শনিবার, ১৩ অক্টোবর ২০১৮
প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ » তারেক রহমানের নেতৃত্বের প্রশ্নে রাজনৈতিক অঙ্গন সরগরম
তারেক রহমানের নেতৃত্বের প্রশ্নে রাজনৈতিক অঙ্গন সরগরম
পক্ষকাল সংবাদঃ
বাংলাদেশে বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে বিরোধীদল বিএনপি’র একাধিক নেতার ফাঁসি ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের শাস্তি ঘোষণার পর দলটির ভবিষ্যত নেতৃত্বের প্রশ্নে নতুন করে বিতর্কে রাজনৈতিক অঙ্গন সরগরম হয়ে উঠেছে।একটি দুর্নীতির মামলায় দলের চেয়ারপারসন বেগম জিয়াকে পাঁচ বছরের সাজা দিয়ে কারাবন্দী করার পর এবার সরকারি দলের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে- তারেক রহমানকে শাস্তি বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হোক এবং তাকে প্রবাস থেকে দেশে এনে সাজা কার্যকর করা হোক। আরো দাবি করা হচ্ছে- যেহেতু বিএনপি সরকারের আমলে এ ঘটনাটি ঘটেছে সেহেতু সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকেও এ মামলায় শাস্তি পেতে হবে।
এছাড়া, বিএনপি’র কাছে দাবি করা হচ্ছে তারেক জিয়াকে দলের নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হোক। এমনকি বিএনপি’র সাথে যারা জোটবদ্ধ আন্দোলন করতে সক্রিয় দলগুলিকেও এ নিয়ে সমালোচনা শুনতে হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোটের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম এবং জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুসহ অন্যান্য নেতারা বলেছেন, বিএনপি’র রাজনীতি সন্ত্রাসী রাজনীতি; জনগণ তাকে প্রত্যাখ্যান করবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সরকারের সড়ক পরিবহন ও মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আদালতের রায়ই প্রমাণ করে বিএনপি এখন জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সন্ত্রাসী দল। একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় বেগম খালেদা জিয়ারও বিচার হওয়া উচিত।
গতকাল (শুক্রবার) সকালে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
ওদিকে, বিএনপির শীর্ষ নেতারা দাবি করছেন, আদালতে ফরমায়েশি রায়ে সাজা হলেও দলীয় পদ থেকে তারেক রহমানের পদত্যাগের কোনো প্রশ্নই ওঠে না
তারা আরো বলছেন, এ রায়ে বিরোধী দলের জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় কোনো প্রভাব পড়বে না। একই সঙ্গে তারা দাবি করেন, আলোচিত এ মামলার রায়ে আদালতের দেয়া পর্যবেক্ষণ বিশেষ কোনো দলের বক্তব্যের প্রতিফলন।
দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ রায়কে ‘রাজনৈতিক’ উল্লেখ করে বলেছেন, ‘আদালতের এসব পর্যবেক্ষণ এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক বক্তব্য হুবহু এক। নিম্ন আদালতের দেয়া রায়কে যখন আমরা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার প্রতিফলন এবং বিএনপিকে দুর্বল করার অসৎ উদ্দেশ্য বলছি তখন সেই রায়ের ভিত্তিতে আমাদের নেতা তারেক রহমানের পদত্যাগের প্রশ্নই আসে না।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপির আমলে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের দায়িত্ব যদি রাষ্ট্রযন্ত্রের হয় তাহলে বর্তমান সরকারের শাসনামলে পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড, হলি আর্টিজান হত্যাকাণ্ডসহ অসংখ্য সাধারণ মানুষের হত্যাকাণ্ডের দায় ক্ষমতাসীনদের ওপরই বর্তায়। কাজেই রাষ্ট্রযন্ত্রের সহায়তার হামলা হয়েছে বলে আদালতের যে পর্যবেক্ষণ তা যুক্তিযুক্ত এবং গ্রহণযোগ্য নয়।’
এদিকে, জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, জনগণ এ রায় প্রত্যাখ্যান করেছে বিধায় তা দলের কাছে গুরুত্বহীন। জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া তার গতিতেই চলবে দাবি করে শিগগিরই আন্দোলনের কাঠামো ও রূপরেখা দয়া হবে বলেও জানান তিনি।
তাছাড়া জাতীয় ঐক্যের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, বিএনপির দলীয় প্রধান কে, তা দেখে দলটির সঙ্গে ঐক্য হয়নি।
তবে ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে ভারপ্রাপ্ত দলীয় প্রধান দণ্ডিত হওয়ার পরে বিএনপির সঙ্গে রাজনৈতিক ঐক্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। তারা বলছেন, সন্ত্রাসী চিহ্নিত কেউ যদি প্রধান হয় সে দলের সঙ্গে জোট করা সন্ত্রাসবাদকেই সমর্থন দেবার শামিল।