বৃহস্পতিবার, ১ জানুয়ারী ২০১৫
প্রথম পাতা » অপরাধ » দুদক ডিজিসহ ৯ জনের মুক্তিযোদ্ধা সনদ জালিয়াতির নথিপত্র পাঠালো মন্ত্রণালয়
দুদক ডিজিসহ ৯ জনের মুক্তিযোদ্ধা সনদ জালিয়াতির নথিপত্র পাঠালো মন্ত্রণালয়
পক্ষকাল প্রতিবেদক:
দীর্ঘ বিলম্ব শেষে এবং বেশ কয়েকটি তারিখ ঘুরিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মহাপরিচালকসহ (ডিজি) ৯ কর্মকর্তা-কর্মচারীর মুক্তিযোদ্ধা সনদ জালিয়াতির নথিপত্র পাঠালো মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত নথিপত্র দুদকের কাছে এসেছে। দুদকের একটি সূত্র বিষয়টি শীর্ষ নিউজকে নিশ্চিত করেছে।
এর আগে নথিপত্র চেয়ে বার বার চিঠি ও তাগাদা দেওয়ার পরও অজ্ঞাত কারণে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সরবারহ করছে না বলে দুদকের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়।
নথিপত্র না পাওয়ার অভিযোগের বিষয়ে দুদক সূত্রে জানা যায়, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর ২৪ নভেম্বর চিঠি দেওয়া হয়। এর দুইদিন পর দ্বিতীয়বার ২৬ নভেম্বর তাদেরকে স্মরণ করিয়ে ফের চিঠি দেওয়া হয়। তারপরও তাদের কাছ থেকে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।
সূত্র থেকে জানা যায়, শুধু তাই নয় গত ২৪ নভেম্বর ও ৫ ডিসেম্বর সশরীরে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সচিব এম এ হান্নান, অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব ও সিনিয়র সচিবের নিকট গিয়ে দুইবার দেখা করেও কোন ধরনের সহযোগিতা পায়নি দুদক।
অবশেষে গত ১৪ ডিসেম্বর আবারো চিঠি দিলে ১৮ ডিসেম্বর নথিপত্র পৌঁছানোর কথা থাকলেও ১ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার দুদকের নিকট তা পৌঁছানো হয়েছে।
যেসব নথিপত্র তলব করা হয়েছিল- দুদকের ডিজিসহ ৯ কর্মকর্তার মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রকাশিত প্রজ্ঞাপন, মুক্তিযোদ্ধাদের নামের সনদপত্র, লালমুক্তিবার্তা পত্রিকায় প্রকাশিত নাম ও সংশ্লিষ্ট যাবতীয় নথিপত্র।
যেসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা সনদ জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া গেছে তাদের নাম ও মুক্তিবার্তা পত্রিকা অনুসারে তাদের ক্রমিক নম্বরগুলো হলো- দুদকের মহাপরিচালক (ডিজি) কামরুল হাসান মোল্লা (ক্রমিং নং ০১০৫০৬০৩৩৩), পরিচালক গোলাম ইয়াহিয়া, পরিচালক আবদুল আজিজ ভূঁইয়া (০১০৫০৪১২০৬), উপপরিচালক ঢালী আবুদস সামাদ (০২০৫০২০৯৫৩), আরেক উপপরিচালক এস এম গোলাম মাওলা সিদ্দিকী (০১১৮০১০২৭৫) ও সাবেক উপপরিচালক রঞ্জন কুমার মজুমদার (০১১৫০২০১১৭)।
অভিযুক্ত কর্মচারীরা হলেন-সহকারী পরিদর্শক আবদুস সোবহান (০২১১০৪০১৮৮), কোর্ট সহকারী (এএসআই) নুরুল ইসলাম (০১১৭১৩০০৬০) ও ইসহাক ফকির (০১১৬০৭০০৭৬)।
অভিযোগের বিষয়ে দুদক সূত্র জানায়, ওই নয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জালিয়াতির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা সনদ গ্রহণপূর্বক চাকরির মেয়াদ বৃদ্ধিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ভোগের অভিযোগ রয়েছে। এদের মধ্যে আইন বিভাগের মহাপরিচালক কামরুল হোসেন মোল্লা ও পরিচালক গোলাম ইয়াহিয়া অসত্য তথ্য প্রদান করে মুক্তিযোদ্ধা সনদ গ্রহণ করেছেন বলে প্রাথমিক প্রমাণাদি পাওয়া গেছে। এর মধ্যে গোলাম ইয়াহিয়া চাকরির প্রচলিত বয়সসীমা শেষে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সরকারের দেওয়া সুবিধা অনুযায়ী অতিরিক্ত সময় চাকরি করেছেন।
উল্লেখ্য ২২ অক্টোবর দুই সদস্য বিশিষ্ট একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করে অনুসন্ধান শুরু করা হয়। দুদকের উপপরিচালক জুলফিকার আলীর নেতৃত্বে টিমের অন্য সদস্য হলেন সহকারী পরিচালক এস এম রফিকুল ইসলাম।
ইতিমধ্যে মিথ্যা তথ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সনদ গ্রহণে কমিশন থেকে অভিযুক্তদের সার্ভিস বুকের যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করেছে দুদকের অনুসন্ধান দল।