শনিবার, ১৩ মে ২০১৭
প্রথম পাতা » অপরাধ | জেলার খবর | রাজনীতি » বনানীর ধর্ষণ মামলায় এবার আলোচনায় এমপি পুত্র মাহির হারুন
বনানীর ধর্ষণ মামলায় এবার আলোচনায় এমপি পুত্র মাহির হারুন
ঝালকাঠি প্রতিনিধি:
ঢাকা বনানীর হোটেলে দুই ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় নেপথ্য সহযোগী হিসাবে ঝালকাঠি-১ আসনের সংসদ সদস্য বজলুল হক হারুনের (বি এইচ হারুন) পুত্র মাহির হারুনের নাম উঠে আসার ঘটনায় ঝালকাঠি জুড়ে আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠেছে। দেশজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টিকারী এ ঘটনায় ধর্ষকদের হোটেলের রুম বুকিং, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ডিলেট ও সার্বিক সহায়তার নেপথ্য সহযোগী হিসাবে এমপির পুত্র হোটেলের অন্যতম পরিচালক মাহির হারুনের সংস্লষ্টতা বেড়িয়ে পরার পর তার নিজ এলাকায় এ বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
এনিয়ে বিএইচ হারুন এমপির নির্বচনী এলাকা (রাজাপুর-কাঠালিয়া)সহ ঝালকাঠির রাজনৈতিক মহল, দলীয় কার্যালয় বিরোধী রাজনৈতিক দলসহ সর্বস্তরের সাধারন মানুষ তথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেতিবাচক মন্তব্য ও সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে।
পুলিশের গুলশান জোনের সূত্রে বহুল আলোচিত ও সমালোচিত রেইনট্রি হোটেলের পরিচালক ও এমপি পুত্র মাহির হারুনের ঘনিষ্ট বন্ধু ধর্ষক সাফাত ও তার সহযোগীদের ওই হোটেলে অবাধ যাতায়াত ছিল। হোটেলের পরিচালক হওয়ার সুবাধে মাহির হারুন ইতিপূর্বে বহুবার ধর্ষক চক্রের জন্য রুম বুকিং করে দিয়েছে। তার সহায়তায় ঘটনার রাতে ধর্ষক সাফাত ও তার সহযোগীদের হোটেলের ৭০১ ও ৭০২ নম্বর রুম বুকিংসহ সবকিছু করা হয়েছে। এমন কি জন্মদিন উপলক্ষে বন্ধু মাহির হারুনের পরামর্শে হোটেল কর্তৃপক্ষ লম্পট সাফাতকে একটি দামী কেক উপহার দেন বলে তদন্ত কর্মকর্তা তথ্য পেয়েছে।
রেইনট্রি হোটেলের একজন স্টাফ নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাংবাদিকদের বলেছেন, মালিক পুত্রের বন্ধু হওয়ায় হোটেলে সবাই তাকে সমীহ করতেন। পরিচালক মাহির হারুন তার জন্য রুম বুকিং করতেন ও অনেক আড্ডায় মাহির হারুনও তাদের সাথে অংশ নিতেন। আর এসব বিষয় সংবাদ মাধ্যমে উঠে আসায় ঝালকাঠির সচেতন রাজনৈতিক মহল সহ সাধারন মানুষের মাঝেও ব্যাপক আলোচনার জন্ম নিয়েছে। ক্ষোধ, কাঠালিয়া-রাজাপুর আওয়ামীলীগ ও অংগসংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝেও ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। আর পাশাপাশি বি এইচ হারুন এমপির রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা এটিকে মোক্ষম অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছে।
এ বিষয়ে রাজাপুর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বর্তমান উপজেলা আ’লীগ নেতা ডেজলিং তালুকদার, উপজেলা আ’লীগের দুই যুগ্মসম্পাদক ও এক সাংগঠনিক সম্পাদকসহ বেশ কয়েকজন নেতা জানায়, বিএইচ হারুন ও তার পরিবার স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি ও তার প্রধান পৃষ্ঠপোষক। তার সন্তান মাহির হারুন ধর্ষণ বা ধর্ষণের সহযোগী হবে এটাই তো স্বভাবিক। আর আজ এদের মতো নব্য আ’লীগ নামধারীরা সংসদ সদস্য হলে দলের সর্বনাশের জন্য বিএনপি-জামায়াত কিছু লাগবেনা।
অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে এনিয়ে ঝালকাঠীর মানুষ সহ (বজলুল হক হারুন) বি এইচ হারুন এমপির নির্বাচনী এলাকা রাজাপুর- কাঠালিয়ার মানুষে নানামন্তব্য ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এমন কি এরা আগামী জাতীয় সংদস নির্বাচনে বিএইচ হারুনকে মনোনয়ন না দেয়ার জন্য দাবী করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সংসদ সদস্য বিএস হারুন ও তার পুত্র মাহির হারুনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাদের কোন বক্তব্য না পাওয়ায় নির্বাচনী এলাকার মানুষের মাঝে আলোচনার ডালপালা বিস্তার লাভ করছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ মার্চ বনানীর ‘দ্য রেইন ট্রি’ হোটেলে সাফাত আহমেদের বন্ধুর জন্মদিনের পার্টিতে ডেকে নিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দুই তরুণী ধর্ষিত হয়। গত ৬ এপ্রিল শনিবার সাফাত আহমেদ, তার বন্ধু নাঈম আশরাফ, সাদনান সাকিফ, সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও তার দেহরক্ষী আজাদ (এজাহারে নাম অজ্ঞাত)সহ পাঁচজনকে আসামি করে বনানী থানায় মামলা দায়ের করেন।