স্যাটেলাইট আছে ২২ তলায় পৌঁছানোর মই নেই কেন?
পক্ষকাল ডেস্ক - প্রশ্নবিদ্ধ রাজধানীর সুউচ্চ বহুতল ভবনে অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পাশাপাশি রাজধানীর অধিকাংশ ভবন, অভিজাত শপিংমল কিংবা গার্মেন্টসের নিজস্ব অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়েও ব্যাপক প্রশ্ন রয়েছে। ফলে শুধু পুরান ঢাকা নয়, নতুন ঢাকায় আগুনও যে কোনো সময় ব্যাপক প্রাণহাণি ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বনানীর এফ আর টাওয়ারে আগুন লাগার ঘটনায় বিষয়টি আবারো সামনে চলে এসেছে। বহুতল ভবনে আগুন লাগলে তা নেভানোর সক্ষমতা ফায়ার সার্ভিসের নেই। নেই পর্যাপ্ত উদ্ধার সরঞ্জাম- এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
এ নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। অনেকেই বলছেন, কোথাও আগুনে একটু বেশি ক্ষয়ক্ষতি হলেই আমরা ফায়ার সার্ভিসকে গালাগাল করি। তারা আসতে দেরি করেছে, তাদের কাছে পানি নেই, তারা আন্তরিক ছিল না ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু আমরা বলি না ফায়ার সার্ভিসের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। এনটিভি ভবনে আগুন লাগার পর উঁচু মইয়ের অভাব নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। তারপর কেনাও হয়েছে। কিন্তু এখনও বাংলাদেশে সর্বোচ্চ মই ১৪ তলা উঁচু। এফ আর টাওয়ারের সপ্তম তলায় আগুন না লেগে যদি ২০ তলায় লাগতো; তাহলে তো ফায়ার ফাইটারদেরও উৎসুক জনতার মত চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া কিছু করার থাকতো না। উঁচু মই থাকলে এফ আর টাওয়ার থেকে আরো দ্রুত আরো বেশি মানুষকে উদ্ধার করা সম্ভব হতো।
ফয়সাল মাহমুদ নীল নামে একজন স্ট্যাটাস দিয়েছেন, মহাকাশে বাংলাদেশের স্যাটেলাইট আছে,কিন্তু ২২ তলায় পৌছানোর জন্য ফায়ার সার্ভিসের কোন মই নাই।
আসিফ এন্তাজ রবি লিখেছেন, স্যাটেলাইট যখন কেনা হয়, তখন প্রশ্ন করছিলেন, এই দেশে পর্যাপ্ত এম্বুলেন্স নাই, আগুন নিভানোর ব্যবস্থা নাই, হাসপাতাল নাই, এইসব বাদ দিয়া স্যাটেলাইট কেন? প্রশ্ন করেন নাই। বরং তখন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে উল্লাস করছিলেন।
যখন সাবমেরিন কেনা হয়, তখন প্রশ্ন করছিলেন, এই দেশে একটা লঞ্চ ডুবলে শয়ে শয়ে মানুষ মরে, সেটা বন্ধ না করে- সাবমেরিন কেন? তখনও প্রশ্ন করেন নাই। বরং ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে উল্লাস করছিলেন।
আপনার বলদামি কিন্তু এখানেই থামবে না। আপনি বরং এই অগ্নিকান্ডের মধ্যে নতুন ন্যারেটিভ খুঁজে পাবেন। যেমন, অগ্নিকান্ডের সময় এত মানুষ কেন- এটা নিয়ে আপনি শয়ে শয়ে স্ট্যাটাস দেবেন, কিন্তু আসল কথা বলবেন না। কেন মিলিয়ন ডলার খরচ করে সাবমেরিন কেনা হয়, স্যাটেলাইট উড়ানো হয়, কেন লাখ টাকা খরচ করে ফায়ার বিগ্রেড আধুনিকায়ক করা হয় না, কেন গ্রামে এম্বুলেন্স যায় না- এইসব কথা আপনার মাথায় আসবে না।
আপনি বাস করবেন নরকের আগুনের ভেতর। পুড়তে পুড়তে বলবেন, আমাদের দেশটা একদম সিঙ্গা”পুড়” হয়ে গেছে। আপনার পাশে পুড়ে ঝলসে যাওয়া আরেকটি মানুষ মরার আগে শেষ বাক্য হিসেবে বলবে, সহমত ভাই, সহমত।
সিদ্দিক মোল্লা নামে একজন লিখেছে, ৩ হাজার কোটি টাকা খরচ করে স্যাটেলাইট বসানো যায়, অথচ ২২ তলা ভবনে আগুন লাগলো। আগুন নিভানোর জন্য একটা মই জুটলো না।