শনিবার, ৯ মার্চ ২০১৯
প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » ‘মানুষের মাথা কেনা যায় না, গরু-ছাগলের মাথা কেনা যায়: ড. কামাল
‘মানুষের মাথা কেনা যায় না, গরু-ছাগলের মাথা কেনা যায়: ড. কামাল
পক্ষকাল সংবাদ ০৮ মার্চ- গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘মানুষের মাথা কেনা যায় না, গরু-ছাগলের মাথা কেনা যায়। যারা গরু-ছাগলের মত বিক্রি হয় তারা দালাল হিসেবে পরিচিত।’
গণফোরাম থেকে বহিষ্কৃত সুলতান মোহাম্মদ মনসুরের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি শুক্রবার রাজধানীর মতিঝিলে গণফোরামের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর গণফোরামের বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, অতীতে রাজনীতি ছিল মানুষকে নিয়ে। এখন অনেকে নিজেদের স্বার্থ নিয়ে রাজনীতি করেন।
ড. কামাল হোসেন বলেন, দেশে সুস্থ রাজনীতির চাহিদা আছে এটা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। কুশাসন থেকে জনগণ মুক্তি চায়, মিথ্যার ওপর রাষ্ট্র চলতে পারে না।
ড. কামাল বলেন, জনগণের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে সার্বক্ষণিক জনগণের সঙ্গে থাকলে অচিরেই সুস্থ ধারার রাজনীতি দৃশ্যমান হবে। দেশের বেশিরভাগ মানুষ সুস্থ ধারার রাজনীতির পক্ষে। এ রাজনীতি চর্চা হতে থাকলে অপরাজনীতি চিরতরে বিদায় নেবে।
গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টুর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন সাইদুর রহমান সাইদ, আইয়ুব খান ফারুক, রফিকুল ইসলাম পথিক, হারুনুর রশীদ তালুকদার, মো. রওশন ইয়াজদানী, ফরিদা ইয়াছমীন প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজার-২ আসন থেকে ‘ধানের শীষ’ প্রতীকে নির্বাচিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী গণফোরামের সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ দল ও জোটের সিদ্ধান্তের বাইরে বৃহস্পতিবার সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেন।
এজন্য তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে ড. কামালের নেতৃত্বাধীন গণফোরাম।
গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু স্বাক্ষরিত একটি চিঠি সুলতান মোহাম্মদ মনসুরকে পাঠানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, ‘৩০ ডিসেম্বর ১১তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নামে জাতীয় কলংক অনুষ্ঠিত হয়েছে। তার মধ্যেও আপনি বিজয়ী হওয়ায় দল এবং ঐক্যফ্রন্ট আপনাকে আগেই অভিনন্দন জানিয়েছে। এই প্রহসনের নির্বাচনের ফলাফল জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রত্যাখ্যান করেছে। যা আপনি অবহিত। এ ছাড়া এই নির্বাচনে সৌভাগ্যবান বিজয়ী ঐক্যফ্রন্টের ৮ জন নির্বাচিত সংসদ সদস্য শপথ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, যা আপনি অবহিত রয়েছেন’।
চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘কিন্তু আপনি দলীয় এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সিদ্ধান্ত অমান্য করে শপথ গ্রহণ করেছেন যাতে দেশের মানুষ চরম হতাশ এবং বিক্ষুদ্ধ। আমাদের দল গণফোরাম এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনে করে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও ভোটের অধিকার আদায়ের সংগ্রামকে পদদলিত করে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিয়ে আপনি নৈতিকতাবিরোধী, জনবিরোধী এবং সংসদীয় রীতি বিরোধী কাজ করেছেন। অতএব, আপনার বিরুদ্ধে দলের নীতিবিরোধী, আদর্শবিরোধী, জনবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে আপনার গণফোরামের প্রাথমিক সদস্যপদ বাতিল করা হলো এবং গণফোরাম থেকে বহিষ্কার করা হলো। একইসঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্যপদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো’।
এর আগে গত ২ মার্চ সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিতে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে চিঠি দেন গণফোরামের দুই নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ও মোকাব্বির খান। ৭ মার্চ শপথ নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন তারা। সে অনুযায়ী সংসদ সচিবালয় বৃহস্পতিবার শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সুলতান মোহাম্মদ মনসুর শপথ নিলেও শেষ মুহূর্তে পিছু হটেন সিলেট-২ আসন থেকে নির্বাচিত গণফোরামের আরেক সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান।
সূত্র: যুগান্তর