বৃহস্পতিবার, ২৩ নভেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » অপরাধ | ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি | সম্পাদক বলছি » নুতন ব্লগার হত্যার হিটলিস্ট
নুতন ব্লগার হত্যার হিটলিস্ট
পক্ষকাল ডেস্কঃবাংলাদেশী আরো ব্লগারকে হত্যার ছক করেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত আনসারুল্লাহ বাংলা টিম। এ জন্য তারা নতুন একটি হিট লিস্ট তৈরি করেছে। এর শীর্ষে রয়েছে ব্লগার ফারুক সাদিকের নাম। এসব তথ্য এখন পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের সদস্যদের হাতে। কলকাতা রেল স্টেশন থেকে মঙ্গলবার দুই বাংলাদেশী সহ মোট তিন জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারপর তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
এ খবর দিয়েছে অনলাইন টাইমস অব ইন্ডিয়া। এতে বলা হযেছে, এ গ্রেপ্তার করা ওই তিনজনের মধ্যে রয়েছে শামশাদ মিয়া ওরফে তানভির (২৬)। তার বাড়ি সিলেটের সুনামগঞ্জে। আটক আরেক বাংলাদেশী হলো রিজাউল ইসলাম ওরফে রিয়াজ। তার বাড়ি খুলনার পাইকগাছার কাশিমনগরে। অন্যজন মনতোষ দে। তার বাড়ি ভারতেই। টাইমস অব ইন্ডিয়া লিখেছে, লালবাজারের সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, তারা এ সংক্রান্ত তথ্য শেয়ার করেছে বাংলাদেশের সঙ্গে। তবে পরিকল্পনা কার্যকর করার জন্য টিমের কেন্দ্রে যারা আছে গ্রেপ্তারকৃতরা তাদের কেউ নয়। ওদিকে গত ৬ মাসে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের স্পর্শকাতর অংশগুলো দিয়ে কমপক্ষে ৬টি অস্ত্র পাচার হয়েছে। সূত্র বলেছে, আটক মনোতোষ দে একজন অস্ত্র পাচারকারী। সে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের অন্য সদস্যদের কাছে বেশ কিছু অস্ত্র পাটার করেছে। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের হাতে আরো কমপক্ষে দু’জন অস্্রত পাচারকারীর তথ্য রয়েছে। তারা পশ্চিমবঙ্গেরই। সেও সরাসরি আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্যদের সঙ্গে জড়িত। আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের বিশেষ মডিউলটি, যাতে রয়েছে শামসাদ মিয়া, রিজাউল ইসলাম, তারা কলকাতা থেকে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের মতো রাসায়নিক পদার্থ কেনার চেষ্টা করছিল। তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এটা তাদের প্রয়োজন ছিল। লালবাজার সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া লিখেছে, ২০১৬ সালের জুলাই মাসে ভারতে প্রবেশ করে শামসাদ ও রিজাউল ওরফে রিয়াজ। তাদের এজেন্ট তাদেরকে নিয়ে যায় হায়দরাবাদের মানেগুরা এলাকায়। ওই এলাকায় রয়েছে অনেকগুলো কসাইখানা। এসব কসাইখানায় কাজ করেন অনেক বাংলাদেশী। সেখানে গিয়ে তারা তিন মাসের মতো কাজ করে। এরপর তাদেরকে কাজ দেয়া কোম্পানি বন্ধ হয়ে যায়। এরপরে শামসাদ ও রিয়াজ চলে যায় উত্তর কর্নাটকের বেলগাউমে। সেকানে তারা একই রকম কাজ করতে থাকে অন্য দু’চারজন বাংলাদেশীর সঙ্গে। এরই মধ্যে এখান থেকে তারা তৈরি করে ফেলে ভুয়া আধার কার্ড। এর মধ্যে শামসাদ সেখানে বসতি গড়ে। একটি ব্যাংক একাউন্ট খোলে। তারপরে তাকে নির্দেশনা দেয়া হয় পুনে যেতে। শাসসাদ একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। তা সত্ত্বেও সে পুনেতে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে থাকে। এ বছর সেপ্টেম্বরের দিকে তাদের কাছে বাংলাদেশ থেকে নির্দেশনা যায়। বলা হয়, তাদের মডিউলকে আরো শক্তিশালী করতে। এরপর তারা দু’জনে মিলে চলে যায় পাটনা। সেখান থেকে রাঁচি। অবশেষে দুর্গাপূজার দশমীর দিনে তারা ফিরে যায় কলকাতায়। তাদেরকে উপরের পর্যায়ের নেতারা একটি আশ্রয় খুঁজে নিতে বলে কলকাতা শহরে অথবা এর আশপাশে। আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের আটক এই দুই সদস্যের মধ্যে শামসাদ পশ্চিমা ধারার যুবক। তাকে বানানো হয়েছে বিস্ফোরক বিষয়ক শাখার প্রধান । সে একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান। তার এক ভাই বসতি স্থাপন করেছেন ইতালিতে। স্পেশাল টাস্কফোর্সের এক সূত্র বলেছেন, শামসাদ বলেছে সে সিলেটের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়াশোনা করেছে। সেখানে সে তার বোনের সঙ্গে একটি ভাড়া বাড়িতে অবস্থান করতো। তার সিনিয়র এক যুবকের নাম মামুন। তাকে গ্রেপ্তার করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। মামুনই শামসাদকে প্ররোচণা দিয়েছে। শামসাদকে সে মসজিদে নিয়ে যেতো। তাকে দাড়ি রাখতে বলে। ২০১৪ সালে এর ৬ মাস পরে তাকে চোখ বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয় গ্রুপের কমান্ডার জেনারেল জিয়ার সামনে। তারপর থেকে তার মধ্যে যে পরিবর্তন আসতে থাকে তা লক্ষ্য করতে পারে তার পরিবার। ফলে তাদের সঙ্গে তার দূরত্ব তৈরি হয়। অন্যদিকে শামসাদ ক্রমাগত উগ্রপন্থি হয়ে পড়ে।