বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০১৯
প্রথম পাতা » অপরাধ » শেখ হাসিনার রাজনীতির ভিত ইডেন কলেজ ছাত্রলীগে অধিকাংশ প্রার্থী বিতর্কিত
শেখ হাসিনার রাজনীতির ভিত ইডেন কলেজ ছাত্রলীগে অধিকাংশ প্রার্থী বিতর্কিত
শফিক আহমেদ ভূইয়া :
এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ ছাত্র সংঘঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে এই সংঘঠনটির রয়েছে নানা অর্জন । ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ন ইউনিটগুলোর মধ্যে অন্যতম । কেননা এখান থেকেই উঠে আসে নারী নেতৃত্ব । বর্তমান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার রাজনীতর ভিত তৈরি হয় এই ইডেন কলেজ থেকেই।
শেখ হাসিনা ১৯৬৬ সালের ২৭ নভেম্বর ইডেন কলেজের ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলেন । আর তাই এই ইউনিটের দিকে শেখ হাসিনার নজর থাকে প্রতিনিয়ত । সে ক্ষেত্রে এই ইউনিটের নেতৃত্ব্য তৈরিতে বেশ সতর্ক অবস্থানে শোভন-রাব্বানী । বির্তকিত কেউ যেন গুরুত্বপূর্ন পদ বাগিয়ে না নিতে পারে সে দিকে নজর রাখছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের এই দুই শীর্ষ নেতা।
আহ্বায়ক কমিটি গঠনের দীর্ঘ তিন বছর সম্মেলন হলো ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের।
বুধবার (২৪ জুলাই) এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় । সম্মেলন হলেও কোন কমিটি ঘোষণা করা হয়নি । দেশের নারী শিক্ষার অন্যতম বিদ্যাপীট ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের শীর্ষ পদে আসতে দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন পদ-প্রত্যাশী নেত্রীরা।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, দুই শীর্ষ পদে এগিয়ে রয়েছে নানাভাবে সমালোচিত ও বির্তকিত নেত্রীরাও । শুধু বির্তকিত তাই নয়, বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত সন্তানেরাই ছাত্রলীগে শীর্ষ পদে আসতে মরিয়া । যে কোনো মূল্যে পদ বাগিয়ে দিতে রাত-দিন সমানতালে দৌড়ঝাপ করছেন তারা । শুধু শীর্ষ নেতার বাসাই নয়, তাদের ঘনিষ্টজনদের বাসা বাড়ীতেও যাওয়া আসা অব্যাহত রাখছেন ।
জানা গেছে, ইডেন ছাত্রলীগের দায়িত্ব পেলেই হল বাণিজ্যসহ সরবরাহের কাজ করে শুন্য থেকে কোটিপতি হয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত অনেক নেত্রী । তারা ঢাকায় বিলাসী জীবন যাপনের পাশাপাশি গ্রামের বাড়িতেও করেছেন বহুতল ভবন ।
রয়েছে নিজস্ব গাড়ি । তাই লোভনীয় এই পদে আসতে জোর লবিং তদবির শুরু করেছেন বির্তকিত এসব নেত্রীরা । তারা ‘যে কোন মূল্যে’ পদ চান। বির্তকিত ও অনুপ্রবেশকারী এসব নেত্রীদের কারণে ‘অনেক’ কোনঠাসা পারিবারিকভাবে আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ও ছাত্রলীগের ত্যাগী নেত্রীরা ।
জানা যায় , সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশীর সংখ্যা কমপক্ষে ২০ জন। এর মধ্যে ১২-১৩ জন রয়েছেন চরম বির্তকিত। এই বির্তকিতরাই এগিয়ে জোর লবিংয়ে।
জানা গেছে, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের জন্য যারা আলোচনায় রয়েছেন,নাহিদা চৌধুরী রাকা, জান্নাত আরা জান্নাত, রোকসানা আকতার, বিথী আকতার, পাপিয়া রায়, পাপিয়া প্রিয়া, ইসরাত জাহান ইতি, নাজমা আকতার, সুমনা মল্লিক পপি, সানজিদা জাহান, কামরুন্নাহার, বিপাসা রনি, ব্লাফিউননাহার লাবন্য, সুখী, সোনালী, সাবিকুন্নাহার তামান্না, তামান্না জেসমিন রিভা, জেবুন্নাহার শিলা, মাহমুদা সুমি, বেনজির সেবা, সাবিহা শিকদারসহ অনেকেই ।
বিপাশা রনি,তার বাড়ী মাগুরা এবং সে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত কিন্তু সম্প্রতি তার মদ হাতে (রেড লেভেল) এবং মদ পানের একটি ছবি এখন মানুষের হাতে হাতে ! এই রনি ছাত্রলীগের সভাপতি শোভনের অনুসারী এবং সভাপতি পদপ্রার্থী ।
রাহিমা খাতুন সোনালী ওরফে সোনালী আক্তার,পিতা-রফিকুল ইসলাম,মাতা-নাজমা খাতুন।মদিনাবাদ কয়রা খুলনার এই মেয়ে বিবাহে আবদ্ধ হন মেহেদী হাসান পিতা-আব্দুস সালাম গাজী ২৭-০৫-২০১১ সালে । তিনিও ছাত্রলীগের সভাপতি শোভনের অনুসারী ।
সভাপতি হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে পাপিয়া রায় ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর অনুসারী । পাপিয়া রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে স্বামী ছিনতাইয়ের অভিযোগ করেছিলেন ইডেন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নিঝুম।
ওই সময়ে মিরপুরের সাংবাদিক কলোনির ৪ নম্বর সড়কের ১৯২ নম্বর বাসায় ছয় তলায় নিঝুমের স্বামী মৃদুলের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় পাপিয়া রায়কে এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে আটক করে নিঝুম । পরে এলাকাবাসী উত্তম মাধ্যম দিয়ে ছেড়ে দিলে নিঝুম দুজনকেই তার নিজের বাসায় নিয়ে আসে । রাতেই গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকায় এসে মুচলেকা দিয়ে মেয়েকে নিয়ে যায় পাপিয়া রায়ের বাবা ।
এছাড়াও পাপিয়ার বিরুদ্ধে বার বার অনৈতিক অভিযোগ উঠেছে । এ সময়ে ঢাকায় বান্ধবীদের নিয়ে চলাফেরা ও খাওয়ার টাকা না থাকলেও এখন টাকার পাহাড় বির্তকিত এই নেত্রীর ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইডেন ছাত্রলীগের এক নেত্রী জানান, পাপিয়া রায় এক সময় জাকিরের অনুসারী ছিলো শুধু তাই নয় সে জাকিরের নাম ভাঙ্গাতো সবার কাছে এখন রাব্বানীর নাম ভাঙ্গায় এবং সকলের কাছে বলে বেড়ায় সোহাগ জাকিরের কমিটি বাদ দিয়ে রাব্বানীকে নাকি পাপিয়া রায় সাধারন সম্পাদক করেছে আর সেই জন্য নাকি রাব্বানী তাকে কথা দিছে বানাবে..যেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভিপি ছিলো সেই কলেজে এমন প্রকাশিত প্রমানীত মেয়েকে কেউ সভাপতি হিসাবে চায়না । আমরা ইডেন কলেজে বিতর্কিত মুক্ত কমিটি চাই ।
এমন অভিযোগ রয়েছে সোনালীর বিরুদ্ধেও। আরেক পদ প্রত্যাশী সাবিকুন্নাহার তামান্নার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে সে বিবাহিত । সুখি ও জেবুন্নাহার শিলার পরিবার বিএনপির জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।
ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এদের থেকে মুক্তি চায় এবং একটি বিতর্কমুক্ত গ্রহনযোগ্য কমিটি চায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের নিকট।
এর আগে ২০১৬ সালের ১ নভেম্বর তাছলিমা আক্তার কে আহ্বায়ক, ১৫ জন যুগ্ম আহ্বায়ক, ও ৪৩ জন সদস্য নিয়ে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারন সম্পাদক এস.এম.জাকির হোসাইন ।