মঙ্গলবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৯
প্রথম পাতা » তথ্য-প্রযুক্তি | ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » জনগণের কাছে ধর্ণা দিন, বিদেশীদের কাছে নয়
জনগণের কাছে ধর্ণা দিন, বিদেশীদের কাছে নয়
পক্ষকাল সংবাদ ঃ
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপি বা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ধর্ণা দেয়া উচিত জনগণের কাছে, বিদেশীদের কাছে নয়। কারণ দেশের জনগণই হচ্ছে ক্ষমতার মালিক, অন্য কেউ নয়। বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট ঘনঘন বিদেশীদের সাথে দেখা করার মাধ্যমে তাদের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বই প্রকাশ পায়।’
মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরামে’র সাথে ‘জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। ফোরামের সভাপতি কাওসার রহমান, সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন, যুগ্মসম্পাদক মাসউদুল হকসহ সদস্যবৃন্দ মতবিনিময়ে অংশ নেন।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রতিনিধি দল সোমবার কূটনীতিকদের সাথে দেখা করার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘গতকাল সোমবার ড. কামাল হোসেন, মির্জা ফখরুলসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একটি প্রতিনিধি দল মার্কিন রাষ্ট্রদূতসহ কয়েকজন কূটনীতিকের সঙ্গে দেখা করেছেন। প্রকৃত পক্ষে দেশের জনগণই হচ্ছে ক্ষমতার মালিক, অন্য কেউ নয়। বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট ঘনঘন বিদেশীদের সাথে দেখা করার মাধ্যমে তাদের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বই প্রকাশ পায়।’
‘তারা দেশে কোনো কিছু হলেই বিদেশীদের কাছে ধর্ণা দেন। এতে যে শুধু তাদের দলকে অপমানিত করা হয়, তা নয়, দেশকেও অপমানিত করা হয়। আমি মনেকরি তাদের ধর্ণা দেয়া উচিত জনগণের কাছে, বিদেশীদের কাছে নয়। কারণ রাষ্ট্রের মালিক হচ্ছে জনগণ। তাদের দল যদি জনগণের জন্য হয়, তারা ধর্ণা দেবে জনগণের কাছে, বিদেশীদের কাছে কেন?’ প্রশ্ন করেন ড. হাছান মাহমুদ।
ঐক্যফ্রন্টের গণশুনানির বিষয়ে সাংবাদিকদের অপর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘গণশুনানির সময় নেতৃবৃন্দের নিদ্রারত ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা গেছে ‘গণঘুম’ হিসেবে। জনগণের চোখে ধুলো দেবার জন্য গণশুনানির নাটক মঞ্চায়ন করা হয়েছে বলেই প্রতিভাত হয়। গণশুনানির কোনো আবেদন তারা জনগণের কাছে তৈরি করতে পারেনি। উপরন্তু তাদের দলের একজন নেতা বলেছেন, গণশুনানির পাশাপাশি তাদের নেতাদের শুনানি করা প্রয়োজন, কার কী ভূমিকা ছিল তা জানতে। এ বিষয়ে আমি একমত।’
জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলার বিষয়ে সাবেক বন ও পরিবেশ মন্ত্রী, পরিবেশ-গবেষক ও গ্রিন পিস আন্দোলনের সাবেক সদস্য ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের কোন দায় নেই । তা সত্বেও বাংলাদেশ কার্বন কমানোর পরিকল্পনা নিয়েছে । ৫০ লক্ষ সোলার বিদ্যুৎ স্হাপন করেছে । জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশ বিশ্বকে পথ দেখাচ্ছে । সেকারণেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ২০১৫ সালে পরিবেশ বিষয়ে ‘চ্যাম্পিয়নস অভ্ দ্য আর্থ’ সর্বোচ্চ পুরস্কারে ভূষিত করে জাতিসংঘ।
‘বাংলাদেশ নিজে দায়ী না হয়েও জলবায়ু পরিবর্তনে নির্মম শিকার ‘ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্যারিস চুক্তি হলেও এখন কার্যকর হচ্ছে না কয়েকটি দেশের কারণ । এটি কার্যকর হলে বাংলাদেশ সহ যারা ক্ষতিগ্রস্ত দেশ তারা উপকৃত হবে ।’
মন্ত্রী বলেন, ‘ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধিকার, স্বাধীনতা, গণতান্ত্রিক সকল আন্দোলনের মতো জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়েও সাংবাদিকরা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে আসছে । সাংবাদিকরা এখন সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার মাধ্যমে সরকারকে এই ইস্যুতে আরো কাজ করার জন্য ভুমিকা রাখতে পারেন ।’
পরিবেশ সচেতনতা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘পরিবেশ সচেতনতা যদি স্কুল থেকে শুরু হয় তাহলে আমাদের পরিবেশটা অনেক ভালো থাকবে, ভালো হবে। বিদেশে বাচ্চারা রাস্তায় কোন কাগজ ফেলে না আর আমাদের দেশে অনেক শিক্ষিত মানুষ রাস্তায় ময়লা আবর্জনা ফেলে। একটা সচেতনতার ব্যাপক অভাব রয়েছে। পরিবেশ সচেতনতা ও জলবায়ুর পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলা করাসহ সমস্ত বিষয় তথ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যে প্রকল্পগুলো আছে সেখানে আরও ব্যাপকভাবে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।’
সাংবাদিকদের অপর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, ‘ভারতে বিটিভি দেখা যাবে । এ বিষয়ে ভারতের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক সাক্ষরের জন্য একটি খসড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভারতে পাঠানো হয়েছে । আশা করি দু’দেশ একমত হলে খুব দ্রুত সময়ে সাক্ষর হবে । তখন বিটিভি ভারতে দেখতে পারবে ।’