মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল ২০১৭
প্রথম পাতা » অপরাধ | ব্রেকিং নিউজ » যেকোনো সময় মুফতি হান্নান ও বিপুলের ফাঁসি
যেকোনো সময় মুফতি হান্নান ও বিপুলের ফাঁসি
পক্ষকাল প্রতিবেদক আব্দুল হান্নান ও তার সহযোগী বিপুলের ফাঁসি কার্যকরে প্রস্তুত কারা কর্তৃপক্ষ। ফাঁসি কার্যকর করতে মহড়া দেয়া ও ফাঁসির মঞ্চ তৈরি থেকে শুরু করে সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। প্রস্তত রাখা হয়েছে জল্লাদ রাজুকেও। জেলকোড অনুযায়ী যেকোনো সময় তাদের ফাঁসি কার্যকর হবে।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, গতকাল দুপুরে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক দুই জঙ্গির প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচের নথি কারাগারে এসে পৌঁছলে ফাঁসি কার্যকরের সব বাধা কেটে যায়। এজন্য তারা মহড়া দেয়া, ফাঁসির মঞ্চ তৈরি, ম্যানিলা রশি ও জল্লাদসহ সব প্রস্তুতি শেষ করেছেন। সরকারের নিদের্শনা পেলেই যেকোনো সময় তাদের ফাঁসি কার্যকর করা হবে।
কারাগারের একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, গতকাল নাকোচ হওয়া প্রাণভিক্ষার আবেদনের কপি কারাগারে পৌঁছার পর দুই জঙ্গির পরিবারকে তাদের সঙ্গে দেখা করতে বলা হয়েছে। কিন্তু আজ সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত এখনো কেউ আসেনি।
২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটে হযরত শাহজালাল (রা.) এর মাজারে গ্রেনেড হামলায় তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা মামলায় ফাঁসির আদেশ হয়েছে মুফতি হান্নান ও তার দুই সহযোগী বিপুল ও রিপনের। গত ১৯ মার্চ আপিল বিভাগ সব আইনি প্রক্রিয়া শেষে দণ্ড বহাল রাখে। পরদিন মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শোনানো হয় তিন জঙ্গিকে। সেদিনই তারা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন বলে জানান।
গত ২৭ মার্চ সন্ধ্যায় গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে বন্দী মুফতি হান্নান ও তার সহযোগী বিপুল এবং সিলেট কারাগারে বন্দী রিপন রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন। শনিবার রাতে সে আবেদন নাকচ করেন রাষ্ট্রপতি। গতকাল মুফতি হান্নানের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচের চিঠি কাশিমপুর কারাগারে পৌঁছে। এখন শুধু ফাঁসি কার্যকরের অপেক্ষা।
গত রবিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সাংকবাদিকদের বলেছিলেন, ‘যেদিন তার ফাঁসির আদেশ হয়েছে, সেদিন থেকে ২১ দিনের কম নয় এবং ২৮ দিনের বেশি নয় এমন সময়ের মধ্যে ফাঁসি কার্যকর করার নিয়ম রয়েছে। সে হিসেবে ১১ এপ্রিল থেকে ১৭ এপ্রিলের মধ্যেই মুফতি হান্নানের ফাঁসি কার্যকর হবে।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী যেকোনো সময় ফাঁসি কার্যকর করতে পারবে কারা কর্তৃপক্ষ।
কবে ফাঁসি কার্যকর হবে এ ব্যাপারে জেল সুপার মিজানুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতার শুরুর থেকেই আলোচিত সংগঠন হরকাতুল জিহাদ। সেই সঙ্গে মুফতি হান্নানও পরিচিত হয়ে উঠে। ১৯৯৯ সালে যশোরে উদীচীর সমাবেশে, ২০০১ সালে রমনা বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে এবং পল্টনে সিপিবির সমাবেশ ও নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে বোমা হামলা, ২০০০ সালে গোপালগঞ্জে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টার জন্য সমাবেশের অদূরে ৭৬ কেজি বোমা পুঁতে রাখা এবং ২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা মামলারও আসামি মুফতি হান্নান। শতাধিক ব্যক্তির মৃত্যুর জন্য তাকে দায়ী করা হয়।
২০০৫ সালের ১ অক্টোবর রাজধানীর বাড্ডার বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন মুফতি হান্নান। এরপর বিভিন্ন মামলায় টানা ১২০ দিন রিমান্ডে ছিলেন তিনি। তখনই গোয়েন্দাদের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে মুফতি হান্নান শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করাসহ বিভিন্ন হামলায় জড়িত থাকার বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণ দেন। কিন্তু তা তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত সরকার প্রকাশ করেনি।