সোমবার, ২৫ মার্চ ২০১৯
প্রথম পাতা » » গণহত্যার বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের চেষ্টা করছে
গণহত্যার বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের চেষ্টা করছে
ঢাকা, ২৪ মার্চ- ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে সংঘটিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। রবিবার (২৫ মার্চ) পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মাদ শাহরিয়ার আলম নিজ কার্যালয়ে বলেন, ‘আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে, বাংলাদেশের গণহত্যার জাতিসংঘের স্বীকৃতি।’
তবে তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বলতে অনেকের ধারণা ছিল, জাতিসংঘের স্বীকৃতি। বিষয়টি তার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। কারণ, জাতিসংঘ ৯ ডিসেম্বরকে ‘আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। আমরা ন্যূনতম যেটি চাই, সেটি হলো পৃথিবীর যতটা সম্ভব বেশি রাষ্ট্র এই বিষয়টির স্বীকৃতি দেবে, এর সঙ্গে সহমর্মিতা জানাবে, নিন্দা জানাবে।’
শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘২০১৭ সালের মার্চে সংসদে বিষয়টি আসার পর থেকেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাজের অগ্রাধিকারে এটি আছে। গত দুই বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী যেসব দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় বৈঠক করেছেন, সেখানে এটি তুলেছেন। বিভিন্ন তথ্যউপাত্ত সংগ্রহ করে বিভিন্ন জায়গায় পাঠিয়েছি।’
এ বিষয়ে অগ্রগতি কতটা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা এমন করিনি যে ১৯৬টি রাষ্ট্র বা জাতিসংঘের সদস্য দেশকে এটা বলেছি। তবে টিক দেওয়ার তালিকায় অনেক রাষ্ট্রই এসেছে।’
তিনি জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার বক্তৃতায় স্পষ্ট করেই বলেছেন এবং পরবর্তীতে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকগুলোতে এটা এসেছে। এটার আন্তর্জাতিকীকরণ বা ৪৮ বছর পর সবার মাথায় আনার লক্ষ্যে অনেক সভা-সেমিনার করা, প্রকাশনার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কূটনীতিকদের ব্যর্থতায় গণহত্যার স্বীকৃতি আসেনি, এমন অভিযোগের ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তিনি বলেন, ‘সবাইকে নিয়মকানুন জানতে হবে। এটা তো একটা নতুন যাত্রা।’
শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘হয়তো সময় আসবে আমরা জাতিসংঘে একটা নতুন প্রস্তাব উত্থাপন করার চেষ্টা করতে পারি। এটা পাস হবে কি হবে না, সেটা আপনারা ভালোভাবে মূল্যায়ন করতে পারেন।’
তিনি বলেন, ‘নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী পাঁচ সদস্য দেশ আছে। সেই প্রেক্ষাপটে আমরা হঠাৎ করে প্রস্তাব উত্থাপন করে যথেষ্ট সমর্থন না পাওয়ার চেয়ে, এখন যেটা করছি, সেটা আগামী কয়েক বছর করবো। যত বেশি সম্ভব সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে এটার পক্ষে নেওয়া। সেই কাজগুলো করে যখন আমরা একটা পর্যায়ে পৌঁছাবো, তখন আমরা এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা অবশ্যই চিন্তা করবো।’
গণহত্যা স্বীকৃতি আদায়ের ক্ষেত্রে তথ্যউপাত্তের ঘাটতি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘অবশ্যই ঘাটতি ছিল। যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ আছে, মোটাদাগে বলতে পারি। গণহত্যার স্বীকৃতির জন্য যে পরিমাণ তথ্যউপাত্ত প্রয়োজন, সেটা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গঠনের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে অনেকগুলো সংগৃহীত হয়ে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের বিশেষ দূত আদামা দিয়েংয়ের উপস্থিতি অনেক কিছু বলে দেয়।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭১ সালের ইতিহাসের বিপরীত দিকে ছিলেন অনেক শক্তিধর রাষ্ট্র। ইতিবাচক দিক হচ্ছে, সেই রাষ্ট্রগুলো আমাদের সঙ্গে বৈঠকে স্বীকার করে নেয়, তারা ভুল পক্ষ নিয়েছিল ইতিহাসের।’ জট খুলতে বা প্রকাশ্যে আনতে সময় লাগবে। তবে বাংলাদেশ সঠিক পথেই আছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।