রবিবার, ২ এপ্রিল ২০১৭
প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » তারেককে বাংলাদেশে আনতে বন্দি বিনিময় চুক্তি হতে হবে:
তারেককে বাংলাদেশে আনতে বন্দি বিনিময় চুক্তি হতে হবে:
পক্ষকাল সংবাদ : বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাই কমিশনার অ্যালিসন ব্লেক বলেছেন, বন্দি বিনিময় চুক্তি ছাড়া যুক্তরাজ্যে অবস্থানকারী বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ফেরত দেওয়া সম্ভব নয়। বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের কোনও বন্দি বিনিময় চুক্তি নেই। কাউকে ফেরত আনতে চাইলে আগে দুই দেশের মধ্যে বন্দি বিনিময় চুক্তি হতে হবে।শনিবার বিকালে ধানমন্ডিতে অবস্থিত আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা বলেন ব্রিটিশ হাই কমিশনার ব্লেক। বৈঠকে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ব্রিটিশ হাইকমিশনারকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনাদের দেশে সাজাপ্রাপ্ত একজন আসামি রয়েছেন যার নাম তারেক রহমান। তিনি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান। আপনারা তাকে ফেরত দেওয়ার বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেবেন?’
এর জবাবে অ্যালিসন ব্লেক বলেন, ‘‘এমন একটা ‘স্পেসিফিক’ ইস্যুতে কথা বলা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। দুই দেশের সম্পর্কের ভেতর দিয়ে হয়ত এ ইস্যুটি সমাধান হতে পারে।”
তারেক রহমানকে ফেরত প্রসঙ্গে নওফেলের প্রশ্নের জবাবে ব্রিটিশ হাই কমিশনার আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে বন্দি বিনিময় চুক্তি নেই। কাউকে অপর দেশ থেকে ফেরত আনতে চাইলে আগে দুই দেশের মধ্যে বন্দি বিনিময় চুক্তি হতে হবে।’
এর আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে আধা ঘণ্টাব্যাপী দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক করেন অ্যালিসন। এরপরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে প্রায় ২০ মিনিটের মতো বৈঠক করেন তিনি। ওই বৈঠকে দলের প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ ও আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু পৃথক দুটি প্রশ্ন করেন ব্রিটিশ হাই কমিশনারকে।
এ বৈঠকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাই কমিশনার অ্যালিসন ব্লেইক আরও বলেছেন, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন (আইপিইউ)-এর ১৩৬তম সম্মেলন আয়োজনের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তার অব্যাহত সমর্থন ও আস্থার বহির্প্রকাশ ঘটিয়েছেন। এর আগে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাৎকালে একথা বলেন তিনি। আওয়ামী লীগের দফতর থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
বৈঠকে ব্রিটিশ হাই কমিশনার আরও বলেন, জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ দমনে বর্তমান সরকারের কার্যকরী ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। সরকার অত্যন্ত সাহস ও দৃঢ়তার সঙ্গে যথাযথভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে ব্রিটিশ সরকার বাংলাদেশকে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান অব্যাহত রাখবে এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও বিষয়টি নিয়ে দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে একসঙ্গে কাজ করবে।
বৈঠকে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের কাছে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিভিন্ন নির্বাচনের পূর্বাপর বিষয় তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সাম্প্রতিক সময়ে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন নির্বাচনের ফলাফল তারই প্রতিফলন। তিনি আরও বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে।
বৈঠকে ব্রিটিশ হাই কমিশনার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপস্থিত নেতৃবৃন্দের সঙ্গে পরিচিত হন এবং ঐতিহ্যবাহী এ দলটির অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও নেতৃত্ব নির্বাচন প্রক্রিয়ায় নিয়মিত গণতান্ত্রিক চর্চার ভূয়সী প্রশংসা করেন। এ সময় ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাই কমিশনের রাজনৈতিক শাখা প্রধান আদ্রিয়ান জোন্স এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক এজাজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, মুহাম্মদ ফারুক খান, মাহবুবউল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, আব্দুস সোবহান গোলাপ, মুকুল বোস, সুজিত রায় নন্দি, দেলোয়ার হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর, ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, মৃণাল কান্তি দাস, হারুনুর রশীদ, হাবিবুর রহমান সিরাজ, অসীম কুমার উকিল, ডা. রোকেয়া সুলতানা, আহমদ হোসেন, বি.এম মোজাম্মেল হক, আ.ফ.ম. বাহাউদ্দিন নাছিম, একেএম এনামুল হক শামীম, ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, আনোয়ার হোসেন ও মারুফা আক্তার পপি।