জামায়াতে ইসলামী কেনো ইসলামী দল নয়!
পক্ষকাল সংবাদঃ
জামায়াতে ইসলামী অর্থ ইসলামী দল বা সংগঠন। শাব্দিক অর্থে জামায়াতে ইসলামী একটি ইসলামপন্থী দল হলেও ইসলাম ধর্মের প্রকৃত অনুসারীগণ এই দলটিকে ইসলামপন্থী দল বলতে নারাজ। বিশেষ করে ভারতের সর্ববৃহৎ ইসলামী বিদ্যাপিঠখ্যাত দারুল উলুম দেওবন্দ মাদরাসার কারিকুলাম অনুযায়ী গড়ে উঠা বাংলাদেশের কওমী মাদরাসা ভিত্তিক আলেম-ওলামা, মুফতি ও ইসলামী পন্ডিতগণ জামায়াতে ইসলামীকে কখনো ইসলামপন্থী দল মনে করেন না। এমন কি ভারত ও পাকিস্তানের কওমীপন্থী আলেমগণও জামায়াতে ইসলামীকে একটি পথভ্রষ্ঠ রাজনৈতিক দল মনে করেন। ভারত উপ-মহাদেশের ইসলামী পন্ডিতদের মতে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ আবুল আলা মওদুদীর চিন্তা-চেতনা ছিলো ভুলে ভরা। তিনি ইসলামকে শুধু রাজনৈতিক বিবেচনায় চিন্তা করেছেন। তার লেখা বিভিন্ন বই পুস্তকে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে বিভ্রান্তিমূলক চিন্তা-চেতনার বহিপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। এই সব বই-পুস্তকে তিনি কোরআন, হাদীস, নবী, রাসুল ও সাহাবায়ে কিরাম সম্পর্কে জঘন্য ধারনা তুলে ধরেছেন, যা ইসলামের প্রকৃত চিন্তা-চেতনার বিরোধী। আসলে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাহিস সালাম মহান আল্লাহর নিকট থেকে মানব জাতির কল্যাণে যে ইসলাম ধর্ম নিয়ে এসেছেন, জামায়াতে ইসলামী সেই ইসলামের ধারে কাছেও নেই। তারা মদীনার ইসলামের কথা বলে না। তারা যে ইসলামের কথা বলে সেটা আবুল আলা মুওদুদীর আবিস্কৃত ইসলাম। মওদুদীর ইসলামের সাথে মুহাম্মাদুর রাসুল সা. এর ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। আবুল আলা মওদুদী ইসলাম সম্পর্কে যে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করেছেন, তা বিশ্বাস করলে কোনো মুসলমানের ঈমান থাকবে না। ইসলামী পন্ডিতদের মতে জামায়াতে ইসলামী রাজনৈতিকভাবেও একটি প্রতারক দল। তারা মূখে বলে এক কথা আর কাজ করে তার উল্টো। ইসলাম এ ধরনের লোকদেরকে মুনাফিক বলে আখ্যায়িত করেছে। এই মুনাফিকদের থেকে দুরে থাকা প্রত্যেক মুসলমানের জন্যেই জরুরি। জামায়াতে ইসলামী প্রচলিত গণতন্ত্রে বিশ্বাস না করলেও তারা গণতন্ত্র মেনেই দল চলায়। জামায়াত নেতারা সৎ লোকের শাসনের কথা বলে চার দলীয় জোট সরকারের আমলে মন্ত্রিত্ব গ্রহন করে ঘুষ-দুর্নীতি ও দলীয়করণসহ সবই করেছে। জামায়াতের প্রত্যেকটি অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান সততার কথা বলে হালাল-হারমের মিশ্রণ ঘটিয়ে মানুষের সাথে প্রতারণা করে নিজেরা ভোগ বিলাসে মত্ত হয়েছে। বিগত বছরগুলোতে আন্দোলন-সংগ্রামের নামে জামায়াতে ইসলামী অগ্নিসংযোগ ও পেট্টুল বোমা মেরে বহু নিরিহ মানুষকে হত্যা করেছে। জামায়াত শিবিরের কর্মীরা তাণ্ডবলীলা চালিয়ে দেশের বহু সম্পদ নষ্ট করেছে। হরতাল অবরোধের নামে দেশের হাজার হাজার গাছ কেটে পরিবেশের বিপর্যয় ঘটিয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ইভটিজিংসহ সব ধরনের অপকর্ম করেছে এবং সুযোগ পেলে এখনো করছে। ছাত্রশিবির নামাজ, রোজা, ধর্ম-কর্ম ও কুরআন-হাদীসসহ ইসলামী বই-পুস্তক পড়ার কথা বলে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের ব্রেন ওয়াশ করে জঙ্গীবাদে উদ্বুদ্ধ করেছে। জামায়াতে ইসলামী একমাত্র দল যারা ইসলাম ধর্মের প্রচার-প্রসারের কথা বলে দেশ-বিদেশ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে জঙ্গীবাদে অর্থায়ন করেছে। তারা সহযোগি সমর্থক থেকে কর্মী এবং কর্মী থেকে নেতা পর্যায় পর্যন্ত মওদুদীর আবিস্কৃত ইসলামের অনুসারী বাণিয়ে সাধারণ মুসলমানের ঈমান হরণ করেছে। জামায়াত শিবিরের কর্মীরাই এ দেশে হাতকাটা ও রগকাটা রাজনীতি আমদানী করেছে। আসলে জামায়াত শিবির সত্য ও ন্যায় আদর্শিক রাজনীতির কথা বলে বাংলাদেশের মানুষের সাথে প্রতারণার রাজনীতি করছে। তাদের থেকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে নিজেদের ঈমান আমলের সুরক্ষা ও দেশের কল্যাণের স্বার্থেই।শহীদুল্লাহ শাহ নূর
সদস্য , বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটি
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ