
সোমবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০১৯
প্রথম পাতা » ই-পেপার | জেলার খবর | বিনোদন | ব্রেকিং নিউজ | শিক্ষা ও ক্যারিয়ার » পর্যটকে মূখরিত মুজিবনগরের আম্রকানন
পর্যটকে মূখরিত মুজিবনগরের আম্রকানন
মাসুদ রানা, মেহেরপুর প্রতিনিধি ॥ বাংলাদেশের জন্মের সঙ্গে জড়িত একটি নাম মুজিবনগর। প্রতি বছর বিভিন্ন জাতীয় দিবস ও উৎসবে মেহেরপুরের এ উপজেলায় অবস্থিত ঐতিহাসিক মুজিবনগর কমপ্লেক্সে ভিড় করেন পর্যটকরা। এর পাশাপাশি সদর উপজেলার আমঝুপি ও গাংনী উপজেলার ভাটপাড়া নীলকুঠি ঘুরে বেড়ান তারা। তবে এবার শীত মৌসুমেও জেলার এসব পর্যটন স্পটে সবচাইতে বেশী সংখ্যক দর্শনার্থীর ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। সংশ্লিষ্টদের মতে, অবকাঠামো উন্নয়ন সুবাদে মেহেরপুরের ঐতিহাসিক স্থানগুলোয় দিবস-উৎসবের পাশাপাশি বছরের বাকি সময়েও পর্যটকের আনাগোনা বাড়ছে।
মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার আ¤্রকাননে বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার গঠিত হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামের সঙ্গে মিল রেখে এ স্থানের নামকরণ করা হয় মুজিবনগর। মুক্তিযুদ্ধকালীন এ ঘটনা স্মরণীয় করে রাখতে স্বাধীনতা স্মৃতিসৌধ ও পরবর্তীতে পর্যটন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার জন্য মুজিবনগর কমপ্লেক্স গড়ে তোলা হয়। মেহেরপুর শহর থেকে এ পর্যটন কেন্দ্রের দূরত্ব প্রায় ১৭ কিলোমিটার। সাধারণত প্রতি বছর ১৭ এপ্রিল, বিভিন্ন জাতীয় দিবস ও উৎসবে এ কমপ্লেক্সে প্রচুর দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে। তবে এবার শীত মৌসুমেও এ পর্যটন কেন্দ্রে দর্শনার্থী ভিড় করছেন। বিশেষ করে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শিক্ষা সফরের অংশ হিসেবে এ কমপ্লেক্স দেখতে আসছে। এছাড়া অনেকেই বন্ধুবান্ধব ও পরিবার-পরিজন নিয়ে এ ঐতিহাসিক স্থান ঘুরতে আসছেন।
কুষ্টিয়া থেকে আসা আশিক নামে যুবক বলেন, আমার নানার কাছে মুক্তিযুদ্ধের অনেক গল্প শুনেছি। তাই বিদ্যালয় থেকে বেড়ানোর কথা উঠতেই আমরা মুজিবনগরের নাম প্রস্তাব করি। এখানে বেড়াতে আসতে পেরে ভালো লাগছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে বেড়াতে আসা ইসমাইল হোসেন বলেন, মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী প্রজন্মকে এ ঐতিহাসিক স্থান সম্পর্কে জানানো উচিত। তাই আমার সন্তানদের নিয়ে ঘুরতে এসেছি। যশোরের খেজুরতলা থেকে আসা শাম্মি আক্তার জুঁই বলেন, মুজিবনগর কমপ্লেক্স বাংলাদেশের সূচনাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। এজন্য বারবার এখানে আসা উচিত।
মুজিবনগর ছাড়াও পর্যটকরা আমঝুপি ও ভাটপাড়া নীলকুঠিতে ভিড় করছেন। এ দুটি পর্যটন কেন্দ্রকে এরই মধ্যে ইকোপার্ক ঘোষণা দেয়া হয়েছে। একটি স্থানকে দৃষ্টিনন্দন করার কাজও শেষের পথে। অন্যদিকে আমঝুপি নীলকুঠিতে পর্যটন কেন্দ্রকে ইকোপার্ক ঘোষণা করেও অধরা থেকে গেছে। সামন্য একটু কাজ হলেও সেটি অবহেলার করণে নষ্ট হয়ে গেছে।
বগুড়া থেকে আসা আরেক দর্শনার্থী সিন্থিয়া মন্ডল বলেন, এখানকার সবকিছুই মনোমুগ্ধকর। তবে এখানে বসার স্থান ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা থাকা উচিত। মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক আতাউল গনি বলেন, মুজিবনগর দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের অংশ। আমরা মুজিবনগরকে গুরুত্বসহকারে দেখি। এ স্থান ঘুরতে এসে যেন সাধারণ দর্শনার্থীদের কোনো সমস্যা না হয়। আমরা তা যতœসহকারে তদারক করছি। এরই মধ্যে সেখানে ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আশা করি, পর্যটন কেন্দ্রের অন্যান্য সুবিধাও অল্প সময়ে যুক্ত হবে। তখন পর্যটকের সমাগম আরো বাড়বে।