রাজনৈতিক অস্থিরতায় বিজিএমইএ’র উদ্বেগ
পক্ষকাল প্রতিবেদক: চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় রপ্তানিমুখী তৈরী পোশাক শিল্পে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। গত ৯ দিনের মধ্যে ২ দিন হরতাল পালন এবং গত ৬ জানুয়ারী থেকে টানা অবরোধ কর্মসূচীতে উদ্যোক্তাদের মধ্যে গভীর হতাশার সৃষ্টি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তৈরি পোশাক শিল্প মালিক ও রপ্তারিকারকদেও সংগঠন বিজিএমইএ।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জাতীয় অর্থনীতি, বিশেষ করে পোশাক শিল্পের স্বার্থে রাজনৈতিক কর্মসূচীর নামে হরতাল, অবরোধ পরিহার করে বিকল্প পন্থা খুঁজে বের করার জন্য বিজিএমইএ রাজনৈতিক দলগুলোকে বিনীতভাবে অনুরোধ জানিয়েছে। পোশাক শিল্পকে হরতালমুক্ত রাখায় রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে বিজিএমইএ কৃতজ্ঞ প্রকাশ করেছে।
একইভাবে, তৈরি পোশাক শিল্প এবং পোশাক শিল্পের সকল আমদানি ও রপ্তানি পণ্যকে অবরোধমুক্ত রাখার জন্য বিজিএমইএ রাজনৈতিক দলগুলোকে অনুরোধ জানাচ্ছে।
বিশেষ করে যে কোন রাজনৈতিক কর্মসূচী চলাকালে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহা-সড়ক এবং ঢাকা-বেনাপোল মহাসড়ক যাতে নির্বিঘœ রেখে পোশাক শিল্পের সরবরাহ লাইন অব্যাহত রাখা হয়, সে ব্যাপারে বিজিএমইএ রাজনৈতিক দলগুলোকে অনুরোধ জানিয়েছে।
বিজিএমইএ মনে করে, তৈরি পোশাক শিল্প এখন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময় অতিক্রম করছে। রানা প্লাজা ধসের পর কারখানাগুলো কর্মপরিবেশ এর উন্নয়নে সংস্কার কাজ করে যাচ্ছে। একটি ইতিবাচক বার্তা ক্রেতাদের কাছে পৌঁছুছে। ফলশ্রুতিতে, বাংলাদেশের রপ্তানীকারকদের উপর ক্রেতাদের আস্থা পুনরায় বাড়ছে এবং কারখানাগুলোও বিগত দিনগুলোর তুলনায় বেশি বেশি রপ্তানি অর্ডার পাওয়া শুরু করেছে।
এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলতে থাকলে আবারও ক্রেতাদের মধ্যে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হবে এবং তারা বাংলাদেশে আসতে নিরুৎসাহিত হবেন। যদিও পোশাক শিল্প হরতালের আওতামুক্ত, তবে এ শিল্পে বাস্তবতা হচ্ছে যে, একটি অর্ডার সম্পন্ন করতে হলে সহযোগী বিভিন্ন শিল্প-প্রতিষ্ঠান যেমন, বস্ত্র কারখানা, এক্সেসরিজ, ওয়াশিং, ডাইং, প্রিণ্টিং, প্যাকেজিং প্রভৃতির সাথে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রক্ষা করতে হয়।
তাই যেকোন সামান্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী কার্যক্রমই এ শিল্পের স্বাভাবিক কার্যক্রমকে বিঘিœত করে, সাপ্লাই চেইন ব্যাহত হয়।
উল্লেখ্য, এক দিনের হরতালে পোশাক শিল্পে প্রায় ২৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়, উৎপাদন প্রায় ৩০-৩৫ শতাংশ হ্রাস পায়। এক ঘন্টা বিলম্বের জন্য যদি তৈরি পোশাক জাহাজীকরণ করা সম্ভব না হয়, সেক্ষেত্রে রপ্তানী কার্যক্রমে অতিরিক্ত ঝুঁকি বাড়ে।