মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০১৯
প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ » সালাম দিয়ে বক্তব্য শুরু-শেষ করলেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী
সালাম দিয়ে বক্তব্য শুরু-শেষ করলেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী
ওয়েলিংটন, ১৯ মার্চ- নিউজিল্যান্ডে মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন কঠোর নিন্দা করেছিলেন। মুসলমানদের সাথে একাত্মতা জানিয়ে হিজাব পরেছিলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন এবার নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটিয়েছেন। পার্লামেন্টর অধিবেশন শুরু করা হয়েছে মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ আল কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে। তেমনি প্রধানমন্ত্রী নিজেও বক্তৃতা শুরু করেছেন মুসলিমদের বিশেষ অভিবাদন বাক্য সালাম দিয়ে। বক্তব্য শেষে বিদায়ও নেন সালামের মাধ্যমে।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) নিউজিল্যান্ডের পার্লামেন্টে বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়। তাতে প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন শুরুতেই স্পিকারকে লক্ষ্য করে সালাম দেন। তিনি বলেন, ‘মি. স্পিকার, আসসালামু আলাইকুম।’ এরপর তিনি ইংরেজিতে আবার সবার জন্য শান্তি কামনা করেন।
এরপর নিজ ভাষণে জেসিন্ডা বলেন, এ হামলাকারীকে আইনের সর্বোচ্চ সাজা ভোগ করতে হবে। নিউজিল্যান্ডের প্রচলিত আইনে সর্বোচ্চ সাজা তাকে দেয়া হবে। ওই সন্ত্রাসী তার কর্মকাণ্ডের পক্ষে অনেক কিছু ভাবতে পারে। কিন্তু সে আসলে কুখ্যাতি ছাড়া আর কিছুই পায়নি। তার এই জঘন্য কাজের জন্য আমি কখনোই তার নাম উচ্চারণ করব না।
জেসিন্ডা বলেন, সে একজন সন্ত্রাসী। সে একজন চরমপন্থী। তবে আমি যখনই তার ব্যাপারে কথা বলব, তখন তার নাম মুখে আনব না।’
হামলাকারীর ব্যাপারে জেসিন্ডা বলেন, যে ব্যক্তি এ হামলা চালিয়েছে সে এখানকার নয়। সে এখানে বেড়ে ওঠেনি। সে এখানে তার আদর্শ খুঁজে পায়নি। কিন্তু এখানেও যে তার মতো মতাদর্শের মানুষের বসবাস নেই, তা বলা যায় না।
মসজিদে এ সন্ত্রাসী হামলার পর সোমবার নিউজিল্যান্ডের মন্ত্রিসভা দেশটির অস্ত্র আইন সংশোধনে সায় দিয়েছে। দেশটির বর্তমান আইনের সুযোগ নিয়ে হামলাকারী ট্যারেন্ট একসঙ্গে একাধিক অস্ত্র কিনেছিল।
তিনি বলেন, গত শুক্রবার যা ঘটেছে তাতে সে দিনটি আমাদের ইতিহাসের অন্যতম কালো দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। কিন্তু নিহতদের পরিবারের জন্য এটি আরো অনেক বড় কিছু। শুক্রবার দিনটি মুসলমানদের জন্য বিশেষ একটি দিন। কিন্তু দিনটিতে তারা হারিয়েছে তাদের প্রিয়জনকে। তারা হারিয়েছে তাদের ভাই, বোন, পিতা ও সন্তানদের।
এ সময় তিনি হতাহতদের ব্যাপারে নিউজিল্যান্ডের দায়িত্ব-কতর্ব্য সম্পর্কেও কথা বলেন। তিনি বলেন, আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ ব্যাপারে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, এক জাতি হিসেবে আমরা কামনা করি, মুসলমানরা তাদের এই অন্ধকার সময় পেরিয়ে আসতে পারবে। তার জন্য আমরা সর্বপ্রকার সহায়তা দিব।
যে সব সাধারণ মুসল্লি ওই সন্ত্রাসীকে বাধা দিয়েছিল তাদের বীরত্বের কথাও উল্লেখ করেন জেসিন্ডা। তিনি বলেন, ওই সব মানুষ তাদের নিজেদের জীবনের ঝুঁকি সত্ত্বেও বন্দুকধারীকে ঠেকাতে গিয়েছিলেন। এ সময় তিনি ৭১ বছর বয়সী হাজী মোহাম্মদ দাউদ নবীর কথা উল্লেখ করে বলেন, ওই সন্ত্রাসী যখন মসজিদের কাছে এসেছিলেন, তখন দাউদ বলেছিলেন, হে ভাই! স্বাগতম। নিঃসন্দেহে এ ব্যাপারে তা কোনোই ধারণা ছিল না ওই ব্যক্তি সন্ত্রাসী হতে পারে। স্পিকারকে লক্ষ্য করে জেসিন্ডা বলেন, ২০০ নৃগোষ্ঠী ও ১৬০টি ভাষা নিয়ে আমরা এক জাতি। আমাদের দরজা সবসময়ই খোলা থাকে এবং বলা হয়- স্বাগতম।
দীর্ঘ বক্তব্য শেষ করার সময় তিনি আবারো সালাম দেন। বলেন, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ ওয়া বারাকাতুহু।