রবিবার, ১১ জানুয়ারী ২০১৫
প্রথম পাতা » জেলার খবর » সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৬ বিঘা জমি আওয়ামীলীগ নেতার দখলে
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৬ বিঘা জমি আওয়ামীলীগ নেতার দখলে
শামীমুল ইসলাম শামীম, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে এক অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষকের ৬ বিঘা জমি জোর করে দখল করে নিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতা শফিয়ার রহমান। উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের মাঠে দখল করা ওই জমিতে দখলকারি মশুড়ি চাষ করেছেন। জমির মালিক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের রনজিৎ তরফদার নামের স্কুল শিক্ষক জমিতে যেতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেছেন।
কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার ইউনিয়নের পিরোজপুর গ্রামের মৃত যতিন্দ্রনাথ তরফদারের পুত্র রনজিৎ তরফদার। যিনি রঘুনাথপুর রোস্তম আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ইংরেজির শিক্ষক ছিলেন। ইতোমধ্যে তিনি অবসরে গেছেন। পিরোজপুর গ্রামের মাঠে তার বেশ কিছু জমি রয়েছে। তার মধ্যে পিরোজপুর বটতলা থেকে গ্রামে প্রবেশদ্বারেই রয়েছে একই স্থানে ৬ বিঘা জমি। যার মধ্যে তিন বিঘা নিজে শ্রমিক দিয়ে চাষাবাদ করতেন, আর বাকি তিন বিঘা বর্গা দিতেন। পিরোজপুর গ্রামের শরিফুল ইসলাম ছিলেন বর্গা চাষি। মালিক রনজিৎ তরফদার জানান, এই জমির মধ্যে যে তিন বিঘা বর্গা দিতেন সেখান থেকে তিনি বছরে ৩০ হাজার টাকা পেতেন। বাকি তিন বিঘা নিজে চাষ করতেন।
সরেজমিনে পিরোজপুর গ্রামের মাঠে গিয়ে দেখা যায় ওই ৬ বিঘা জমিই এক ব্যক্তি চাষ করেছেন। সেখানে মশুড়ি বোনা হয়েছে। স্কুল শিক্ষক রনজিৎ তরফদার জানান, এক মাস হলো পিরোজপুর গ্রামের বাসিন্দা, বারোবাজার ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কার্যকরি সদস্য শফিয়ার রহমান জোর করে তার জমি চাষ করেন। তিনি চাষ করার কারন জানতে চাইলে ফসল উঠার পর কিছু টাকা দেবেন বলে জানান। জমির মালিক এভাবে জমি দখল করা ঠিক হচ্ছে না বলে জানালে শফিয়ার রহমান বলেন জমিটা বিএনপি কর্মীদের দিয়ে খাওয়াচ্ছেন। এখন আমাদের দল ক্ষমতায় রয়েছেন। ফলে জমি আমাদের দখলে থাকবে। শিক্ষক রনজিৎ তরফদার বলেন, তার জমি তিনি নিজে কিছু অংশ চাষ করেন। বাকিটা কাকে বর্গ দেবেন সেটা তিনিই ঠিক করবেন। কিন্তু শফিয়ার রহমান সম্পূর্ণটা দখল করে নিয়েছেন। দখলের বিষয়টি সবাইকে জানানোর পর শফিয়ার রহমান বলছেন তিনি মৌসুম শেষে কিছু টাকা দেবেন। কিন্তু তার আশংকা এটা প্রতিবেশীদের বোঝানোর জন্য বলা হচ্ছে। আসলে তাকে কোনো পয়সা দেওয়া হবে না। জোর করেই চাষ করে খাবেন। তিনি তার ৬ বিঘা জমিই ফেরত দেবার দাবি করেছেন।
এ ব্যাপরে শফিয়ার রহমানের সাথে আলাপ করলে তিনি বলেন, জমিটি তার বাড়ির পাশে। কিন্তু রনজিৎ তরফদার দূরের এক বিএনপি কর্মীকে বর্গা দেন। তিনি নিজে বর্গা নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু জমির মালিক দিতে চাননি। যে কারনে তিনি চাষ করেছেন। তিনি বলেন মৌসুম শেষে জমির মালিককে টাকা দিয়ে দেবেন।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মানোয়ার হোসেন মোল্লা জানান, বিষয়টি তাকে কেউ অবহিত করেননি।