপাড়া থানার পরিদর্শক আনিসুর রহমান জানান, সোমবার ২২ নম্বর ওয়ার্ডে নবজাতককে রাখার পর ওই ওয়ার্ডে কর্মরত আয়া নার্গিস বেগমের সহযোগিতায় পবা উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের সখিনা খাতুন বাচ্চাটি চুরি করেন। এর বাচ্চাটিকে নিয়ে পবা উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের রাখা হয়। সখিনার মেয়ে খালেদা বেগম নিঃসন্তান হওয়ায় তার কাছে নবজাতক দেখে এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়। তারা বিষয়টি শাহমখদুম থানা পুলিশকে জানায়। ভবানীপুরে অভিযান চালিয়ে ওই বাচ্চাকে উদ্ধার করা হয়।
পরিদর্শক বলেন, ‘খালেদাকে আটকের সময় সে পুলিশকে চ্যালেঞ্জ করে বাচ্চাটি তার এবং গত সোমবার সে বাচ্চাটি প্রসব করেছে। পরে পুলিশ তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করালে খালেদার চ্যালেঞ্জ মিথ্যা প্রমাণিত হয়। পরে খালেদাসহ স্বামী জালাল ও মা সখিনা বেগমকে আটক করা হয়। পরে তাদের দেয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে আয়া নার্গিস খাতুনকে আটক করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলন শেষে রুবিনা ও স্বামী তরিকুল ইসলামের কাছে তার সন্তানকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। আটক সখিনা বেগম সাংবাদিকদের জানান, তার মেয়ে খালেদা বেগম নিঃসন্তান। অনেক চিকিৎসা করেও তার বাচ্চা হয়নি। হাসপাতালের আয়া নার্গিস তার পূর্ব পরিচিত। বেশ কয়েকদিন ধরেই তারা দু’জনে মিলে নবজাতক চুরির চেষ্টা করছিলেন। সোমবার অনুকূল পরিবেশ পেয়ে রুবিনার বাচ্চাটিকে তারা দু’জন মিলে চুরি করেন।
গোদাগাড়ী উপজেলার কাঁকনহাট পৌর এলাকার শুনশুনি পাড়ার তরিকুল ইসলামের স্ত্রী রুবিনা বেগম প্রসব বেদনা নিয়ে ২৮ ডিসেম্বর রামেক হাসপাতালের ২২ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি হয়। ২৯ ডিসেম্বর সোমবার দুপুর আড়াইটায় তিনি সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে মেয়ে শিশু জন্ম দেন। সিজারের ৩০ মিনিট পরে ওই নবজাতককে সেবিকার মাধ্যমে ২২ নম্বর ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সঙ্গে রুবিনার নানা মোজাফ্ফর ও নানী রহিমা ছিলন। ওয়ার্ডে শিশুটিকে নিয়ে আসার পরে সেবিকার হাত থেকে শিশুটিকে তারা বুঝে নেয়। এরপরে ওই ওয়ার্ডের থাকা সখিনা বেগম নবজাতকটিকে আদর ও সেবা যত্ন করতে থাকে। এর এক ফাঁকে তিনি নবজাতকটিকে নিয়ে পালিয়ে যান।