মিন্নিকে কেন জামিন দেওয়া হবে না: হাইকোর্ট
পক্ষকাল সংবাদ-
বরগুনায় আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় গ্রেফতার তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার মিন্নির জামিন আবেদনের ওপর শুনানিতে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রুল জারি করেন।
আগামী ২৮ অগাস্ট এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির দিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বরগুনা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হুমায়ুন কবিরকে যাবতীয় নথিপত্রসহ আদালতে হাজির থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে রিমান্ড শেষে মিন্নি আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার আগেই গত ১৮ জুলাই বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে মিন্নি রিফাত হত্যায় দোষ স্বীকার করেছেন বলে জানান তিনি। এ বিষয়ে পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত ব্যাখ্যা চেয়েছেন আদালত। আগামী ২৮ অগাস্ট তা হাইকোর্টে দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মিন্নির পক্ষে এদিন হাইকোর্টে শুনানি করেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও এম আমিনউদ্দিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারোয়ার হোসাইন বাপ্পী।
এর আগে সোমবার আদালতে মিন্নির জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এম মঈনুল ইসলাম ও মাক্কিয়া ফাতেমা ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারোয়ার হোসাইন বাপ্পী।
এদিন হাইকোর্টে আইনজীবী পান্না বলেন, ‘মিন্নির রিমান্ড আবেদনের শুনানিতে বরগুনার আদালতে তার পক্ষে কোনো আইনজীবী পাওয়া যায়নি। আর পুলিশ তাকে রিমান্ডে পেয়ে পুলিশ লাইনসে নিয়ে গিয়েছিল, যা নিয়মের লঙ্ঘন।’ তিনি আরও বলেন, ‘মিন্নি ১৯ বছরের একটি মেয়ে। সে স্বামীকে রক্ষা করার চেষ্টা করেছে। সেটা ভিডিওতে এসেছে। কিন্ত পুলিশ সেই ভিডিও ১১ ভাগে ভাগ করে এখন বলছে, মিন্নি এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত।’
এ পর্যায়ে আদালত বলেন, কোনো কোনো পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, মিন্নি হাকিমের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেওয়ার আগেই পুলিশ সুপার সংবাদ সম্মেলন করে তার অপরাধ স্বীকার করার তথ্য সাংবাদিকদের দিয়েছেন। আসলে সেদিন কী ঘটেছিল, পুলিশ সুপার কী বলেছিলেন, কখন বলেছিলেন- এ বিষয়গুলো জানা প্রয়োজন। পরে এসব তথ্য হাইকোর্টকে জানানোর জন্য মিন্নির আইনজীবীকে নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি একই বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকেও বিশদ জেনে আসার জন্য বলা হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট মিন্নির পক্ষে জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন দাখিল করা হয়। পরে ৮ আগস্ট বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চে শুনানির পর আবেদনটি ফিরিয়ে নেন মিন্নির আইনজীবী। এরপর গত রোববার জামিন চেয়ে হাইকোর্টে এই বেঞ্চে ফের আবেদন করা হয়।
গত ২৬ জুন সকালে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে রিফাত শরীফকে। মিন্নি হামলাকারীদের সঙ্গে লড়াই করেও স্বামীকে বাঁচাতে পারেননি। পরে ১৬ জুলাই নাটকীয়ভাবে মিন্নিকে তার বাবার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে কয়েক দফায় মিন্নির জামিন নামঞ্জুর করেন বিচারিক আদালত।