বৃহস্পতিবার, ৮ মার্চ ২০১৮
প্রথম পাতা » অপরাধ | ব্রেকিং নিউজ » কন্যাসন্তান জম্ম দেয়ার দায়ে মৃত্যুপথযাত্রী ফাতেমা
কন্যাসন্তান জম্ম দেয়ার দায়ে মৃত্যুপথযাত্রী ফাতেমা
কন্যাসন্তান জম্ম দেয়ার দায়ে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন এক নারী। শ্বশুরবাড়ির লোকদের প্রত্যক্ষ সহায়তায় পাষণ্ড স্বামীর এলোপাতাড়ি দা’য়ের কোপে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে ৭ দিনের কন্যা সন্তান নিয়ে তার ঠাই হয়েছে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
ভূঞাপুর উপজেলার অলোয়া ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটেছে। এবিষয়ে ভূঞাপুর থানায় একটি মামলা দায়ের হলেও আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ার এখনো রয়েছেন ধরাছোঁয়ার বাহিরে।
অলোয়া ইউনিয়নের চান আমুলা গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে শফিকুল ইসলামের সঙ্গে ছয় বছর আগে একই উপজেলার নিকরাইল ইউনিয়নের মাটিকাটা গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের মেয়ে ফাতেমা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় অনেক যৌতুক দেয়া হলও কিছুদিন ভালভাবে সংসার করার পরে ফাতেমার জীবনে নেমে আসে অন্ধকার।
বছর দুই পরে তাদের ঘরে জন্ম নেয় একটি কন্যা সন্তান। স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি মিলে নানা অজুহাতে তার উপরে অত্যাচার চালাতো বলে অভিযোগ রয়েছে। আবারও নানা অজুহাতে মোটা অঙ্কের টাকার যৌতুক দাবি আসতে থাকে। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে ফাতেমার বাবা আবারও টাকা দিলেও দাবি বাড়তে থাকে। প্রতিনিয়তই চলতে থাকে নির্যাতন। এর মাঝেই আরেকটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেয় ফাতেমা।
ঘটনার দিন গত মঙ্গলবার রাতে স্বামী শফিকুল ইসলাম, শাশুড়ি মোছা. রোকেয়া বেগম ও শ্বশুর মো. আব্দুল হামিদ ফাতেমার ঘরে প্রবেশ করে এলোপাতাড়ি মারপিট শুরু করে। পরে শ্বশুর-শাশুড়ি হাত-পা ধরে রাখে আর স্বামী শফিকুল ইসলাম দা এনে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এসময় ফাতেমার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় ফাতেমার পিতা তোফাজ্জল হোসেন বাদী হয়ে স্বামী শফিকুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে শাশুড়ি মোছা. রোকেয়া বেগম ও শ্বশুর মো.আব্দুল হামিদের বিরুদ্ধে ভূঞাপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
গত শনিবার টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাত নম্বর ওয়ার্ডের তের নম্বর বেডে গিয়ে দেখা যায়, মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছে বাকরুদ্ধ ফাতেমা। মাথা ও ঘাড়ে বেশ কয়েকটি সেলাই দেয়া হয়েছে ফাতেমার। আর তার পাশে শুয়ে হাত-পা নাড়াচ্ছে ৭ দিনের কন্যা সন্তান অহনা।
ফাতেমার মা হালিমা বেগম জানান, আমার মেয়ের কোনো দোষ ছিল না। তারা নির্মমভাবে অত্যাচার করেছে আমার মেয়েকে। আমি তাদের কঠিন শাস্তি চাই।
এ বিষয়ে ভূঞাপুর থানা অফিসার ইনচার্জ একেএম কাওছার চৌধুরী বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।