বিচারপতি ওয়াহহাব মিঞার পদত্যাগ
পক্ষকাল ডেস্কঃ সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের পর পদত্যাগ করেছেন আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম বিচারক মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা।
আড়াই মাস আগে বিচারপতি এস কে সিনহার পদত্যাগের পর প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি শনিবার দুপুরে মাহমুদ হোসেনকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের আদেশে সই করার পর সন্ধ্যায় বিচারপতি ওয়াহহাব মিঞা বঙ্গভবনে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন বলে তার একজন ব্যক্তিগত কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
ওই চিঠির একটি অনুলিপি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম পেয়েছে।
দৃশ্যত প্রধান বিচারপতি পদে নিয়োগ না পেয়েই চাকরির মেয়াদের ১০ মাস আগেই পদত্যাগ করলেন ওয়াহহাব মিঞা। তবে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো চিঠিতে তার প্রকাশ ঘটেনি।
সুপ্রিম কোর্টের প্যাডে পাঠানো ওই চিঠিতে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণে ‘ব্যক্তিগত কারণের’ কথা বলেছেন বিচারপতি ওয়াহহাব মিঞা।
তিনি লিখেছেন, “আমার অনিবার্য ব্যক্তিগত কারণ বশত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারকের পদ হইতে এতদ্বারা পদত্যাগ করিলাম।”
আওয়ামী লীগ আমলে ১৯৯৯ সালে হাই কোর্ট বিভাগের বিচারক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন ওয়াহহাব মিঞা। দুই বছর পর তার নিয়োগ স্থায়ী হয়। ২০১১ সালে আপিল বিভাগের বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান তিনি।
সৈয়দ মাহমুদ হোসেন হাই কোর্টে দুই বছর পরে যোগ দিলেও ২০১১ সালে আপিল বিভাগের বিচারক পদে বিচারপতি ওয়াহহাব মিঞার সঙ্গে একই দিন নিয়োগ পেয়েছিলেন।
বিচারপতি ওয়াহহাব মিঞার পদত্যাগের ফলে আপিল বিভাগে এখন বিচারক থাকবেন চারজন। তাদের মধ্যে জ্যেষ্ঠতম হবেন সদ্য নিয়োগ পাওয়া প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। তার চাকরি আছে আরও তিন বছর।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিলে আপিল বিভাগের সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারকের মতে রায় এসেছিল; ওই রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাখার পক্ষে মত জানিয়েছিলেন বিচারপতি ওয়াহহাব মিঞা। যুদ্ধাপরাধী আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির রায়ের সময় একমাত্র বিচারপতি ওয়াহহাব মিঞার দ্বিমত ছিল।
নানা নাটকীয়তার মধ্যে বিচারপতি এস কে সিনহা গত ১২ অক্টোবর ছুটি নিয়ে বিদেশে যাওয়ার পর ওই দায়িত্ব পালনের ভার আসে বিচারপতি ওয়াহহাব মিঞার ওপর। এরপর নভেম্বরে বিচারপতি সিনহার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে বিচারপতি ওয়াহহাব মিঞাকেই দায়িত্ব চালিয়ে যেতে বলেন রাষ্ট্রপতি।
বিচারপতি সিনহা ছুটিতে যাওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টের বিরল এক বিবৃতি আসে, যাতে বিচারপতি ওয়াহহাব মিঞার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের বিচারপতিদের উদ্ধৃত করে বলা হয়, বিচারপতি সিনহার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আসায় তার সঙ্গে কাজ করতে চান না তারা।
বিচারপতি ওয়াহহাব মিঞা দায়িত্ব পালনকালেই অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাবিধি নিয়ে সরকারের সঙ্গে বিচার বিভাগের টানাপড়েনের অবসান হয়।
এই বিষয়টি নিয়ে বিচারপতি সিনহা অভিযোগ তুলেছিলেন, সরকার বিচার বিভাগের ওপর কর্তৃত্ব ফলাতে চাচ্ছে।
অন্যদিকে ওই গেজেট গ্রহণ করে ওয়াহ্হাব মিঞা নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারকের আপিল বেঞ্চের আদেশে বলা হয়েছিল, “এই গেজেট আমরা পড়েছি। বিধিতে সুপ্রিম কোর্টের সুপ্রিমেসি বজায় রাখা হয়েছে। আমরা এই বিধিমালা গ্রহণ করেছি।”