ঘুষের কারণে কনস্টেবল নিয়োগ স্থগিত!
পক্ষকাল ডেস্ক ;
ঘুষের কারণে দুই দিন আগে বাংলাদেশ পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) ১০ হাজার পদের (নারী-পুরুষ) ২০১৮ সালের নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত করেছে বাহিনীটি।
রবিবার (১৪ জানুয়ারি) রাতে এক জরুরি বার্তায় কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিতের তথ্য জানিয়েছে বাহিনীটির সদর দফতর। তবে এর জন্য কোনো কারণ ব্যাখ্যা করা হয়নি। বার্তায় বলা হয়েছে, নিয়োগ কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত স্থগিত থাকবে।
এদিকে নিয়োগ পরীক্ষা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত হওয়ার পরও সাধারণ প্রার্থীরা খুশি হয়েছেন। তারা আশা করছেন, কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়োগ হলে কোনো অনিয়ম থাকবে না। যোগ্য প্রার্থীরা নিয়োগ পাবে।
গত ২১ ডিসেম্বর এই পদে ১০ হাজার পুলিশ সদস্য নেয়ার জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়, যাদের মধ্যে ৮ হাজার ৫০০ জন পুরুষ এবং ১ হাজার ৫০০ নারী সদস্য নিয়োগ দেয়ার কথা ছিল। দেশের বিভিন্ন এলাকায় ১৬ জানুয়ারি থকে ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত শারীরিক মাপ ও শারীরিক পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। আর ওই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর লিখিত পরীক্ষা নেয়ার কথা ছিল ১৮ থেকে ৩০ জানুয়ারির মধ্যে। লিখিত পরীক্ষার ফল ও মৌখিক পরীক্ষা নেয়ার কথা ছিল ২৪ থেকে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে। আর মৌখিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ করার কথা ছিল ২৪ জানুয়ারি থেকে ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে।
পুলিশ সদর দফতরের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা জানান, এতদিন ধরে কনস্টেবল নিয়োগ করা হতো জেলা পুলিশ সুপারদের মাধ্যমে। তবে এবার এই প্রক্রিয়া পাল্টানোর চিন্তা করা হচ্ছে। কারণ, পুলিশ সুপারদের মাধ্যমে নিয়োগ হয় বলে স্থানীয়ভাবে দুর্নীতির ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ ওঠে। প্রায় প্রতিবারই টাকার বিনিময়ে নিয়োগের তথ্য পাওয়া যায়। আর এ কারণে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
কর্মকর্তারা জানান, এবার নিয়োগপদ্ধতি পাল্টে দিয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়োগের বিষয়ে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আলোচনা করেছেন। তবে কী প্রক্রিয়ায় এটা করা যায়, সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হলেই আবার পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন সদর দফতরের ওই কর্মকর্তা।
পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, এর আগে একবারও পুলিশ সপ্তাহের আগে কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়নি। এবারই প্রথম এ ধরনের বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। তাই এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি নিয়ে পুলিশ ও সংশ্লিষ্টদের মধ্যে ভেতরে ভেতরে ব্যাপক সমালোচনা হয়। গুঞ্জন ওঠে এ নিয়োগ প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে ব্যাপক দুর্নীতি হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এ কারণে নিয়োগ স্থগিত করা হয়েছে। যাতে নির্বাচনের বছরে এ নিয়োগ নিয়ে কেউ বাণিজ্য করে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে না পারে।
উল্লেখ্য, বর্তমান আইজিপি একে এম শহিদুল হকের মেয়াদকালে গত চার বছরে কন্সটেবলসহ প্রায় ৮০ হাজার পুলিশ সদস্য নতুন করে বাহিনীতে নিয়োগ পেয়েছেন।