শুক্রবার, ৫ জুলাই ২০১৯
প্রথম পাতা » বিশ্ব সংবাদ | ব্রেকিং নিউজ » রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সহায়তা করবে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সহায়তা করবে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি
পক্ষকাল ডেস্ক-
কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়না (সিপিসি) সমঝোতার ভিত্তিতে দীর্ঘদিনের রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সুচি ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করবে বলে আশ্বাস দিয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে দিয়াওউনতাই রাষ্ট্রীয় গেস্টহাউসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে সিপিসির নেতা প্রভাবশালী নেতা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী সং তাও এ আশ্বাস দেন। খবর বাসসের।
সং তাও বলেন, ‘সমঝোতার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে আমরা অং সান সুচিসহ মিয়ানমারের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করব।’
বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সভায় যোগদান এবং চীনের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করার জন্য প্রধানমন্ত্রী ৫ দিনের সরকারি সফরে এখন চীনে অবস্থান করছেন। সিপিসি নেতার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ শেষে লেখক মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফিং করেন।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে ব্যাপক উন্নয়নের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে সং তাও আরও আশ্বস্ত করেন যে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় চীনের সমর্থন অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, ‘দু’দেশের মধ্যে বর্তমানে অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজ করছে এবং বাংলাদেশে উন্নয়ন অভিযাত্রায় আমরা আমাদের সমর্থন অব্যাহত রাখব।’
সিপিসি নেতা বাংলাদেশের অত্যন্ত বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের উল্লেখ করে এতে ‘বিশ্বে দুর্লভ’ বলে বর্ণনা করেন। এর জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিগত অর্থবছরে ৮ দশমিক ১ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। অপরদিকে চলতি অর্থবছরে ৮ দশমিক ২ শতাংশ জিডিপি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
সিপিসি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মধ্যকার সম্পর্ক আরও গভীর হবে বলে সং তাও আশা প্রকাশ করেন।
কেবলমাত্র উচ্চপর্যায়ে নয়, বিভিন্ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি দল চীন সফর করবে বলে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘এই সফরের মাধ্যমে দু’টি দলের মধ্যকার বন্ধন আরও দৃঢ় হবে।’ এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শিগগিরই সিপিসির একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করবে।
বৈঠকের শুরুতেই সিপিসি নেতা চীন সফরের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
চীনকে বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও সিপিপি’র মধ্যে গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান। তিনি ১৯৯৩ সালে বিরোধী দলের নেতা হিসেবে চীনে তার প্রথম সফর স্মরণ করে বলেন, সফরের পর থেকেই উভয় পক্ষের মধ্যে সম্পর্কের ভিত্তি মজবুত হয়।
তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় চেষ্টা করব যাতে আমাদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক বজায় থাকে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও চীন উভয়ের লক্ষ্য এক দারিদ্র্য বিমোচন এবং জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণ করা।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার লক্ষ্য অর্জনে অপ্রত্যাশিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’
বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা, ১৯৫২ ও ১৯৫৭ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চীন সফরের কথা স্মরণ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু তার ভ্রমণের কথায় ভবিষ্যতে একটি ‘নতুন চীন’ তৈরি হচ্ছে বলে উল্লেখ করেছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন আমি সেটাই দেখছি বঙ্গবন্ধু ভ্রমণের পর যে পূর্বাভাস দিয়েছিলেন।’
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি এখন বঙ্গবন্ধুর ডায়েরি থেকে ‘নিউ চীন’ নামে একটি বই সম্পাদনা করছেন। তিনি বলেন, ‘চীন নিয়ে বঙ্গবন্ধুর ভবিষ্যদ্বাণী সংবলিত বইটি শিগগিরই প্রকাশিত হবে।’
সিপিপি নেতা এই বইটি চীনা ভাষাতে অনুবাদ করার আগ্রহ প্রকাশ করে বলেন, তারা প্রকাশ করার পর চীনা জনগণের মধ্যে বইটি বিতরণ করবে।
প্রধানমন্ত্রী গণপ্রজাতন্ত্রী চীন এর ৭০ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে চীনা জনগণ ও চীনা কমিউনিস্ট পার্টিকে তার আন্তরিক অভিনন্দন জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ ও শিল্প বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান, পররাষ্ট্রসচিব মো. শহিদুল হক ও চীনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম ফজলুল করিম অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।