শিরোনাম:
ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ন ১৪৩১

Daily Pokkhokal
বৃহস্পতিবার, ১১ এপ্রিল ২০১৯
প্রথম পাতা » অর্থনীতি | ব্যাংক-বীমা » ব্যাংকগুলোতে ‘ডাকাতি’ করা হচ্ছে : বাণিজ্যমন্ত্রী
প্রথম পাতা » অর্থনীতি | ব্যাংক-বীমা » ব্যাংকগুলোতে ‘ডাকাতি’ করা হচ্ছে : বাণিজ্যমন্ত্রী
৪৯০ বার পঠিত
বৃহস্পতিবার, ১১ এপ্রিল ২০১৯
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

ব্যাংকগুলোতে ‘ডাকাতি’ করা হচ্ছে : বাণিজ্যমন্ত্রী

পক্ষকাল ডেস্দেসদেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ঋণ ও আমানতের সুদের পার্থক্য ৫ শতাংশের বেশি হওয়াকে ‘ডাকাতি’ বলে অভিহিত করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

ব্যাংক ঋণে সুদের হার এক অঙ্কে নামিয়ে আনতে আহ্বান এবং সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশনার মধ্যে বৃহস্পতিবার ঢাকায় এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।
রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে ‘ভোক্তা অধিকার শক্তিশালীকরণ’ শীর্ষক সেমিনারটি আয়োজন করে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।

সেমিনারে ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাণিজ্য সচিব মো. মফিজুল ইসলাম, জাতীয় ভোক্তা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম লস্কর, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহফুজুল হক ও ক্যাবের সহসভাপতি এসএম নাজের হোসেইন।

টিপু মুনশি বলেন, ‘যে টাকা তারা (ব্যাংক) সুদ দেয় জনগণকে এবং যে টাকা তারা সুদ নেয়, এই ডিফারেন্সটা পৃথিবীর কোথাও ২ শতাংশ বা ৩ শতাংশের বেশি না। বাংলাদেশেই একমাত্র যেখানে ৫ শতাংশের ওপরে এই ডিফারেন্স। এটা রীতিমতো ডাকাতি।’

ব্যাংক ঋণে উচ্চ সুদহার নিয়ে ব্যবসায়ীরা অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছেন। তারা বলছেন, এতে বিনিয়োগ ব্যাহত হচ্ছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী সুদের হার এক অঙ্কে নামিয়ে আনতে বলেন। তৈরি পোশাক ব্যবসায়ী টিপু মুনশি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পরও ব্যাংকগুলো তা মানছে না।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষের ডিপোজিটের অ্যাগেনেস্টে কত টাকা তারা পে করছে আর কত টাকা তারা নিচ্ছে, এটা একটা সিস্টেমে আনা দরকার। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী বারবার নির্দেশনা দিচ্ছেন, সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনা হোক।’ সুদের হার কমলে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি হলে তাতে সাধারণ মানুষই উপকৃত হবে।

পণ্য কেনার আগে মানুষকে সচেতন করার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি যা কিনছি, সেই বিষয়ে আমার জানতে হবে, আমি যা কিনছি, সেই পণ্যের দাম কত এবং তা মেনটেইন করতে হবে।’

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভোক্তার অধিকারের বিষয় পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত করা হলে সচেতনতা বাড়বে। সবাই শুরু থেকেই তাদের অধিকার সম্পর্কে জানবে, শিখবে। বাস্তব জীবনে এসে এগুলো কাজে লাগাতে পারবে। এতে জাতি উপকৃত হবে, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রচেষ্টা চালানো হবে। ভোক্তারা তাদের অধিকারের বিষয়ে যত বেশি সচেতন হবে, তত বেশি ফল পাওয়া যাবে। ভোক্তাদের সচেতন করতে প্রচারণা চালানো হচ্ছে, এতে ভালো ফল পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া বিদেশে বিভিন্ন পণ্যের প্যাকেটে উপাদানের যেসব গুণাবলির কথা উল্লেখ থাকে, পণ্যের মধ্যেও ঠিক তা-ই থাকে। কিন্তু বাংলাদেশে এর বাস্তবায়ন এখনও অনেক পিছিয়ে আছি।’

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ব্যবসার দিকে যেমন লক্ষ রাখতে হবে, তেমনি ভোক্তাদের অধিকারও সংরক্ষণ করতে হবে। ‘ব্যবসার পরিবেশ ভালো না থাকলে ভোক্তাদের কেনার সামর্থ্য থাকবে না। অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল থাকতে হবে। আমার যদি একটি টাকাও না থাকে, তাহলে আমি কীভাবে কিনব? তাই আমাদের মানুষের আয় বাড়াতে হবে, যাতে তাদের কেনার সামর্থ্য বাড়ে।’

ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ‘ব্যাংকগুলোয় যখন গ্রাহকরা টাকা রাখে, তখন তার সুদহার কম। যখন টাকা ঋণ নিতে যায়, তখন সুদহার বেশি। অথচ ব্যাংকগুলো চলছেই গ্রাহকের আমনত দিয়ে। ব্যাংকে মালিকদের টাকার পরিমাণ খুবই সামান্য। এখানে ভোক্তার অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। বিষয়টা সরকারের দেখা উচিত।

তিনি আরও বলেন, ‘ব্যাংক খাতে অব্যবস্থাপনার কারণে ঋণখেলাপির পরিমাণ বেড়ে যায়। এতে ব্যাংকে যারা টাকা জমা করে, তারা সুফল পাচ্ছে না। আবার ব্যাংকগুলো বেশি হারে ভোক্তাদের কাছ থেকে সুদ আদায় করে। এ বৈষম্য দূর করতে হবে।’

ভোক্তাদের স্বার্থে নতুন যেসব আইন প্রণয়ন হয়েছে, সেগুলো কার্যকরে যেসব প্রতিষ্ঠানকে সরকার দায়িত্ব দিয়েছে, সেগুলো শক্তিশালী নয় বলে দাবি করেন সাবেক এই সচিব।

ভোক্তাদের ‘পকেট কাটার’ বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। জাতীয় বাজেটে ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণ নিশ্চিতের আহ্বানও জানান তিনি।

খাদ্যপণ্যে ভেজালের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বাণিজ্য সচিব মো. মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘বাজারে একটি বেগুনও পাওয়া যাবে না যে তাতে ফরমালিন বা কীটনাশক দেয়া হয়নি। এ সমস্যা দূর করতে সবার সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন।’

তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু ব্যবসায়ী আছে এমন কাজ করছে, যা মানুষকে হত্যা করার মতো। এ জায়গায় আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে।’



আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)