মঙ্গলবার, ৪ জুন ২০১৯
প্রথম পাতা » বিশ্ব সংবাদ | ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » তৃণমূল থেকে বাঁচতে বিজেপি ছাড়া বিকল্প ছিল না মানুষের, বিস্ফোরক সীতারাম
তৃণমূল থেকে বাঁচতে বিজেপি ছাড়া বিকল্প ছিল না মানুষের, বিস্ফোরক সীতারাম
ডেস্ক পক্ষকাল : তৃণমূলের থেকে বাঁচতে মানুষ বিকল্প পথের সন্ধান করেছিল। সেই কারণেই বিজেপিকে ভোট দিয়েছে বাংলার জনতা। সাফ জানালেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি।
ইয়েচুরির ইঙ্গিত, তৃণমূলের হাত থেকে বাঁচতে বাংলার মানুষের একমাত্র পথ ছিল বিজপিকেই বেছে নেওয়া। সেক্ষেত্রে তার পরিষ্কার যুক্তি, ২০১৬ সালে বামফ্রন্ট-কংগ্রেস আসন সমঝোতা করেছিল। সাধারণ মানুষের কাছে বিকল্প রাস্তা তৈরি হয়েছিল। ফলস্বরূপ, ভোট কমে গিয়েছিল বিজেপির। কিন্তু , ২০১৯ সালে সেই ঘটনা ঘটেনি।
সাধারণ মানুষকে বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস বিকল্প রাস্তা দিতে পারেনি। উপরন্তু, ধর্মীয় মেরুকরণে ভোট ভাগাভাগি হয়ে যায় বিজেপি-তৃণমূলে। সেই, কারণেই লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, বিজেপি-তৃণমূল শতাংশের হারে কাছাকাছি ভোট পেয়েছে – লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল কে এভাবেই ব্যাখ্যা করেছেন সীতারাম।
নির্বাচন পরবর্তী পর্যবেক্ষণে যে সিপিএম সেরা মঙ্গলবার তা আবার প্রমাণ করেছেন সীতারাম। ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচন থেকে ২০১৯ সালের লোকসভা পর্যন্ত ফলাফল খুঁটিয়ে দেখলে করলে সীতারামের বক্তব্যের ব্যাখ্যা পাওয়া যাবে। ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি রাজ্যে ৬.১৪ শতাংশ ভোট পেয়েছিল।
২০০৯ সালে এ রাজ্য তখন বামদূর্গ । কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান বিরোধী শক্তি হিসেবে উঠে আসছে। ঠিক এক বছর আগে হয়ে যাওয়া পঞ্চায়েত নির্বাচনে একাধিক জেলা পরিষদ দখল করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১১ এলে রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে ক্ষমতা হারায় বামফ্রন্ট। ওই পালাবদলের নির্বাচনেও ১০.০২ শতাংশ ভোটে পেয়েছিল বিজেপি। বিজেপির ভোট বৃদ্ধির কারণ হিসাবে অবামপন্থী শক্তি তৃণমূলের বৃদ্ধিকেই অনেকাংশে দ্যাক্সিই করে রাজনৈতিক মহল। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় ১৭.০২ শতাংশ ভোট পায় বিজেপি।
লোকসভায় দুটি আসন রাজ্য থেকে আসে। সারা দেশে প্রবল মোদী হওয়ায় রাজ্যে বিজেপির ভীত বাড়লেও তৃণমূল ৩৪ আসন রাজ্যে দখল করে নিয়েছিল। কংগ্রেসের ৪টি এবং বামফ্রন্ট ২ টি আসন পায়। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় একটি বিকল্প শক্তি হিসাবে উঠে আসে বিজেপি। এই প্রথম রাজ্যের বিধানসভায় বিজেপি ৩ বিধায়ক পাঠাতে সক্ষম হয়। কিন্তু পরিসংখ্যায় বলছে ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের থেকে শতাংশের বিচারে ভোট কমে গিয়েছে বিজেপির। বিজেপি পায় ১২.২৫ শতাংশ।
সিপিএমের সাধারণ সম্পাদকের মতে “২০১৬ সালে বিজেপির ভোট বাড়েনি কারণ পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট-কংগ্রেস আসন সমঝোতা করতে পেরেছিল।” মানুষ তৃণমূলের বিরুধ্যে ভোট দেওয়ার একটি বিকল্প পথ পেয়েছিল ২০১৬ তে, সেটা মানেন কংগ্রেস এবং বামপন্থীরাও। সারা দেশ জুড়ে প্রবল মোদী-ঝড়ও বাংলায় বিজেপির ভোট বাড়াতে পারেনি। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বামফ্রন্ট ২৫.৬৯ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। বাম ফ্রন্টের প্রধান শরিক সিপিএম পেয়েছিল ১৯.৭৫ শতাংশ ভোট। সেই ভোট ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে নেমে প্রায় ১৪-১৫ শতাংশে এসে দাঁড়ায়। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর দেখা গিয়েছে বামফ্রন্ট ৭.২৫ শতাংশ ভোটেই আটকে পড়েছে। জোটেনি একটিও লোকসভা আসন।
উল্লেখযোগ্য পরিসংখ্যান, ২০১৬ বিধানসভা এবং ২০১৯ লোকসভা – দুটি ক্ষেত্রেই বামেদের থেকে কংগ্রেসের ভোট কমেছে। কিন্তু, কংগ্রেস নিজের গড়ে আসন ধরে রাখতে সমর্থ হয়েছে। ২০১৬ সালে বিরোধী দলের তকমা হারায় বামেরা। রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রই পরাজিত হন। ২০১৯ সালেও কংগ্রেস নিজেদের গড় মালদহ দক্ষিণ এবং বহরমপুর ধরে রাখতে সমর্থ হলেও বামেরা রায়গুঞ্জ এবং মুর্শিদাবাদ হারিয়েছে।সীতারামের মতে , আসন সমঝোতা কেন হলো না তা তার জানা নেই, – “কংগ্রেসই বলতে পারবে।”