শনিবার, ২০ জুলাই ২০১৯
প্রথম পাতা » অর্থনীতি | তথ্য-প্রযুক্তি » দৈনিক নিঃসরিত ৩৫০০ টন বর্জ্যে উৎপাদিত হবে বিদ্যুৎ- সার
দৈনিক নিঃসরিত ৩৫০০ টন বর্জ্যে উৎপাদিত হবে বিদ্যুৎ- সার
পক্ষকাল সংবাদ-
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় দৈনিক তিন হাজার ৫০০ টন বর্জ্য নিঃসরণ হচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে এই বর্জ্য ব্যবহার করে বিদ্যুৎ ও জৈব সার উৎপাদনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ডিএসসিসির মাতুয়াইলে ৮১ দশমিক ১০ একর জমিতে বর্জ্য থেকে বিদু্যৎ, সার, রিফিউজড ডিরাইভড ফুয়েল (আরডিএফ) উৎপাদনের পস্ন্যান্ট তৈরি করবে সরকার। নতুন স্থানে দ্রম্নত সময় প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। এতে এমব্যাংকমেন্ট, গ্যাস নির্গমন পাইপ, কৃত্রিম লাইনও থাকবে। ডিএসসিসি সূত্র জানায়, মাতুয়াইলে স্তূপকৃত বর্জ্য সমতলে আনার জন্যও প্রয়োজনীয় হেভি ইকু্যপমেন্ট ও যানবাহন সংগ্রহ করা হবে। ফ্লাডলাইট ও ক্যাবল কারসহ অন্যান্য ইকু্যপমেন্ট সংগ্রহ করা হবে। বর্জ্য থেকে পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদনে বসবে ইনসিনারেটর পস্ন্যান্ট। আর এই পস্ন্যান্ট থেকে দৈনিক ৩০-৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হবে বলে জানায় ডিএসসিসি। ‘মাতুয়াইলে স্যানিটারি ল্যান্ডফিল সম্প্রসারণসহ ভূমি উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় এই উদ্যোগ নেয়া হবে। মোট এক হাজার ৩১৬ কোটি ৪৩ লাখ ৪৬ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। ইতোমধ্যেই প্রকল্পের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। ২০২১ সালের জুন মাসে ইনসিনারেটর পস্ন্যান্ট স্থাপনের মাধ্যমে দৈনিক ৩৫ মেগাওয়াট বিদু্যৎ উৎপাদিত হবে। প্রথমে বিদু্যৎ উৎপাদিত হলেও পর্যায়ক্রমে সারসহ অন্যান্য পণ্য উৎপাদিত হবে বর্জ্য থেকে। রাজধানীতে প্রতিদিনের এই বর্জ্য বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হবে। এর মধ্যে প্লাস্টিক, কাচ, সিসা, রং, লোহা, ব্রোঞ্জসহ প্রত্যেকটি বর্জ্য আলাদা করা হবে। বর্জ্য ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ইতোমধ্যেই মালয়েশিয়া, চীন, কোরিয়া, আমেরিকা, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সংস্থার কাছে প্রস্তাবও পাঠানো হয়েছে। উন্নয়ন সহযোগীরা বর্জ্যের ধরন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেই বাংলাদেশে বিনিয়োগ করবে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমোডর মো. জাহিদ হোসেন বলেন, বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এ জন্য মাতুয়াইলে ৮১ দশমিক ১০ একর জমি অধিগ্রহণ করব। ইনসিনারেটর পস্ন্যান্ট স্থাপনের মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যায়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করব। পর্যায়ক্রমে বর্জ্য ব্যবহার করে অন্যান্য পণ্য উৎপাদন করা হবে। ডিএসসিসিতে দৈনিক ৩ হাজার ৫০০ টন বর্জ্য উৎপাদিত হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে, এটা ব্যবহার করে ৩০-৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া সম্ভব হবে। তবে বর্জ্যের কোয়ালিটির ওপর সব কিছু নির্ভর করছে।’ বর্জ্য পোড়ানোর ক্ষেত্রে ‘মাস ভলিউম রিডাকশন’-এর জন্য বর্জ্য পোড়ানো সবচেয়ে বেশি কার্যকর। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বর্জ্যের ভলিউম ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো যায়। এ ছাড়া তাপ শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বাই প্রোডাক্ট হিসেবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা। মিশ্র বর্জ্য ব্যবহার করা যায়, বর্জ্য পৃথক করতে হয় না। এতে তুলনামূলকভাবে কম ভূমির প্রয়োজন হয়। মাটি ও পানি দূষণ হয় না, বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। পাশাপাশি বর্জ্যের ওপর বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণও নির্ভর করে।