কাশ্মীর ইস্যুতে নিন্দার ঝড় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে
পক্ষকাল ডেস্ক -
সোমবার (৫ আগস্ট) রাজ্যসভায় প্রস্তাব পাশ করার পরে মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠন বিল উত্থাপন করেন অমিত শাহ। গোটা দেশের সংবাদমাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেলেও এই সিদ্ধান্তের সামালোচনা করেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
নিউইয়র্ক টাইমসের সম্পাদকীয়তে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করার সিদ্ধান্তকে ‘বিপজ্জনক’ ও ‘ভুল’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিজেপি সরকার হিন্দুত্বের ধ্বজাধারী। কাশ্মীরি মুসলিমদের বাড়তি সুবিধে দেবে এমন আইনকে বিজেপি সরকার রাখতে চায় না। এই পদক্ষেপ বিজেপির দৃষ্টিভঙ্গিতে ঐতিহাসিক ভুল সংশোধন।
‘দ্য গার্ডিয়ান’ পত্রিকার সম্পাদকীয়তেও এই পদক্ষেপকে ভাল চোখে দেখা হচ্ছে না। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৩৭০ অনুচ্ছেদ তুলে দেওয়ার মধ্যে বিজেপির গেরুয়াকরণ রাজনীতি আরও একবার মুখ দেখল। কাশ্মীর ইস্যুতে মোদী সরকারের পদক্ষেপ ‘আইনানুগ নয় বরং নিজেদের অবস্থানকেই স্পষ্ট করা।’ তাদের মতে, এর মধ্যে কোনও লুকোচুরি নেই। ভোটের সময়েই বিজেপি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করার বিষয়ে। ভোট প্রচারেই কংগ্রেসের ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শকে চ্যালেঞ্জ করা হয়। গার্ডিয়ানের ধারণা, এই প্রক্রিয়ায় কাশ্মীরের রক্তপাত আর হানাহানি থামবে না।
জার্মানের গণমাধ্যম ‘ডি ডব্লিউ’র শিরোনাম বলেছে, ‘আগুন নিয়ে খেলছে সরকার’। ‘ডি ডব্লিউ’র এশিয়া মহাদেশ বিভাগের সম্পাদক রডিন লিখেছেন, ‘কাশ্মীরের মুসলিম জনতা এবং এই উপত্যকার রাজনৈতিক প্রতিনিধিদের এই সিদ্ধান্তে আরও বিক্ষুব্ধ করে তুলবে। অতীতে সতর্কতা অবলম্বন করে কাশ্মীরে শান্তি আনার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমান সরকারের সিদ্ধান্তের ফলে যা দাঁড়াল তাতে কাশ্মীরে শান্তি আনা অসম্ভব।’
‘আল জাজিরা’ কাশ্মীরের ক্ষমতা হ্রাস, তাকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার প্রক্রিয়াকে সমর্থন করে না। তাদের শিরোনামে এই দিনটিকে অন্ধকারতম বলা হয়েছে। বলাই বাহুল্য ভারত সরকারের এই পদক্ষেপে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। আল জাজিরা তাদের ব্যাখ্য্য পাকিস্তানের প্রতিচ্ছবিও তুলে ধরেছে। কংগ্রেসের সুরেই ‘আল জাজিরা’ বলছে, ৩৭০ ধারা তুলে দিয়ে কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা কেড়ে নিয়ে তাকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করা একটি শ্বাসরোধকারী পদক্ষেপ।
কাশ্মীরের সংবাদমাধ্যম ‘দ্য নিউজ’ এর মতে, এই ঘটনায় কাশ্মীরে অন্ধকার যুগের সূচনা হল। ভারত সরকার কাশ্মীরে মুসলিম জনগোষ্ঠীর সংখ্যাগরিষ্ঠতা হ্রাস করতে এই পদক্ষেপ নিয়েছে।