বৃহস্পতিবার, ৪ জানুয়ারী ২০১৮
প্রথম পাতা » জেলার খবর | ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » বরিশালে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক মাটিতে, ভাঙচুর
বরিশালে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক মাটিতে, ভাঙচুর
পক্ষকাল ডেস্কঃবরিশালে মহানগর ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এসময় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক ফেলে দিয়ে নষ্ট করে দেয়।
বুধবার রাত সাড়ে ১০টায় সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরনের বাসা সংলগ্ন নগরীর নুরিয়া স্কুল মাঠে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি জসিম উদ্দিনের এক অনুসারীকে মারধর করাকে কেন্দ্র করে হামলার সূত্রপাত। এরপর কয়েকটি মোটরসাইকেল ও চেয়ার ভাঙচুর করা হয়। এসময় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক ফেলে দিয়ে নষ্ট করে দেয়।
এ ঘটনায় মহানগর আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদিক আবদুল্লাহ অনুসারী ছাত্রলীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রইচ উদ্দিন আহমেদ মান্না ও তার সহযোগীদের দায়ী করা হয়েছে। তবে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রইচ উদ্দিন আহমেদ মান্না।
মহানগর ছাত্রলীগের নেতা তারিকুল ইসলাম কানন জানান, ছাত্রলীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাত ১২টা ১ মিনিটে কেক কাটার আয়োজন করা হয়। এ সময় প্রতিপক্ষ মহানগর ছাত্রলীগের নেতা রইচ আহমেদ মান্নার নেতৃত্বে কিছু লোকজন অনুষ্ঠানস্থলে এসে কয়েকটি মোটরসাইকেল ও চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে এবং প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেকটি ফেলে দেয় তারা। হামলাকারীরা ছাত্রলীগের কর্মী মেহেদীকে মারধর করে।
ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ, জবিতে দফায় দফায় সংঘর্ষ
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ ৪ জানুয়ারি। এর আগের দিন বুধবার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার বেলা ১১টার দিকে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তরিকুল গ্রুপের জুনিয়র কর্মীদের সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক রাসেল গ্রুপের এ সংঘর্ষ সোহান ও স্বপন নামে দুজন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে সোহান নামের একজনকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে সংঘর্ষে সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের ছাত্রলীগ কর্মী জবি মার্কেটিং বিভাগের ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সোহানকে কুঁপিয়ে জখম করে। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে বলে জানান। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সকাল দশটার দিকে সংঘবদ্ধ হয়ে প্রথম দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পরেন তারা। এসময় আহত হন অপর সভাপতি গ্রুপের এককর্মী জবি সমাজকর্ম বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী স্বপন।
সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার দুপুরে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ১২ ব্যাচের অনিক স্বপ্নীল নামের সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের এক ছাত্রলীগ কর্মীকে নিজ গ্রুপে কর্মী সংগ্রহের অভিযোগে পিটিয়ে আহত করে সদ্য ভর্তি হওয়া ১৩তম ব্যাচের কয়েজন শিক্ষার্থী। ১৩ তম ব্যাচের এই শিক্ষার্থীরা শুরু থেকে গোপালগঞ্জ গ্রুপের নামে সভাপতির কর্মী বলে ক্যাম্পাসে অবস্থান দেখিয়ে বেড়ায় বলেও অভিযোগ অনেকের।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নিজ গ্রুপের কর্মীকে কুপিয়ে জখম ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পসে তিন/চার দফায় সংঘর্ষ হয়। এসময় ক্যাম্পাস রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরে পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এ বিষয়ে জবি প্রক্টর ড. নুর মোহাম্মদ সাংবাদিকদের বলেন, এ বিষয়ে কেউ কোন অভিযোগ দেয়নি। কিন্তু আমরা সপ্রনদিত হয়ে তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করছি। আমরা খুজে দেখছি কে বা কারা ক্যাম্পাসে এই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাচ্ছে।
জয়নুল আবেদীন রাসেল আধিপত্য বিস্তারের বিষয়ের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ব্যাপারটি এমন নয়। সভাপতির উপস্থিতিতে একাধিক কর্মীর গায়ে হাত তোলা নিয়েজানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা তিনি ঠিক করেন নি। তবে পরে তিনি বলেন, তিনি হয়তো পরিস্থিতি শান্ত করার জন্যও করে থাকতে পারেন। তবে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তরিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেনকে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাদের ফোনে পাওয়া যায়নি।
১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি আত্মপ্রকাশ করা সংগঠনটির ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। এ উপলক্ষে ছাত্রলীগ চার দিনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আজ সকাল সাড়ে ৬টায় সারা দেশে সংগঠনের কার্যালয়ে জাতীয় ও সাংগঠনিক পতাকা উত্তোলন, ৬টা ৩০ মিনিটে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, সকাল ৮টায় কার্জন হলে কেক কাটা এবং বিকাল ৪টায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ। ৬ জানুয়ারি সকাল ১০টায় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে শুরু হবে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রা। ৮ জানুয়ারি সোমবার দুপুর ২টায় সোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে দুস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ, ৯ জানুয়ারি স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি এবং ১১ জানুয়ারি সকাল ১০টায় অপরাজেয় বাংলায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হবে।