বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ ২০১৯
প্রথম পাতা » রাজনীতি | শিক্ষা ও ক্যারিয়ার » মহাকালের মহানায়ক সহিউদ্দিন বিশ্বাস।
মহাকালের মহানায়ক সহিউদ্দিন বিশ্বাস।
ফরহাদ হোসেন দোদুল এম পি, বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী। পেশায় একজন শিক্ষক। একজন শিক্ষকের যতটুকু গুণাবলি থাকা প্রয়োজন তার চাইতে বেশিই তার মাঝে আছে বলে আমি মনে করি।
শহিদুল ইসলাম শাহিন_আমার কাছে তার সব চাইতে বড় পরিচয় তিনি আমাদের এলাকার বড়ভাই, একজন অভিভাবক। সেই পরিচয়ের সুবাদেই তার কাছে যাওয়া। ব্যাক্তিগত ভাবে তার কাছে আমার চাওয়ার কিছুই ছিলোনা যতটুকু চাওয়া তা মেহেরপুরকে ঘিরে। বাংলাদেশের দক্ষিন পশ্চিমের একটি ছোট্ট জেলার মানুষ আমি। শৈশব থেকে দেখেছি এই জেলাতে জন্ম নিয়েছে বেশ কয়েকজন কিংবদন্তি তার মধ্যে দোদুল ভাইয়ের বাবা অন্যতম।
সহিউদ্দিন বিশ্বাস এমন একজন নেতা ছিলেন যিনি মেহেরপুরের ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন এবং থাকবেন। তার ছিলো বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন। মেহেরপুরের আপামর জনসাধারণের কাছে তিনি ছিলেন একজন প্রাণপ্রিয় নেতা। ১৯৬২ সালে তিনি মেহেরপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে হায়াত উকিলের কাছে মাত্র তিন ভোটে হেরে যান।
তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর বিশ্বাসভাজন একজন কর্মী। মনে প্রানে ভালো বাসতেন বঙ্গবন্ধুকে। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় উকিল নিয়োগের প্রয়োজনে তিনি তার আটাশ বিঘা সম্পত্তি বিক্রয় করে মামলা পরিচালনার প্রয়োজনে অর্থের যোগান ডীটে সহায়তা করেন।
তিনি ১৯৭০ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য (MNA – Member of National Assembly) নির্বাচিত হন। স্বাধীনতার পর পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের বাঙালি সদস্যদের মধ্যে একজন বাদে সকল MNA ও পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদের সকল সদস্য (MPA – Member of Provincial Assembly) নিয়ে গণপরিষদ (Constituent Assembly) গঠন করা হলে তিনি তার সদস্য হিসাবে সংবিধান রচনা ও গ্রহণে অবদান রাখেন। নতুন সংবিধানের অধীনে প্রথম নির্বাচনে, ১৯৭৩ সালে, জাতীয় সংসদ সদস্য (MP – Member of Parliament) নির্বাচিত হন। ১৯৭৫ সালে তিনি মেহেরপুরের গভর্নর নিযুক্ত হন।
১৯৮৬ সালে তিনি জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে আইন সভায় তৃতীয় দফা মেহেরপুরকে প্রতিনিধিত্ব করেন। ১৯৮৭ সালের নির্বাচনের পর এরশাদ সরকারের রোষানলে পড়ে বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে কারাবরন করেন
আমার স্বচক্ষে দেখা একজন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ। অত্যান্ত মৃদুভাষী একজন সদালাপী মানুষ হিসেবে এলাকাতে তার যেমন সুখ্যাতি ছিলো তেমনি তিনি ছিলেন একজন সৎ রাজনীতিবিদ। মাননীয় প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন দোদুল সহিউদ্দিন বিশ্বাসের সেজো সন্তান। মেহেরপুর আওয়ামীলীগের পথচলা শুরু হয়েছিলো সহিউদ্দিন চাচার হাত ধরে। পিতার আদর্শকে বুকে ধারণ করে তিনি রাজনীতির মাঠে নামেন।
বিগত পাঁচ বছরে তার শাসনামলে মেহেরপুর রাজনীতি নতুন আলোর মুখ দেখে। পেশায় শিক্ষক হবার সুবাদে তিনি মেহেরপুর জেলার শিক্ষার বেহাল অবস্থা কাটিয়ে উঠতে দিন রাত পরিশ্রম করেন। তার সময়ে মেহেরপুর জেলার অনেক স্কুলে পাকা ভবন নির্মিত হয়। বহুতল পলিটেকনিক ভবন, হাসপাতাল সহ মেহেরপুরের মরা ভৈরব নদী প্রান ফিরে পায়।
তিনি নিজে যেমন ক্ষমতার অপব্যবহার করেননি তেমনি মেহেরপুরে কোন সন্ত্রাস বা চাঁদাবাজি হতে দেননি। পিতার পরিচয়ে নয় তিনি তার নিজের যোগ্যতা বলেই সকলের প্রিয় হয়ে উঠেছেন। একজন নেতা হিসেবে দেশের প্রতি যে ধরণের ভালোবাসা ও মহত্তবোধ থাকা উচিৎ তা ফরহাদ হোসেন দোদুলের মধ্যে যে আছে তাতে কোন সন্দেহ নেই। মেহেরপুর তথা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে সহিউদ্দিন পরিবারের অবদান নিঃসন্দেহে অবিস্মরণীয়।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একজন দেশপ্রেমিক যোগ্য ব্যাক্তিকে মূল্যায়ন করায় আমরা মেহেরপুরের মানুষ তার প্রতি কৃতজ্ঞ। তিনি এমন একজন ব্যাক্তিকে জনপ্রশাসনের মতো গুরুত্বপূর্ণ আসনে আসীন করেছেন যিনি প্রকৃত অর্থে একজন সৎ এবং সজ্জন ব্যক্তি। যার আছে দেশের প্রতি কমিটমেন্ট।
আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি ফরহাদ হোসেন দোদুল দেশের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতে সক্ষম হবেন। মহান রাব্বুল আলামীনের কাছে প্রার্থনা তিনি যেন দোদুল ভাইকে তার দায়িত্ব পালনের তৌফিক দান করেন।
লেখক : শহিদুল ইসলাম শাহিন, লন্ডন প্রবাসী বাংলাদেশি