শনিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৯
প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি | শিক্ষা ও ক্যারিয়ার » বাঙালিরা রক্ত দিয়ে ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করেছেন: প্রধানমন্ত্রী
বাঙালিরা রক্ত দিয়ে ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করেছেন: প্রধানমন্ত্রী
পক্ষকাল ডেস্ক
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী (ছবি- ফোকাস বাংলা)
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতি হিসেবে আমাদের সবচেয়ে গৌরবের বিষয় বাঙালিরা রক্ত দিয়ে ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করেছেন। আমরা ভাষার জন্য রক্ত দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছি।
শুক্রবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্র। ইউরোপের প্রত্যেকটি রাষ্ট্রই তাদের ভাষাভিত্তিক। আর বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র দেশ, যেটা ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। সেই স্বাধীনতা আমরা অর্জন করেছি— জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে।’ ৭৫ সালের পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল, তারা বাংলা ভাষা, সাহিত্য এবং সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যখনি বাঙালি ভাগ্য পরিবর্তনের একটু সুযোগ পায়, তখনই একটা আঘাত আসে। বাংলাদেশের জনগণ, আমরা বাঙালি, আর বাংলাদেশের মাটির সন্তান রাষ্ট্র পরিচালনা করুক, এটাও বোধহয় অনেকের পছন্দ হয় না, সহ্য হয় না। বাংলাদেশের মানুষ যখন একটু ভালো থাকে, কিছু মানুষ আছে, তারা খুব মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। আর যখন কোনও মার্শাল ল হয় বা যখন ইমার্জেন্সি হয়, যখন কোনও অসাংবিধানিক সরকার ক্ষমতায় আসে, তখন এই গোষ্ঠীটা খুব তৃপ্তির সঙ্গে থাকে। তখন আবার তাদের মূল্য বেড়ে যায়। কারণ, জনগণের মূল্য তাদের কাছে কিছু না। তাদের কাছে নিজেরা ক্ষমতায় যেতে পারলে বা ক্ষমতার একটু বাতাস পাওয়াটাই আসল।’ সেই বাতাসটুকুর আশায় তারা বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে সবসময় ছিনিমিনি খেলায় ব্যস্ত থাকে বলে অভিযোগ করেন সরকার প্রধান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সবকিছু অর্জন করতে হয়েছে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। আমরা পরপর তিনবার সরকারে এসেছি। সরকারে আসা অর্থাৎ জনগণের যে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেছি, এর মর্যাদা আমাদের দিতে হবে। উন্নয়নের যে ধারাটা এখন সূচিত হয়েছে, এই ধারা আমাদের অব্যাহত রেখে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। একটানা ১০ বছর সরকার গঠন করে আমরা উন্নয়ন করেছি বলেই আজ উন্নয়ন দৃশ্যমান। বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশ একটা সম্মান পেয়েছে, একটা মর্যাদা পেয়েছে এবং উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। আমরা ক্ষুধা দূর করতে পেরেছি। আমাদের দারিদ্র্যমুক্ত করতে হবে দেশকে। ২০২০ সাল জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করবো। ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের মার্চ মাসে মুজিব বর্ষে ইনশআল্লাহ বাংলাদেশ দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হিসেবেই অধিষ্ঠিত হবে।’
তিনি বলেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ হবে একটা উন্নত সমৃদ্ধ দেশ। আমরা সেখানেই থেমে থাকবো না, আমরা ২১০০ সালে বাংলাদেশ কেমন হবে, ডেল্টা প্রণয়ন করে সেটার বাস্তবায়নও শুরু করেছি।’
বক্তব্যের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী চকবাজারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনার পাশাপাশি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আরও বক্তব্য দেন দলের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য আখতারুজ্জামান, মেরিনা জাহান কবিতা, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তরের সভাপতি একেএম রহমতউল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান প্রমুখ। এছাড়া, বিশিষ্টজনের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন। যৌথভাবে সভা পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।