মঙ্গলবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৯
প্রথম পাতা » বিশ্ব সংবাদ | ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা নিয়ে যা বলল চীন
ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা নিয়ে যা বলল চীন
নয়াদিল্লি, ২৬ ফেব্রুয়ারি- ভারতীয় বিমানবাহিনীর কাশ্মীর সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন করে পাকিস্তানে বোমা হামলা চালায়। এ হামলার ঘটনা নিয়ে পাকিস্তান ও ভারতে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।এ নিয়ে দুই দেশের প্রধানরা জরুরি সভার আহ্বান করে।
এদিকে এমন উত্তেজনার মধ্যে চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের সর্বোচ্চ সংযত থাকতে আহ্বান জানায়। এএফপি
মঙ্গলবার নয়াদিল্লি এবং ইসলামাবাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ‘আমরা আশা করি ভারত আর পাকিস্তান উভয়ই সংযত হয়ে সমঝোতার চর্চা করবে। যা দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনা কমিয়ে একটা স্থিতিশীল পরিবেশ তৈরিতে সহায়ক। আর এর মাধ্যমেই তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটবে।’
এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মুখপাত্র মাজা কোচিজানসিক বলেন, আমরা দুই দেশের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। আমরা বিশ্বাস করি দুই দেশের সর্বোচ্চ সংযত দরকার রয়েছে পরবর্তী উত্তেজনা এড়াতে।
এ হামলা নিয়ে ভারত বিশ্ব নেতাদের জানায়, কাশ্মীরের পুলওয়ামায় হামলকারীরা পাকিস্তানের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। সেখানে জঙ্গিদের উদ্দেশ্যে ভারত হামলা চালায়।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিজয় গোখাল বলেন, এ বিমান হামলা খুব জরুরি ছিল।
ভারতীয় বিমানবাহিনী পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া এলাকায় বালাকোটের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর বোমা হামলায় ২০০-৩০০ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে বলে দেশটির সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়। তবে এ হামলায় কোনো হতাহত হয়নি বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী গণসংযোগ অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আসিফ গফুর।
এদিকে ইমরান খানের নেতৃত্বে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির জরুরি বৈঠকের পর এক বিবৃতিতে বলা হয়, ভারত যে স্থানে হামলা করার দাবি জানিয়েছে, সেখানে সরেজমিনে পরিদর্শনের জন্য বিশ্বের জন্য স্থানটি খোলা রাখা হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ভারতীয় সরকার আরেকবার তাদের আত্মস্বার্থে বেপরোয়া কাল্পনিক দাবির আশ্রয় নিয়েছে।
‘ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভারত অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে যে আগ্রাসন চালিয়েছে, সময় ও স্থান অনুসারে পাকিস্তান তার জবাব দেবে।’
বৈঠকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, অর্থমন্ত্রী ও সেনাপ্রধান উপস্থিত ছিলেন।
কাশ্মীর সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর মুজাফফরাবাদ সেক্টরে ভারতীয় বিমান অনুপ্রবেশ করেছিল বলে স্বীকার করেছেন।
পাক মেজর জেনারেল আসিফ গফুর মঙ্গলবার টুইটারে তিনি লিখেছেন- ভারতীয় বিমান নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সীমান্ত লঙ্ঘন করলেও পাকিস্তানি বিমানের তাড়া খেয়ে পালিয়ে গেছে।
পরবর্তী সময় তিনি বলেন, পাক বিমানবাহিনী যথাসময়ে ও কার্যকরভাবে সাড়া দিয়েছে। তাড়া খেয়ে পালানোর আগে বালাকোটের কাছে বোমা ফেলে গেছে। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
পরবর্তী সময় আসিফ গফুর বলেন, জম্মু ও কাশ্মীরের মুজাফফরাবাদ সেক্টরের ভেতর তিন থেকে চার মাইলের ভেতর ভারতীয় বিমান ঢুকে পড়েছিল।
তবে টুইটারে পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন দল পিটিআই বলেছে, আমরা বুঝতে পারছি- এটি ভারতীয় নির্বাচনের বছর। কাজেই সীমান্তে তারা বেশ বেপরোয়াই থাকবে। তবে ঘটনা হচ্ছে, পাকিস্তানি টহল বিমান তাদের তাড়িয়ে দিয়েছে।
এর আগে ভারতীয় কৃষিমন্ত্রী গাজেন্দ্র সিং শেখওয়াত বলেন, নিয়ন্ত্রণরেখা পার হয়ে সন্ত্রাসীদের ক্যাম্পে মঙ্গলবার সকালে বিমান হামলা চালিয়েছে ভারতের বিমানবাহিনী। হামলায় সন্ত্রাসীদের ওই ক্যাম্প পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।
মুজাফফরাবাদ এলাকাটি পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের অংশ ও বালাকোট শহরটি কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে।
এর আগে ২০১৬ সালে নিয়ন্ত্রণরেখার অপর পাশে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সাতটি শিবিরে সার্জিক্যাল হামলা চালানোর দাবি করেছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী।
ওই বছরের প্রথম দিকে জম্মু ও কাশ্মীরের উরি সেনাঘাঁটিতে হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ওই অভিযান চালানো হয় বলে দাবি করেছিল ভারত।