শুক্রবার, ৯ আগস্ট ২০১৯
প্রথম পাতা » বিশ্ব সংবাদ | ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » কাশ্মীর নিয়ে ভারতীয় সিদ্ধান্তের ফল হবে সুদূরপ্রসারী
কাশ্মীর নিয়ে ভারতীয় সিদ্ধান্তের ফল হবে সুদূরপ্রসারী
জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে ভারত সরকারের সিদ্ধান্ত মুসলিম সংখ্যাগুরু এই অঞ্চলের অর্থনীতির উপর বিপর্যয়কর প্রভাব ফেলতে পারে।
দক্ষিণ এশিয়ায় কাশ্মির সবচেয়ে দরিদ্র ও অশান্ত অঞ্চল। ভূরাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এই অঞ্চল ও আশপাশের এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে দীর্ঘ দিন ধরে অন্তরায় হয়ে আছে। অঞ্চলটি এখনো মূলত কৃষিনির্ভর। রাজনৈতিক বিরোধের আরো অবনতি না ঘটিয়ে এখানকার দারিদ্র দূর করতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি জোরদার করার জন্য জরুরিভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
কিন্তু গত সোমবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের বিশেষ মর্যদা বাতিলের ব্যবস্থা গ্রহণ করায় পাকিস্তানের সঙ্গে তীব্র উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। ভারতের এই কাশ্মির সিদ্ধান্ত ক্ষমতাসীন বিজেপি’র জন্য দেশপ্রেমের ধূঁয়া তুলে হয়তো ফায়দা হাসিলের সুযোগ করে দেবে কিন্তু এটা কাশ্মীরের দরিদ্র জনগণের দরিদ্রতা ও অসহায়ত্ব আরো বাড়াবে। পররাষ্ট্র নীতির ক্ষেত্রে মোদি সরকার ভুল পথে হাটছে। তারা ইসলামাবাদের সঙ্গে রাজনৈতিক খেলার শিকারে পরিণত করেছে কাশ্মিরের জনগণকে।
ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক সীমিত ও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে পাকিস্তান। এই উত্তেজনা পর্যটন শিল্পের জন্য একটি মারাত্মক আঘাত, যা কাশ্মীরের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ভারতের কাশ্মীর সিদ্ধান্তের কারণে যে গোলযোগ তৈরি হয়েছে তার আঘাত লাগবে পর্যটন শিল্পে। ভারতের স্বাধীনতা দিবস ১৫ আগস্টের প্রাক্কালে ভারতের মানুষ ছুটি কাটাতে কাশ্মীরের মতো জায়গায় ভ্রমণ করতে যায়।
কাশ্মীরের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যা মুসলমান। ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ করে দেয়ার পাকিস্তানী সিদ্ধান্ত হয়তো ভারতের সার্বিক অর্থনীতিতে তেমন কোন প্রভাব ফেলবে না, কিন্তু এটা ভারত অধিকৃত কাশ্মীরের মুসলিম সম্প্রদায়কে প্রভাবিত করতে পারে।
ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতার মাধ্যমে কাশ্মীরের অর্থনীতির উন্নতি ঘটাতে ইচ্ছুক ছিলো চীন। কিন্তু ভারতের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত এ সম্ভাবনা বাতিল করে দিয়েছে। বিজেপি’র উদ্যোগ এই অঞ্চলের অর্থনীতি ও জনগণের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের সুযোগ নষ্ট করেছে। কাশ্মীরের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। তবে ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে দারিদ্র বিমোচন উদ্যোগ জোরদারের আসল দায়িত্ব ভারতেরই।ভারতের সিদ্ধান্ত যদি কাশ্মীরে অর্থনৈতিক অশান্তি তৈরি করে তাহলে এই অঞ্চল থেকে সন্ত্রাসবাদ নির্মূল প্রচেষ্টার উপর তার সুদূরপ্রসারি প্রভাব পড়বে।