মঙ্গলবার, ৩০ জানুয়ারী ২০১৮
প্রথম পাতা » অপরাধ | ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি | শিক্ষা ও ক্যারিয়ার » ৩২ ধারার পক্ষে দুই মন্ত্রীর সাফাই, তথ্যমন্ত্রী চুপ
৩২ ধারার পক্ষে দুই মন্ত্রীর সাফাই, তথ্যমন্ত্রী চুপ
পক্ষকাল ডেস্কঃসাইবার অপরাধ দমনে মন্ত্রিসভায় ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮’ অনুমোদনের পর সাংবাদিকসহ সব মহলে তোলপাড় শুরু হয়েছে। তবে এই আইনের পক্ষেই যুক্তি তুলে ধরেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। আর এনিয়ে এখনই কথা বলতে চান না তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
স্বাধীন সাংবাদিকতাকে আরও সংকুচিত করবে এই ডিজিটাল আইন- সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের এমন সমালোচনাকে উড়িয়ে দিয়েছেন তারা।
তাদের দাবি, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন যখন সংসদে পাস হবে, তখন আইসিটি অ্যাক্ট সংশোধন হবে এবং আইসিটি অ্যাক্টের ৫৭ ধারা বিলুপ্ত হবে। যে শঙ্কা সংবাদমাধ্যমের ছিল, সেই শঙ্কা ও ভীতি দূর করে দিয়েছি। আইনের সব কিছু পরিষ্কার।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৩২ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি বেআইনি প্রবেশের মাধ্যমে কোনো সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বা সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে বেআইনিভাবে প্রবেশ করে কোনো ধরনের গোপনীয় বা অতিগোপনীয় তথ্য-উপাত্ত কম্পিউটার, ডিজিটাল ডিভাইস, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বা ডিজিটাল নেটওয়ার্ক অন্য কোনো ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে গোপনে ধারণ, প্রেরণ বা সংরক্ষণ করেন বা করতে সহায়তা করেন, তাহলে তা গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধ বলে গণ্য হবে। এ জন্য ১৪ বছরের জেল এবং ২০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ৩২ ধারায় সাংবাদিকদের কোনো সমস্যা দেখছি না। এখানে প্রত্যেকটি ধারা স্পষ্ট। গুপ্তচরবৃত্তির বিষয়টি আগেও অপরাধ হিসেবে গণ্য ছিল। শাস্তির বিধান ছিল। আমরা নতুন আইনে ডিজিটাল মাধ্যমটা অ্যাড করেছি, যেটা আগে ছিল না।
তিনি বলেন, কেউ কোনো দুর্নীতির তথ্য প্রকাশ করলে সেটা অপরাধ হবে না। এটাকে অপরাধ মনে করার কোনো আইন নেই।
আইনমন্ত্রী বলেন, ৫৭ ধারা বিলুপ্তির প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন যখন সংসদে পাস হবে, তখন আইসিটি অ্যাক্ট সংশোধন হবে এবং আইসিটি অ্যাক্টের ৫৭ ধারা বিলুপ্ত হবে। সংবাদমাধ্যমের যে শঙ্কা ছিল, সেই শঙ্কা ও ভীতি আমরা দূর করে দিয়েছি।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সাংবাদিকতার অন্তরায় হবে না উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ‘আমার মনে হয় না এ আইন সাংবাদিকতার অন্তরায় হবে।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এ আইন করেও আপনাদের থামাতে পারব বলে মনে হয় না। আপনারা যেটা করেন, ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসে গোপনে ধারণ- এটা কি ঠিক? এটা ঠিক নয়।’
গোপনে যদি কোনো দুর্নীতির ভিডিও ফুটেজ ধারণ করা হয়, তাহলে এটা কি গুপ্তচরবৃত্তি হবে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আপনারা গোপনে ভিডিও ধারণ করবেন কেন?
অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার জন্য এই ধারা অন্তরায়- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ আইন স্বচ্ছতার সঙ্গেই করা হয়েছে। আইসিটি আইন করেছিল বিএনপি। সেখানে বিস্তারিত বিষয়গুলো ছিল না। কিন্তু বর্তমানে যে আইনটি করা হলো সেখানে বিস্তারিত কথাগুলো বলা আছে।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, আর আপনারা যেভাবে লেখেন সেটাও তো ঠিক নয়। একজন এমপি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। তার একটা সম্মান আছে। তার বিরোধীরা অনেক সময় কিছু তথ্য দেয় আর সেটা আপনারা পত্রপত্রিকায় যেভাবে লেখেন, ‘দিস ইজ নট কারেক্ট’।
তবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ নিয়ে এখনই কিছু বলতে চান না তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। তিনি বলেন, আগে শুনতে চাই কে কী বলেন। এরপর প্রয়োজন হলে প্রতিক্রিয়া দেব।