সোমবার, ১৯ আগস্ট ২০১৯
প্রথম পাতা » সাক্ষাৎকার » শ্রমিক কল্যান ফাউন্ডেশন ও কেন্দ্রিয় তহবিলের মহাপরিচালকের সাক্ষাৎকার
শ্রমিক কল্যান ফাউন্ডেশন ও কেন্দ্রিয় তহবিলের মহাপরিচালকের সাক্ষাৎকার
শ্রমিক কল্যান ফাউন্ডেশন ও কেন্দ্রিয় তহবিলের প্রান পুরুষ ডা. এ এম এম আনিসুল আউয়াল, পিএইচডি , পিএইচডি মহাপরিচালক গতিশীল কার্যক্রম নিয়ে পক্ষকালকে দেওয়া সাক্ষাতকার
পক্ষকাল প্রতিবেদকঃ শ্রমিক কল্যান ফাউন্ডেশন কবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল
ডা. এ এম এম আনিসুল আউয়াল,ঃ বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত শ্রমিকদের কল্যাণ সাধনের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন আইন, ২০০৬ (২০০৬ সনের ২৫ নং আইন) প্রণয়ন করা হয়। আইনটি ০১ অক্টোবর ২০০৬ সাল থেকে কার্যকর করা হয়েছে। এ আইনটি ১৯৬৮ সালে প্রণীত কোম্পানী মুনাফা (শ্রমিকদের অংশগ্রহণ) আইনের আধুনিক সংস্করণ।
পক্ষকাল প্রতিবেদকঃ ২০০৬ সালে শ্রম আইন বিধিমালা প্রনয়ন দিয়ে কবে কখন থেকে কার্যক্রম শুরু হয় -
ডা. এ এম এম আনিসুল আউয়াল,ঃ অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের নিয়েই ২০১০ বিধিমালা দিয়ে কার্যক্রম শুরু হয়। শুরুতে এর কার্যক্রম ছিল খুব ধীর গতিতে ২০১৫ -১৬সালের অর্থ বছরে যাত্রাকালে মাত্র ৩৭ জনকে আর্থিক সুবিধা দেওয়া হয় ।পরবর্তিতে আমি দায়িত্ব নিয়ে দ্রত গতিতে এর কার্যক্রমকে গতিশীল করার জন্য কিছু পদক্ষেপ গ্রহন করি,আমি ২০১৫ সালে শ্রমিক কল্যান ফাউন্ডেশন এর প্রশাসনের দায়িত্ব পালন করি.২০১৬ সালে ৪ বছরের চুক্তিভিত্তিক মহাপরিচালকের দায়িত্ব পাবার পর ১৬-১৭ অর্থবছর অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের কল্যানে ১ হাজারের বেশী অসহায় দরিদ্র অসুস্থ শ্রমিকদের জন্য আর্থিক সহযোগিতার ব্যবস্থা করি যা সরকারের সদিচ্ছার ফল । অপ্রাতিষ্ঠানিক সেক্টর এর শ্রকিম দের সংজ্ঞায়িত করা খুব মুশকিল শত শত ধরনের শ্রমিক কাজ করে
যাদের সংখ্যা ৯২ শতাংশ । ৪৩ টি সেক্টর আছে প্রাতিষ্ঠানিক ।কিন্তু এর বাইরে শত শত অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের নিয়েই মুলত শ্রমিক কল্যান ফাউন্ডেশন কাজ করে যাচ্ছে। আমরা এখন যে কাজ করছি তার ৯৭ ভাগ ই অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের জন্য এই মুহুর্তের চিত্র এটি।
পক্ষকাল প্রতিবেদকঃ অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের নিয়েই কি দেশব্যাপি কোন ধরনের সংগঠন কিভাবে করা সম্ভব বা করা যায় কিনা শ্রমিকল্যান ফাউন্ডেশনের সুযোগ সুবিধাপ্রাপ্তির জন্য
ডা. এ এম এম আনিসুল আউয়াল,ঃ অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক হোল বহুমুখি বা শতশত ধরনের । তাদের কে কিভাবে প্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক হিসাবে রুপ দেওয়া যায় কিনা কিংবা কিভাবে তাদেরকে আরও সহজ ভাবে সাহায্য করা যায় তার জন্য আমরা নানা ধরনের গবেষনা ও চিন্তা ভাবনা করছি।প্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের জন্য যেযেতু শ্রমিক আইনে সজ্ঞায়িত করা আছে কারা প্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক হবে। কৃষক দিনমজুর বাসা বাড়িতে কাজ করে ,বাদাম বিক্রেতা,চা ,দিনমজুর বিক্রেতা,এমন শত শত শ্রমিকদের জন্য আমাদের সহায়তা দোরগোড়ায় নিয়ে যাওয়ার জন্য নিরলস চেষ্টা করছি কেননা তারা অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক তাদের কে সহযোগিতা করার জন্য তেমন কোন সংগঠন নাই ।
পক্ষকাল প্রতিবেদকঃ শ্রমিক কল্যান ফাউন্ডেশন থেকে আর্থিক অনুদান প্রাপ্তির ক্ষেত্ত্রে কি একজন দুঃস্থ সাধারন অসুস্থ অসহায় মানুষ/শ্রমিক চিকিৎসা অনুদান/তার সন্তানের জন্য শিক্ষা সহায়তা সরাসরি পাবার সু্যোগ কিভাবে পেতে পারে।
ডা. এ এম এম আনিসুল আউয়াল,ঃ খুব ভাল প্রশ্ন,অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক যাদের জন্য এই কল্যান ফান্ড গঠন করা হয়েছে তারা চাইলে সরাসরি দরখাস্ত করতে পারবে । কেননা একজন অপ্রাতিষ্ঠানিক সাধারন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে লেবার অফিস কোথায় তা খুজে পাওয়া খুব কঠিন কাজ ,খুজে পাওয়া যেমন কষ্টকর তেমনি সেই অফিসে অসুস্থ হয়ে একটা সই এর জন্য সময় ও ব্যয় বহুল হয়ে যেতে পারে, প্রত্যন্ত অঞ্চলের কোন গ্রাম থেকে কোথায় ডল অফিস তা তার জানার কথা না । সেক্ষেত্র আমাদের এই অফিসে দরখাস্ত করলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করে তাকে আর্থিক সাহায্য সহযোগিতা ব্যবস্থা করে দিব।তারা ব্যাংকের মাধ্যমে তাদের কাছে অর্থ পৌছিয়ে যাবে রুপালি ব্যংকের শিওর ক্যাশ এর মাধ্যমে অথবা চেক এর মাধ্যমে।
পক্ষকাল প্রতিবেদক —-আপনি কেদ্রিয় তহবিলের মহাপরিচালক হিসাবে একই সাথে দায়িত্ব পালন করছেন এ বিষয়য়ে কিছু বলবেন কি
ডা. এ এম এম আনিসুল আউয়াল,ঃ দেখুন প্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকের যদি হিসাব করি তবে সেই সংখ্যাটা ৭/৭ শ তাংশ বাকিতা পুরা –অপ্রাতিষ্ঠানিক । কেন্দ্রিয় তবিলের কাজ টিই হোল আর এম জি সহ শিল্প কল্কারকানার শ্রমিকফের নিয়ে বাকি যে ৯৭ ভাগ অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক আছে তাদেরকে আমরা অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক হিসাবে দেখি । আমরা বিভিন্ন সময় এই সকল শ্রমিকদের কে আর্থিক সাহায্য দিয়ে থাকি যেমন আজ আমরা ষ্টার গারমেন্টসের কিছদায় দেনা শোধ করার জন্য অর্থ প্রদান করলাম কারন শ্রমিক অসন্তোশ না দেখা দেয়।
কেন্দ্রিয় তহবিল গঠন করা হয়েছে শুধ মাত্র শত ভাগ রপ্তানিমুখি শিল্প কারখানাকে নিয়েই যেনন আর এম জি ও গার্মেন্টস নিয়ে। ৪৩ লক্ষ প্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক আছে । যেখানে মালিক শ্রমিক সরকার মিলে এক যোগে কাজ করতে হয় প্রায় ৪হাজার ৫ শ ফ্যাকটরি আছে আর এম জি । এখানে মৃত্যু বীমা পরিশোধ করা , তাদেরে ছে্লে মেয়েদেরকো লেখাপড়া করানোর জন্য শিক্ষা সহায়তার জন্য আর্থিক অনু্দান বৃত্তি দেইতা চিকিৎসা খরচ দেওয়া আমাদের মু্ল কাজ
আজই আমরা বিজে এম ই বি কে এম ইর হাতে ৯ কটি ২০ লক্ষ টাকা হস্তান্তর করলাম ।মৃত্যু বীমা র জন্য এর সাথে ষ্টার গার্মেন্তস এর মালিকের কিছু দায় দেনাও আছে শরমিকের বেতন পাওনা সহ।
পক্ষকাল প্রতিবেদক- অপ্রাতিষ্টানিক শ্রমিকদের জন্য শ্রমিক কল্যান ফাউন্ডেশন যেহেতু কাজ করে যাচ্ছে,কাজ করতে গিয়েবএখানে কোন ধরনের অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন ।
ডা. এ এম এম আনিসুল আউয়াল,ঃ সব জায়গাতেই কিছু সমস্যা থাকে ।আমি মাত্র ১২ জন লোকবল নিয়ে শ্রমিক কল্যান ফান্ডের কাজটি পরিচালনা করি ।ডিজি হিসাবে আমার অনেক কিছুই নি হাতে করতে হয় ,আমি নিজে যেহেতু ডাক্তার তাই সকল কাগজ পত্র চিকিৎসা অনুদানের জন্য যে দর খাস্ত আসে তা আমাকে নিজে চেক করতে হয় । আমাদের এখানে হাজার হাজার দরখাস্ত বা আবেদন আসছে যা দেখতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। আমি ধর্যের সাথে একটা একটা আবেদন যাচাই করছি ।আমি জিনে যেহেতু ডাক্তার কার কি রোগ তা দেখেই ব্যবস্থা নিচ্ছি
আমি ডিজি হিসাবে দায়িত্ব নিয়ে সরকারের সহযোগিতায় তিন সাড়ে তিন বছরের মধ্যে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা ফান্ড সংগ্রহ করেছি ।
ইতিমধ্যে ৯ হাজার ৯ জন কে ৩০ কোটি টাকা শ্রমিক কল্যান ফান্ড থেকে আর্থিক সাহায্য দিয়েছি।
আর কেদ্রিয় তহবিল থেকে প্রায় ৪ হাজার জন কে দিয়েছি .৬০ কোটি টাকা ।
পক্ষকাল প্রতিবেদক —আপনি দেশের মিডিয়ার কাছে কি প্রত্যাশা করেন-
ডা. এ এম এম আনিসুল আউয়াল,ঃ আমি সব সময় আশা করব মিডিয়া দেশের মানুষের কল্যানে বলিষ্ঠ ভুমিকা রাখবে ।দেশের সৎ দরিদ্র প্রান্তিক শ্রমিকদের দুঃখ দুর্দশা লাঘবে অসহায় শ্রমিকদের সাহায়্য সহযোগিতা একটা সচেতনাতা মুলক সংবাদ বা তথ্য সাধারন শ্রমিকদের জানাতে ভুমিকা রাখবে ।
আমি মনে করি টেলিভিশন /পত্রিকা বড় ভুমিকা রাখতে পারে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক সব কিছুতেই ভুমিকা রাখা সম্ভব ,এক্ষেত্র মানুষে র মাঝে প্রেম সহানুভুতি থাকতে হবে
আপনি কাজ করতে গিয়ে অনেক সমস্যা মোকাবেলা করছেন –দুই একটা সমস্যার কথা বলুন
ডা. এ এম এম আনিসুল আউয়াল,ঃ আমি আগেই বলেছি দেশ ব্যাপি এই শ্রমিকদের কল্যানে কাজ করতে গিয়ে আমি অনেক অসহায় মানুষ বা শ্রমিক দের দেখছি ।তাদের কে আরও সৎ ভাবে সহযোগিতা করতে চায় । আমি পিয়ন চাপরাশি ১২ জন মিলে লক্ষ লক্ষ মানুষকে ১০০ ভাগ সঠিক মুল্যায়ন করে সাহায্যা করতে পারছি না ।এর মধ্যে কিছু ভুয়া আবেদন নানান পথ দিয়ে ঢুকে যায় । আর কিছু খারাপ মানুষ সমাজে ত থাকেই তাদের মোকাবেলা করার জন্য দেশব্যাপি অফিস না থাকার কারনে আমার মাঝে মাঝে খারাপ লাগে ।আমি আশা বাদি একদিন সারা দেশেই শ্রমিক কল্যান ফাউন্ডেশন সাধারন শ্রমিকদের চিকিৎসা খরচ আর্থিক সাহায্য দিয়ে দেশে বিনা চিকিতসায় শ্রমিক মরে যাওয়া খবর আসবে না ।সেই লক্ষে আমরা ধিরে ধিরে এগিয়ে যাচ্ছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হাত ধরে ।
আমি আর একটা কথা বলেই শেষ করবো একটা বড় প্রতিবন্দধকতার কথা বলে ,বাংলাদেশে হাজার হাজার প্রতিষ্ঠান আছে যাদের টাকা এখানে জমা হবার কথা যাদের নীট মুনাফার বাৎসরিক ০ দশমিক ৫ ভাগ তারা বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফাউন্ডেশনে জমা দেবার কথা কিন্তু মাত্র ১৪৫ টা প্রতিষ্ঠান এখানে জমা দেই। এই জন্য আমরা এন বি আর ও অডিট ফার্ম কে চিটি দিয়েছি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে।