বৃহস্পতিবার, ৮ জানুয়ারী ২০১৫
প্রথম পাতা » অর্থনীতি » আনন্দ শিপইয়ার্ডের ঋণ জালিয়াতি, এবি ব্যাংকের ১০ কর্মকর্তাকে দুদকে তলব
আনন্দ শিপইয়ার্ডের ঋণ জালিয়াতি, এবি ব্যাংকের ১০ কর্মকর্তাকে দুদকে তলব
পক্ষকাল প্রতিবেদক :
আনন্দ শিপইয়ার্ডের ১৩শ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতির অভিযোগ অনুসন্ধানে আরব বাংলাদেশ (এবি) ব্যাংকের ১০ কর্মকর্তাকে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার দুদকের সিনিয়র উপ-পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলী তাদের তলব করে নোটিস দেন। এতে আগামী ১৩ জানুয়ারি সকাল ১০টায় তাদের দুদকের প্রধান কার্যালয়ে উপস্থিত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই ১০ ব্যাংক কর্মকর্তারা হলেন- এবি ব্যাংকের প্রধান শাখার উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিএমডি) ফারুক এম আহমেদ, একই শাখার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (এসভিপি) ওয়াসিকা আফরোজী, সালমা আক্তার, ভাইস প্রেসিডেন্ট (ভিপি) শামীম এ মোর্শেদ, এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট (ইভিপি) আখতার হামিদ খান, মঞ্জুর মফিজ, ব্যাংকের কারওয়ান বাজার শাখার ইভিপি চৌধুরী মঞ্জুর লিয়াকত, মাহবুবুজ্জামান, এসএভিপি কাজী আশরাফ আলী ও এভিপি মো. আল মামুন।
দুদক সূত্র জানায়, আনন্দ শিপইয়ার্ড ঋণের নামে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, এবি ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক ও ওয়ান ব্যাংক থেকে এবং আইডিএলসি ফাইনান্স, ফারইস্ট ফাইনান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড (এফএফআইএল), প্রিমিয়ার লিজিং অ্যান্ড ফাইনান্স লিমিটেড (পিএলএফএল), বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইনান্স কোম্পানি লিমিটেড (বিআইএফসিএল), ফিনিক্স ফাইনান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড (পিএফআইএল), ন্যাশানাল হাউজিং ফাইনান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড (এনএইচএফআইএল), হজ ফাইনান্স কোম্পানি লিমিটেডসহ (এইচএফসিএল) ৭টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা জালিয়াতি করে। বিয়য়টি কেন্দ্রিয় ব্যাংকের তদন্তে বেরিয়ে আসলে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।
দুদক সূত্র আরও জানায়, এসব ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে আনন্দ শিপইয়ার্ড, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর যোগসাজশ ছিল। জাহাজ নির্মাণের পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকলেও জেনে শুনেই ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ করা হয়েছে। নানা অনিয়মের পাশাপাশি অনেক ক্ষেত্রে জামানত ছাড়াই ঋণ দেওয়া হয়েছে। তাই সব নথিপত্র পাওয়ার পরই যাচাই বাছাই করে আনন্দ শিপইয়ার্ডের চেয়ারম্যান, এমডি, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ প্রক্রিয়া শুরু হয়।
এ ঋণ জালিয়াতির বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিসেস বিভাগের তদন্ত প্রতিবেদন উল্লেখ করে দুদক সূত্র জানায়, ব্যাংকগুলোর মধ্যে ইসলামী ব্যাংকের কারওয়ান বাজার শাখা থেকে ৪৫৬ কোটি ৩৪ লাখ, এবি ব্যাংকের কারওয়ান বাজার শাখা থেকে ১৮৬ কোটি ৯০ লাখ, ওয়ান ব্যাংকের মতিঝিল শাখা থেকে ১১৪ কোটি ২১ লাখ, জনতা ব্যাংকের স্থানীয় শাখা থেকে ২৩৮ কোটি ৮ লাখ, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন শাখা থেকে ২২১ কোটি ২০ লাখ, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (বিডিবিএল) প্রধান শাখা থেকে ২৩ কোটি ৯৪ লাখ টাকা এবং এনসিসি ব্যাংক থেকে ১৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছে ওই জাহাজ রফতানি প্রতিষ্ঠানটি।
আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ফিনিক্স ফাইনান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে ২৩ কোটি ১৮ লাখ, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইনান্স কোম্পানি লিমিটেড (বিআইএফসিএল) থেকে ১ কোটি ৯৪ লাখ, আইডিএলসি ফাইনান্স অ্যান্ড লিজিং কোম্পানি থেকে ৩ কোটি ৭২ লাখ, প্রিমিয়ার লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স লিমিটেড (পিএলএফএল) থেকে ৩ কোটি এবং ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড (এনএইচএফআইএল) থেকে ২ কোটি ৯৩ লাখ টাকার ঋণ নেওয়া হয়েছে।