বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই ২০১৭
প্রথম পাতা » বিনোদন | ব্রেকিং নিউজ » তরুণ নির্মাতা আনন্দ কুটুমের “আলো আধারের কাব্য”
তরুণ নির্মাতা আনন্দ কুটুমের “আলো আধারের কাব্য”
ইশরাত ইভা ঃআগামী ২১ জুলাই রাত ৯:০ টায় এনটিভি’র পর্দায় প্রচারিত হবে “আলো আধারের কাব্য” নাটকটি। নাটকটি উতসর্গ করা হয়েছে প্রয়াত কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদকে। এতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন, প্রখ্যাত অভিনেতা জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, সাবেরি আলম মোতাহের, জোভান, নাদিয়া, মনি, অনল, লাকি, জয়নাল জ্যাক সহ আরো অনেকে। সিনেমাটোগ্রাফি করেছেন সুমন সরকার এবং সম্পাদনা করেছেন ষাইফ রাসেল। প্রযোজক হিসেবে আছেন তৌহিদুল ইসলাম জয়। নাটকটি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে আবেগাক্রান্ত হয়ে পড়েন তরুণ নির্মাতা আনন্দ কুটুম। বলেন, সকালের উজ্জ্বল সূর্য দুনিয়ার সবাইকে আলো দেখাতে পারে না। সূর্যের এই অপারগতা মেনে নিয়েই লক্ষ কোটি মানুষ রোজ বেচে থাকে আমাদের এই সমাজ সংসারে। তারাও ভালোবাসে, বিয়ে করে, ঘর বাধে। আমরা কি ভেবে দেখেছি, কেমন তাদের সেই আলোহীন জীবন? এমনই এক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী দম্পতি হুমায়ূন এবং নীলিমা। জীবনের অনেক গুলো বছর পারি দিয়ে ২৩ তম বিবাহ বার্ষিকীতে এসে দাড়িয়েছে। তিনি আরো বলেন, অপরদিকে হৃদয় এবং পুষ্প কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে পা দিয়েছে। ভালোবাসার তীব্রতা কখনো কখনো সংঘাত হয়ে ফুটে ওঠে তাদের জীবনে। সর্বাঙ্গীণ সুস্থ দৃষ্টি নিয়ে যখন তরুণ এই প্রেমিক যুগল সুস্থ দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্কটে ভোগে তখন দৃষ্টিহীন হুমায়ূন দম্পতীর জীবন হয়ে ওঠে এক চরম বিস্ময়। এমনই একটি গল্পকে কেন্দ্র করে আমি পরিচালক আনন্দ কুটুম নির্মাণ করেছি আমার প্রথম টেলিভিশন নাটক । আলো এবং আধার ভেদে মানুষের জীবনবোধ বা দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হয় সেগুলোই তুলে ধরার চেষ্টা করেছি এই ৪৭ মিনিটের ছোট্ট ক্যানভাসে। আমি এখনো পড়ালেখা করছি ভারতের মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ফিউচার মিডিয়া স্কুলে। এর আগে আমি নির্মাণ করেছি ‘ব্লগ’ এবং ‘মিথ্যে কথার শহর’ নামের দুটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। যদিও সেগুলো এখনো মুক্তির সাদ পায়নি। “আলো আধারের কাব্য” ই আমার প্রথম মুক্তি পেতে যাওয়া কোন ভিজুয়াল নির্মান। সত্যি কথা বলতে, জীবনের প্রথম প্রচারিত কোন নির্মাণ নিয়ে নির্মাতা হিসেবে বেশ চাপ তো থাকেই। তবে আমি বলব আমি শেষ পর্যন্ত ভাগ্যবান যে ইন্ডাস্ট্রির ভেতরে এবং বাইরে আমি অনেক মানুষের ভালোবাসা এবং সাহায্য পেয়েছি। আমার বিশ্বাস প্রথম কাজ হিসেবে আমার শুরুটা দারুণ হয়েছে। বেশি ভালো লাগছে এটা দেখে যে, নাটকটি প্রচারিত হওয়ার আগেই বন্ধু এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের বাঁধভাঙ্গা উচ্ছাস দেখে। নাটকটা যেনো কেউ দেখতে ভুলে না যায় তার জন্য লাগাতার প্রচারণার কাজটি তারাই করে চলেছেন। একজন নতুন নির্মাতা হিসেবে এর থেকে বেশি কিছু চাওয়ার নেই। অনেকেই আমাকে প্রশ্ন করেছেন যে, “হুমায়ূন আহমেদকে কেন উতসর্গ করা হল?” খুব সত্যি করে বললে বলব, হুমায়ূন আহমেদ আমার প্রতিবেশী ছিলেন। আমাদের বেড়ে ওঠাটা হুমায়ূনীয় সাহিত্য পাঠের মধ্য দিয়ে। কিন্তু অদ্ভুত হল, এতো কাছে থাকা সত্ত্বেও আমাদের কখনওই দেখা হয়নি। তাই আমি চেয়েছি এমন একজনকে উতসর্গ করতে যাকে আমি ভালোবাসি কিন্তু চর্মচক্ষে কখনওই দেখিনি। হঠাত তার নামটি মনে ভেসে এলো। দর্শকদের অনুরোধ করব দেখার জন্য। আমি দাবী করছি না যে এটা খুবই ব্যতিক্রমী কোন কাজ হয়েছে। কিন্তু এটা আমাদের চেনাজানা ভালোবাসাকেই একটু ভিন্নধর্মী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিশ্লেষণ করে। যেমন, এই যে যারা অন্ধ তারাও তো ভালোবাসে। তবে কেউকে ভালোবাসার জন্য চোখে দেখা কি বাধ্যতামূলক?? এই যে আমাদের বর্তমান প্রজন্ম একটি ঝাঁ চকচকে ফেন্সি রিলেশনশিপ ফোবিয়ায় ভুগছে, তারা কি কখনও ভেবে দেখেছে যে, পার্ফেক্ট মানুষ বলে কিছু হয় না। একজন ইমপার্ফেক্ট মানুষের দোষ গুলো ক্ষমা করার মধ্য দিয়েই সম্পর্কটি যথার্থ হয়ে ওঠে। আমাদের নতুন প্রজন্ম একবার হলেও নাটক দেখার পরে এটা অনুধাবন করবে। অভিযোগ করে সুখী হওয়া যায় না। প্রয়োজন একটু পারস্পরিক বোঝাপড়ার।