প্রধানমন্ত্রী থেরেসা পদত্যাগে রাজি
পক্ষকাল ডেস্ক- ব্রেক্সিট চুক্তিতে সমর্থনের বিনিময়ে পদ ছাড়তে রাজি হয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে সম্পর্কোচ্ছেদের পথরেখা তৈরির পরিকল্পনায় পার্লামেন্টে দুই দফা ভোটে হারের পর তৃতীয় দফা ভোটের আগে বুধবার রক্ষণশীল দলের এমপিদের এক বৈঠকে তিনি প্রতিশ্রুতি দেন বলে বিবিসি ও রয়টার্স জানিয়েছে।
টোরি দলের একজন পার্লামেন্ট সদস্য রয়টার্সকে বলেছেন, চুক্তিটি পাস হলে টেরিজা পদ ছেড়ে যাবেন। অর্থাৎ তিনি চুক্তি পাস হওয়ার পর আর দায়িত্বে থাকবেন না।
টোরি দলের আরেক পার্লামেন্ট সদস্য বলেছেন, পদত্যাগের কোনো দিনক্ষণ টেরিজা মে জানাননি, তবে তিনি ‘যথা শিগগিরই’ দায়িত্ব ছাড়বেন।
রক্ষণশীল দলের আরেক পার্লামেন্ট সদস্য জানিয়েছেন, বৈঠকে মে বলেছেন, ব্রেক্সিটের পরবর্তী পর্যায়ের আলোচনার দায়িত্ব উত্তরসূরির হাতেই দিতে যাচ্ছেন টেরিজা।
গত তিন বছর ধরে চলা ব্রেক্সিট নাটকীয়তায় মে’র এই সিদ্ধান্ত নতুন মাত্রা দিলেও কবে, কীভাবে ইইউর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্কোচ্ছেদ হবে, তা এখনও স্পষ্ট হয়নি।
২০১৬ সালের ২৩ জুন যুক্তরাজ্যে এক গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে দেশটির চার দশকের সম্পর্কোচ্ছেদের রায় হয়।
পৌনে দুই কোটি ভোটারের ৫২ শতাংশ ভোট দিয়েছিল ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে; তাদের কথা ছিল, ইইউর অন্য দেশগুলোকে টানতে গিয়ে তাদের পাউন্ড খরচ হয়ে যাচ্ছে।
অন্যদিকে ৪৮ শতাংশের ভোট ছিল ইউরোপের আরও ২৭টি দেশের জোটে থেকে যাওয়ার। ওই ভোটে হারের পর তারা পুনরায় গণভোটের দাবিও তুলেছিল, তবে তা ঘটেনি।
ওই গণভোট ছিল সম্পর্ক ছিন্নের আনুষ্ঠানিকতার শুরু। ভোটে হারের পর রক্ষণশীল দলের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন পদত্যাগ করলে টেরিজা মে সেই দায়িত্ব নিয়ে বিচ্ছিন্নতার পথরেখা তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করেন।
এজন্য সময় বেঁধে দেওয়া ছিল চলতি বছরের ২৯ মার্চ। কিন্তু তার মধ্যে নিজের দেশের পার্লামেন্টে কোনো রূপরেখা পাস করাতে না পারার পর ইতোমধ্যে ইইউর কাছ থেকে ওই সময়সীমা ১২ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়িয়ে নিয়েছেন মে।
নিজ দলের সদস্যদের সবার সমর্থন না পাওয়ায় বিচ্ছেদের দুটি রূপরেখা পরপর পার্লামেন্টে নাকচ হয়ে যাওয়ার পর গত জানুয়ারিতে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটের মুখেও পড়েছিলেন মে।
তাতে কোনো মতে উৎরে গেলেও এখন একটি চুক্তি পাসের জন্য ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট ছাড়তে হচ্ছে তাকে।
মে প্রধানমন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেবেন এমন প্রতিশ্রুতি দিলে ব্রেক্সিট চুক্তি পাসে প্রয়োজনীয় সমর্থন পেতে পারেন বলে ক্ষমতাসীন টোরি দলের নেতারা আগেই বলে আসছিলেন।