নির্বাচনের মাঠে সরব বিএনপি
পক্ষকাল সংবাদ ;
‘সামনে আসছে শুভ দিন, ধানের শীষে ভোট দিন’- সম্প্রতি এক ইফতার মাহফিলে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার এমন বক্তব্য নেতাকর্মীদের মধ্যে বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। ভোটের মাঠে সরব হয়ে উঠেছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। ঈদ সামনে রেখে তারা গণসংযোগে নেমেছেন জোরেশোরে।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, আন্দোলনের প্রস্তুতি নেয়ার পাশাপাশি নির্বাচনী এলাকায় জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে নেতাদের পরোক্ষভাবে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কেন্দ্র থেকে কাউকেই এখনো পর্যন্ত নির্বাচন করার চূড়ান্ত সিগন্যাল দেয়া হয়নি। যার ফলে মনোনয়ন প্রত্যাশী সবাই যে যার মতো করে সামাজিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। ক্ষমতাসীন দলের বাধা উপেক্ষা করেই রমজানের শুরু থেকে চলছে ইফতার মাহফিল, দুস্থদের মাঝে ইফতারসামগ্রী বিতরণ ও নির্যাতিতদের আর্থিক সহায়তা প্রদান কার্যক্রম। ঈদ সামনে রেখে এখন শুরু হয়েছে ঈদ উপহার বিতরণ। শুধু তাই নয়, আগামী নির্বাচনকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় নিয়ে যোগ্য অথচ নিষ্ক্রিয় বা অসচেতন এমন সবাইকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে কেন্দ্র থেকে জেলায় চিঠি পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, দলীয় নয়, সহায়ক সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী বিএনপি। এ চিন্তা থেকে বেগম খালেদা জিয়া ধানের শীষের ভোট চাওয়া শুরু করেছেন। আর এতে করে সারা দেশের নেতাকর্মী, সমর্থকরা আরো চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। এভাবেই নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন ও একাদশ নির্বাচনের প্রস্তুতি যুগপৎভাবেই এগিয়ে নিতে চাইছে দলের হাইকমান্ড। দলটির একাধিক নেতা বলেছেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে বিএনপির দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক। দেশের ভেতরেই কেবল নয়, ধানের শীষের পক্ষে খালেদা জিয়ার ভোট চাওয়ার ফলে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও বিএনপি সম্পর্কে একটি ইতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হবে। একই সাথে কোনো কারসাজির মাধ্যমে বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখার চেষ্টা করা হলে তার বিরুদ্ধে তীব্র জনমত গড়ে উঠবে।
জানা গেছে, রোজার পরে খালেদা জিয়া চোখের ও পায়ের চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যাবেন। চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের একটি রূপরেখা জাতির সামনে উপস্থাপন করবেন তিনি। এরপর ধানের শীষেরপক্ষে ভোট চাইতে মাঠে নামবেন খালেদা জিয়া। বিভাগীয় শহরে হবে সভা-সমাবেশ।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় এবার ৩০০ আসনে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীর তালিকা বেশ দীর্ঘ। প্রায় প্রতিটি আসনেই পাঁচ থেকে ছয়জন নেতা দলের চূড়ান্ত টিকিট পেতে আগ্রহী। সেই আগ্রহ থেকেই অনেক নেতা মাঠে নেমেছেন। মনোনয়ন না পেলেও ভবিষ্যতের জন্য দলের নজর কাড়ার লক্ষ্য নিয়েও কাজ শুরু করেছেন তরুণ বহু নেতা। তবে কমপক্ষে ১০০ আসনে সাবেক এমপিদের মনোনয়ন পাওয়া প্রায় নিশ্চিত।
বিএনপির সিনিয়র নেতা ও ঢাকা-৫ এর সাবেক এমপি সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন আমরা আন্দোলন ও নির্বাচনের প্রস্তুতি একইসাথে নিচ্ছি। ঈদ সামনে রেখে নির্বাচনী এলাকায় সামাজিক কর্মকাণ্ড স্বাভাবিকভাবেই বেড়েছে। তবে দলের চেয়াপরপারসন যে নির্দেশনা দেবেন সেভাবেই দলের নেতাকর্মীরা কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছেন।