সোমবার, ১২ জুন ২০১৭
প্রথম পাতা » অর্থনীতি | ব্রেকিং নিউজ | শিক্ষা ও ক্যারিয়ার | সম্পাদক বলছি » অভাবে বন্ধ হচ্ছে না শিশুশ্রম
অভাবে বন্ধ হচ্ছে না শিশুশ্রম
পক্ষকাল সংবাদ : যে বয়সে হাতে থাকবে বই আর খেলনা, সে বয়সেই নামমাত্র মজুরিতে উদয়াস্ত পরিশ্রমে বিবর্ণ হচ্ছে অনেক শিশুর ভবিষ্যৎ। শিশুদের জন্য আইনসহ সরকারের নানা পদক্ষেপ থাকলেও দারিদ্র্যের কারণে অনেকেই বঞ্চিত এসব সুযোগ সুবিধা থেকে। তাদের নিরাপদ আগামী গড়তে না পারলে ভয়াবহ পরিণতির আশঙ্কা করছে শিশু অধিকার ফাউন্ডেশন।
অন্যদিকে, শিশুশ্রম নিরসনে বরাবরের মতো সরকারের কাগজে কলমে সীমাবদ্ধ থাকা কার্যক্রমের কথা জানালেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী।
রাকিব। ১৩ বছরেই সংসারের বোঝা মাথায় নিয়ে সকাল-সন্ধ্যা বিরামহীন কাজ করে যাওয়া ছোট্ট এক শিশু। নরম হাতের আঘাতে লোহা থেকে ছোটে আগুনের ফুলকি। এ যেন আশৈশব লালিত স্বপ্ন থেকে আরো দূরে চলে যাওয়া।
১৪ বছরের আহাদ, কঠোর পরিশ্রম করে সংসারের চাকা সচল রাখছে নামমাত্র মজুরিতে।
আহাদ বলে, ‘বাবার পা ভেঙ্গে যাওয়ার পর থেকে এই লাইনে যোগ দিতে হয়। আর এই কাজ করে যে অর্থ পাই তা দিয়ে সংসার চলে।’
আকাশ ছোঁয়া স্বপ্ন না থাকলেও খেলাধুলা আর পড়াশুনা না করতে পারার আক্ষেপে ম্লান ঘর্মাক্ত মুখগুলো।
‘‘টাকার অভাবে লেখাপড়া করতে পারি না। কিভাবে পড়াশুনা করুম সংসারে টাকা না দিলে খামু কি আমরা।”
বিবিএস প্রকাশিত, জাতীয় শিশুশ্রম জরিপে দেখা যায় দেশে শ্রমের সঙ্গে জড়িত প্রায় ১৭ লাখ শিশু। যাদের ১২ লাখই ঝুঁকিপূর্ণ। সরকার ৩৮টি খাতকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে। শ্রম আইন অনুযায়ী এসব খাতে ১৮ বছরের কম বয়সি শিশুদের কাজে নেয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০২৫ সালের মধ্যে সব ধরনের শিশুশ্রম বন্ধের নির্দেশনাও রয়েছে।
‘‘বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের স্বার্থেই শিশুদের বর্তমান, নিরাপদ আর ভবিষ্যৎ আলোকিত করার নিশ্চয়তা দিতে হবে সরকারকেই। পূরণ করতে হবে শিক্ষা চিকিৎসাসহ তাদের মৌলিক অধিকারগুলো।”
শিশু অধিকার ফাউন্ডেশন পরিচালক আব্দুস শহীদ মাহমুদ বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে জড়িত শিশুদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যেও মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে। আর যদি আমরা না দেখি তাহলে তাদের ভবিষ্যৎ মারাত্মক খারাপ হয়ে যাবে। আর একটা অশিক্ষিত, অসুস্থ, দুর্বল জাতি অপেক্ষা করবে।’
ঝুঁকিপূর্ণ শ্রম ও শিশু নির্যাতন নিরসনে সচেতনতামূলক ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়েছেন মহিলা শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি।
সময়ের আবর্তে প্রতি বছরই আসে বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস। উচ্চারিত হয় শ্রমিক অধিকার রক্ষার আওয়াজ। কিন্তু, দিবস শেষেই আবার যেন সেই পুরোনো গল্প। তাই, এবারের চাওয়া, বন্ধ হবে শিশুশ্রম। উজ্জ্বল হবে শিশুর ভবিষ্যৎ।