মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০১৭
প্রথম পাতা » অপরাধ | ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » আতিয়া মহলে এখনো সেনা অভিযান চলছে
আতিয়া মহলে এখনো সেনা অভিযান চলছে
পক্ষকাল সংবাদঃ টানা পঞ্চম দিনের মতো সিলেট নগরীর দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার ‘আতিয়া মহলে’ অভিযান অব্যাহত রেখেছেন সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডোরা। তবে সকাল পর্যন্ত গোলাগুলি বা বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়নি।
এদিকে অভিযান চলাকালে বেলা ১ টার দিকে চারটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
এদিকে শিববাড়ি এলাকায় এখনো সবার প্রবেশ নিষিদ্ধ রয়েছে। তাই অভিযান সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য জানা যাচ্ছে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাড়ির ভেতরে থাকা বিস্ফোরক উদ্ধারের কাজ চলছে।
এর আগে সোমবার রাতে সংবাদ সম্মেলন করে সেনাবাহিনী জানায়, তাদের অভিযানে এক নারীসহ চার জঙ্গি নিহত হয়েছে। জঙ্গি আস্তানায় আর কোনো জীবিত জঙ্গি নেই।
মঙ্গলবার সকালে শিববাড়ি এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে আলাপকরে জানা গেছে সোমবার দিবাগত রাত বা মঙ্গলবার সকালে আর কোন গুলি বা বিস্ফোণের শব্দ শোনা যায়নি।
আতিয়া মহলের পুরো ভবনটা যে অবস্থায় আছে সেটা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে সোমবার প্রেস ব্রিফিংয়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসান বলেন, সেজন্য সতর্কতার সঙ্গে এগোতে হচ্ছে। যে চারজন এখানে ছিল, তারা বেশ ভালো প্রশিক্ষিত। তাদের খুঁজে বের করে মারা হয়েছে। এটা কিন্তু বিশেষ করে সেনাবাহিনীর জন্য একটা বড় সফলতা বলে মনে করি। আমাদের অভিযান এখনও চলমান আছে। আরো হয়তো কিছু সময় লাগতে পারে। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশ অনুযায়ী আমরা এগিয়ে যাব।
সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) গণমাধ্যম শাখায় দায়িত্বরত সহকারী উপকমিশনার (এডিসি) জেদান আল মুসা জানান, এখনো মোগরাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল ফজল সেনাবাহিনীর হস্তান্তর করা দুটি লাশের পরিচয় জানাননি। তিনি জানালে লাশের পরিচয় প্রকাশ করা হবে।
এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) খায়রুল ফজল বলেন, আমরা লাশ দুটির পরিচয় এখনো নিশ্চিত করতে পারিনি। সেনাবাহিনীর কাছ থেকে লাশ গ্রহণ করার পর সিলেট ওসমানী হাসপাতালের হিমঘরে পাঠানো হয়। সেখান থেকে ময়নাতদন্ত করার দায়িত্ব কোতোয়ালি থানার।
এর আগে গতকাল রাতে খায়রুল ফজল জানিয়েছিলেন, আতিয়া মহলের নিচতলার ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেন মর্জিনা ও কাওছার নামের দম্পতি। তিনি সে সময় লাশ দুটি মর্জিনা ও কাওছারের বলে জানিয়েছিলেন।
কোতোয়ালি থানার ওসি সোহেল আহমদ জানান, এখনো লাশের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। অজ্ঞাত হিসেবে লাশ দুটি ময়নাতদন্তে নেওয়া হয়েছে। ডা. তাহমিনা আক্তার, ডা. শামসুল আলম, ডা. নাজিয়া বেগম লাশ দুটির ময়নাতদন্ত করছেন।
২৩ মার্চ, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে আতিয়া মহলের নিচতলায় জঙ্গিরা অবস্থান করছে বলে জানতে পারে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম ইউনিট।
পরের দিন শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে ওই বাড়ির ভেতর থেকে গ্রেনেড ছোড়া হয়। পরে ঢাকা থেকে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট সোয়াতকে পাঠানো হয় ঘটনাস্থলে।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সন্ধ্যা থেকে পুরো এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয় সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডো দল। পরদিন তারা ওই ভবনের অন্যান্য বাসিন্দাকে নিরাপদে সরিয়ে আনে।
উল্লেখ্য, জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পেয়ে গত শুক্রবার ভোর থেকে ‘আতিয়া মহল’ নামের পাঁচতলা ভবনটি ঘিরে রাখে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ সময় বাড়িটির প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেয়া হয়।
পরে শনিবার সকাল থেকে অভিযান চালায় সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো বাহিনী। ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ নামের এ অভিযান তত্ত্বাবধান করছেন সেনা বাহিনীর ১৭ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল আনোয়ারুল মোমেন।