বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০১৯
প্রথম পাতা » অর্থনীতি | রাজনীতি » ২০৩৪ সালের আগেই বাংলাদেশের বাজেট হবে এক ট্রিলিয়ন ডলার- অর্থমন্ত্রী।
২০৩৪ সালের আগেই বাংলাদেশের বাজেট হবে এক ট্রিলিয়ন ডলার- অর্থমন্ত্রী।
পক্ষকাল সংবাদ-
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, দীর্ঘ ১০ বছরের চেষ্টায় আমরা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ১৭টি বড় বড় দেশকে পেছনে ফেলে একটি অবস্থানে এসেছি। বর্তমানে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বাংলাদেশ ৩২ তম দেশ। ২০৩০ সাল নাগাদ আমরা হবো ২৪তম অর্থনীতির দেশ। এ বছর আমরা বাজেট দিয়েছি ৫ লাখ কোটি টাকার বেশী, ২০৩৪ সালের আগেই বাংলাদেশের বার্ষিক বাজেট হবে এক ট্রিলিয়ন ডলার (এক হাজার বিলিয়নে এক ট্রিলিয়ন)। আমাদের অতীতের অর্জন এবং বর্তমানের ভিতের উপর ভিত্তি করেই এই প্রক্ষেপনটি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ট্রিলিয়ন ডলারের বাজেট এটি আমাদের একটি স্বপ্ন, আর এ স্বপ্নটি আমরা বাস্তবায়ন করবো ইনশাআল্লাহ। একই সঙ্গে বাংলাদেশ নানা ক্ষেত্রে সফলতা পাচ্ছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বে আমাদের অগ্রগতি সাধিত হচ্ছে, সারা বিশ্ব আজ প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করছে। আমাদের রয়েছে জাতির জনকের দেখানো স্বপ্ন ও পথ। তার দেখানে পথেই দেশ এগিয়ে চলেছে, তিনি শুরু করেছিলেন ১ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা সে পথেই আমরা বাস্তবায়ন করে চলেছি। বর্তমানে সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বেই আমরা জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়ন করব।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) রাজধানীর শেরেবাংলানগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) দুই দিনব্যাপী ‘গুড প্রজেক্ট ইমপ্লিমেন্টেশন ফোরাম’-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এসব কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, এডিবির এ আয়োজনটি একটি অনন্য সুন্দর আয়োজন। যারা ভাল কাজ করে সেই ভাল কাজের সম্মাননা, ভাল কাজের স্বীকৃতি। ভাল কাজের স্বীকৃতি দেওয়া এখন অনেকটাই আমরা ভুলে গেছি। কিন্তু ভাল কাজের স্বীকৃতি অত্যন্ত জরুরী। তাই ভাল কাজের স্বীকৃতি দিতে এডিবি যে কাজটি করল এটি এক কথায় অসাধারণ। একই সঙ্গে এডিবি আমাদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্টেকহোল্ডার। তারা এ পর্যন্ত আমাদেরকে বিভিন্ন প্রকল্পে ২৫ বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন করেছে। আরো ১০ বিলিয়ন ডলার পাইপলাইনে রয়েছে। এটি আমাদের জন্য অনেক বড় সহযোগিতা, যা আমাদের খুব দরকার ছিল। একটি সময় ছিল যখন আমরা বিদেশী ঋণ ছাড়া কোন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারতাম না, আমাদের এডিপির পুরোটাই থাকত সেখানে। এখন আমরা সক্ষমতা অর্জন করেছি, আমারা আর এখন বিদেশী ঋণের উপর নির্ভরশীল নই। এখন আমাদের যে সকল প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে এগুলো সমাপ্ত হলে দেশের চেহারা কল্পনাতীতভাবে পরিবর্তিত হয়ে যাবে। আমরা শুধু চেষ্টা করে যাচ্ছি কিন্তু এখনো সুফল পেতে শুরু করিনি, তবে আশা করছি রেজাল্ট হবে শুধু অগ্রগতি আর অগ্রগতি।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল তাঁর বাজেট উপস্থাপনের দিনের শারিরিক অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে বলেন, শুধু আপনারাই নয় পুরো দেশবাসী আমার অসুস্থতার সময় বন্ধুর মতো পাশে থেকে সাহস যুগিয়েছিলেন, সুস্থতার জন্য দোয়া করেছেন এ জন্য আপনাদের কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ। ডেঙ্গুর ভয়াবহতা বা বাজে অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ডেঙ্গুর যন্ত্রণা কি আমি বুঝি। চিকুনগুনিয়ার পরেই আমি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছি। আল্লাহ যেন কারো ডেঙ্গু না দেয় বলে সবার জন্য দোয়া করেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) আবাসিক প্রতিনিধি মনমোহন প্রকাশ বলেন, প্রবৃদ্ধি অর্জনের দিক থেকে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের জন্য মডেল। এ ছাড়া অর্থনীতির অনেক ক্ষেত্রেই চালকের আসনে রয়েছে দেশটি। এমনকি এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জনের দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ। বর্তমানে বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি অর্জন অনেক চ্যালেঞ্জিং। এর পরও বিগত অর্থবছরে বাংলাদেশ ৮ শতাংশের ওপরে প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন গোটা বিশ্বের জন্য মডেল।
অনুষ্ঠানে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মনোয়ার আহমেদ, ইআরডির
অতিরিক্ত সচিব ফরিদা নাসরিন উপস্থিত ছিলেন।
দেশে বিভিন্ন ধরনের ৫৩টি উন্নয়ন প্রকল্প চলমান। এসব উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন ৫৩ জন প্রকল্প পরিচালক (পিডি)। প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি অনেকটাই নির্ভর করে তাদের দক্ষতা ও স্বচ্ছতার ওপর। আর এ কাজে যেসব পিডি ভালো দক্ষতা দেখাচ্ছেন, সম্মেলনে তাদের পুরস্কৃত করে এডিবি।