ঘাটের নামই ‘ভিআইপি’
পক্ষকাল সংবাদ-
মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের শিমুলিয়ায় চারটি ঘাট রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি ঘাটের নাম ১নং, ২নং ও ৩নং ফেরি ঘাট থাকলেও ৪নং ফেরি ঘাটের নাম রাখা হয়েছে ‘ভিআইপি’। কোনও ঝামেলা ছাড়া ভিআইপি’রা যেন সহজে পারাপার হতে পারেন, সেজন্য এ ঘাট ব্যবহার করা হয়। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, ভিআইপি ঘাট নাম রাখা হলেও এ ঘাট দিয়ে মূলত ছোট গাড়ি পারাপার করা হয়। সরেজমিনে গিয়ে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) আবদুল আলীম বলেন, ‘চার নম্বর ঘাটের নাম ভিআইপি হওয়ার কারণ, এ ঘাটে ফরিদপুর, কর্ণফুলী ও কুমিল্লা ছাড়া অন্য ফেরি ভেড়ানো যায় না। আবার এখানে বড় পণ্যবাহী যান উঠতে গেলে পন্টুনের ক্ষতি হয়, সেজন্য ছোট গাড়ি এ ঘাটে পারাপার হয়।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নৌ-মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের আগে থেকে বলা হয়েছে−যুগ্মসচিব বা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, পুলিশের মধ্যে ডিআইজি এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে কর্নেল থেকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাই ভিআইপি।’
ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) আবদুল আলীম বলেন, ‘ফেরি পারাপারে ভিআইপিদের সন্তুষ্ট করতে না পারলে আমাদের বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হয়। ভিআইপি পারাপারে ব্যর্থ হওয়ায় বিআইডব্লিউটিসি’র শিমুলিয়া ঘাটের সদ্য সাবেক উপ-মহাব্যবস্থাপক শাহ মো. বরকতউল্লাহর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছিল। পরে তাকে বদলি করা হয়।’
তবে এ ব্যাপারে শিমুলিয়া ঘাটের সদ্য সাবেক উপ-মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) শাহ মো. বরকতউল্লাহ বলেন, ‘আমাকে বদলির চিঠিতে এ রকম কিছু লেখা ছিল না।’
ভিআইপি ঘাট সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘শিমুলিয়া ঘাটে চার নম্বর ফেরি ঘাটের নাম ভিআইপি ফেরি ঘাট হলেও সাধারণ যাত্রীরাও এ ঘাট দিয়ে পারাপার হয়। মূলত ছোট গাড়িই এ ঘাটে যাতায়াত করে।’
মাওয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ঘাটের নাম কেন ভিআইপি দেওয়া হয়েছে তা জানি না। তবে, কোনও ভিআইপি নদী পারাপারের জন্য ঘাটে আসার আগে আমাদের বার্তা পাঠানো হয়। আমরা সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেই।’
মাওয়া ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ (টিআই) মো. হেলালউদ্দিন বলেন, ‘আগের নিয়মে আমরা ভিআইপি পারাপার করছি। নতুন কোনও পরিপত্র জারি হলে সেভাবে ভিআইপি পারাপার করা হবে। তবে তাদের জন্য ফেরি আটকে রাখা হয় না। যখন যেই ফেরি পাওয়া যায় তখন সেই ফেরিতেই ভিআইপিদের পারাপার করা হয়। শুধু সাধারণ যাত্রীদের মতো তাদের কোনও সিরিয়ালে রাখা হয় না।’
শিমুলিয়া ঘাটের আরেক সাবেক উপ-মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) শাহ মো. খালেদ নেওয়াজ জানান, ‘আগে ভিআইপি ঘাট হিসেবে মৌখিকভাবে পরিচিত হলেও লিখিতভাবে ঘাটের নাম ভিআইপি ঘাট ছিল না। এখন কেন লিখিতভাবে এমন নাম দেওয়া হয়েছে তা জানি না।’