শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০১৯
প্রথম পাতা » অপরাধ | জেলার খবর » খুলনায় আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফ ও ভূ’মিদ’স্যু বাবুর দ’খলে অর্ধশত জমি ও বাড়ি !
খুলনায় আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফ ও ভূ’মিদ’স্যু বাবুর দ’খলে অর্ধশত জমি ও বাড়ি !
খুলনা প্রতিনিধি -
খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক আশরাফ হোসেনের বিরুদ্ধে একে একে ২২টি বাড়ি দ’খলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব বাড়ির বর্তমান মূল্য প্রায় শত কোটি টাকা। তকদীর হোসেন বাবু নামে এক চিহ্নিত ভূ’সিদ’স্যুকে দিয়ে ব্যাপক দ’খলবা’জি ও আধিপাত্য বিস্তার করায় ‘আশরাফ-তকদীর বাবু’ গ্যাং নামে এলাকায় পরিচিত হয়ে উঠেছেন তিনি। সম্প্রতি তার দ’খলদা’রিত্বের বিস্তারিত তুলে ধরে এক ভুক্তভোগী সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলন লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী মো. রেজাউল করিম রাজা। এ সময় তিনি বলেন, আমাদের বাড়ি খালিশপুরের আবাসিক এলাকার ৩৯ নং হোল্ডিং। যেখানে আমার বাবা মুন্সী বেলায়েত হোসেনসহ আমরা দীর্ঘ ২০ বছর ধরে বসবাস করে আসছিলাম।
কয়েক বছর আগে ভূমিদস্যু তকদীর বাবু ও আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফগংরা হাউজিং অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তার সহায়তায় জালিয়াতি করে কাগজপত্র তৈরী করে আমাকে এবং আমার বাড়ির ভাড়াটিয়াদের মা’রধর করে বের করে দিয়ে বসতবাড়ি দ’খল করে নেয়। যেখানে বর্তমানে আশরাফের মেঝ বোন বসবাস করছেন।
আমি বিভিন্ন জায়গায় ধর্ণা ধরেও এই ভূ’মিদ’স্যু আশরাফ তকদীর বাবু গংএর ক্ষ’মতার দা’পটে দিশেহারা হয়ে বর্তমানে ভাড়া বাড়িতে পরিবার নিয়ে বসবাস করছি। শুধু আমার এই বাড়ি দ’খলই নয়, অন্ততপক্ষে খালিশপুর হাউজিং এষ্টেটের প্রায় ৫০টি বাড়ি ভূমিদস্যু ‘আশরাফ-তকদীর বাবু’ গংরা দ’খল করে নিয়েছে।
আশরাফ হোসেনের দখলকৃত ২২টি বাড়ি হলো- ১। বাড়ি নং- ২৪, রোড নং- ১১৩ (জমির পরিমান ৫ কাঠা) ২। বাড়ি নং- ২৪, রোড নং- ১১৩ (জমির পরিমান ৭ কাঠা) ৩। বাড়ি নং- ১২/১, রোড নং- ১১৩ (জমির পরিমান প্রায় ৭ কাঠা, কুদ্দুসের বাড়ি) ৪। বাড়ি নং- ৪১, রোড নং- ১৭ (বিশাল সুরম্য অট্টালিকা যা বর্তমানে বন্ধন নামে পরিচিত) ৫। বাড়ি নং- এ/২৮, রোড নং- ১৭ (জমির পরিমান ৫ কাঠা)
আরও পড়ুন: ওসির নেতৃত্বে থানায় মাদ্রাসা ছাত্রের মাকে গ*ণ ধ*র্ষণ,ওসিই করছেন তদারকি
৬। বাড়ি নং- ৩৯, রোড নং- ১৮৩ (জমির পরিমান ৭ কাঠা)। ৭। বাড়ি নং- ১৯, রোড নং- ১১ (জমির পরিমান ৫ কাঠা) ৮। বাড়ি নং- ২৬, রোড নং- ১৮২ (জমির পরিমান ৭ কাঠা) ৯। বাড়ি নং- ৬৭, রোড নং- ১৮২ (জমির পরিমান ৫ কাঠা ওয়েষ্ট জোন, সি) ১০। বাড়ি নং- এল/পি ৮১, রোড নং- ১৭৬ (কাশিপুর বড় বাড়ি জমির পরিমান ৩ কাঠা)।
১১। বাড়ি নং- এল/ডি ৯০/২, রোড নং- ২৪/এ (কাশিপুর বড় বাড়ি জমির পরিমান ৩ কাঠা) ১২। আবু নাসের হাসপাতালের পাশে হাউজিং প্রকল্পের নামে-বেনামে ১১টি প্লট নেয়া, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ২০ কোটি টাকা । খালিশপুরের হাউজিং এস্টেটের নির্বাহী প্রকৌশলীর অফিসে তদন্ত করলে সব জানা যাবে। ১৩। চিত্রালী মার্কেট খালিশপুর-৪টি দোকান নং- ৬৭, ১৩০, ১২৮, ১২৪। ১৪। খালিশপুরস্থ ওয়ান্ডার ল্যান্ড শিশু পার্কে ৪টি রাইড যার ১টি পানিতে চলে । ভয়জার নামে যা পরিচিত। উক্ত ভয়জারের ভিতরে অ’নৈতিক কার্যকলাপ ও নারী পুরুষের অ’বাধ মেলামেশার সুযোগ করে দিয়ে অর্থ উপার্জন করে ।
১৫। উক্ত শিশু পার্কের বাইরে ২টি দোকান। ১৬। গোয়ালখালি রেললাইনের পাশে ২টি কমাশিয়াল প্লট যা ভাড়ায় দেয়া। ১৭। হাজী মুহাম্মদ মুহসীন কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নামে-বেনামে ৪টি দোকান নেয়। ১৮। মুজগুন্নি ওয়ান্ডার ল্যান্ড শিশু পার্কের গেট সহ ভিতরের বিভিন্ন রাইড জোর পূর্বক কমদামে ক্রয় করে ভাড়ার মাধ্যমে পরিচালিত করে।
১৯। নতুন রাস্তা কবীর বটতলা এলাকায় ২টি কমার্শিয়াল প্লট দলীয় প্রভাব খাটিয়ে বরাদ্দ নেয়া । ২০। খালিশপুর নিউ মার্কেটে নামে-বেনামে ৪টি দোকান। ২১। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে লিজ খামার এলাকায় প্রায় ১০০ বিঘা জমি। ২২। বর্তমানে দুই দিন আগে সি-২৬, রোড নং- ১৮২, খালিশপুর ওয়েষ্ট এন্ড জোনের একটি প্লট, প্রকৃত মালিক কাশিপুর নিবাসী মরহুম নজরুল সাহেবের ওয়াারিশগনের ভাড়াটিয়াদের প্রকাশ্য দিবালোকে মা’রধ’র করে তাড়িয়ে দিয়ে দ’খল করে নেয়।
আরও পড়ুন: ‘বর্তমান সরকারের পরিণতি মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্টের চেয়েও খারাপ হবে’
রাজা আরও বলেন, আমার জানামতে এসব জমি প্লট ছাড়াও আরো অনেক জমি রয়েছে যা যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তদ’ন্ত করলেই সঠিক তথ্য বেরিয়ে আসবে। নির্দিষ্ট কোন ব্যবসা বানিজ্য না থাকা সত্ত্বেও আওয়ামী লীগের নেতা আশরাফের বিভিন্ন ব্যাংকে স্বনামে-বেনামে কোটি কোটি টাকার এফ,ডি,আর এবং নগদ অর্থ আছে। কথিত আছে এতো নগদ অর্থ খুলনায় কারো কাছে নেই । যা বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত সাপেক্ষ্যে জানা যাবে।
বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত শুদ্ধি অভিযান চলাকালে এ ধরনের বাড়ি দ’খল ও নি’রীহ সাধারণ মানুষকে মা’রধর করে আসবাবপত্র ভাংচু’র করে তাদের বের করে দিয়ে দ’খল নেয়ার মতো দুঃসাহ’সিক ঘটনা ঘটিয়ে শু’দ্ধি অভিযানকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে বহাল তবিয়তে এখনও প্রকাশ্যে অবস্থান করছে আশরাফ।
যেখানে সরকার প্রধান এসব ব্যাপারে জিরো টলারেন্স গ্রহন করে সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তা ও বাসযোগ্য বাংলাদেশ গড়ার প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, ঠিক সেই সময় দলীয় নাম ভাঙ্গিয়ে এ ধরনের অ’পকর্ম করে যাচ্ছে, যা দেখে খালিশপুর ও খুলনাঞ্চলের মানুষ চরম আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পরেছেন।
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং দু’র্নীতি দ’মন ক’মিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ভুক্তভোগী মো. রেজাউল করিম রাজা। এদিকে অভিযোগের বিষয়ে বৃহস্পতিবার বিকেল অভিযুক্ত আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি যদি বাড়ি দ’খল করি থাকি দেশে আইন আছে পুলিশ আছে। যে জায়গায় বড় বড় ক্যা’সিনো ভে’ঙ্গে দিয়েছে সে জায়গায় আমি কি। যেখানে এমপিদের পদ নেই। আওয়ামী লীগের সম্মেলন সামনে রেখে প্রতিপক্ষ আমার বিরুদ্ধে এসব ষড়যন্ত্র করছে। আমি ছাত্র রাজনীতি করতে করতে এ পর্যন্ত এসেছি আমার নামে এখন পর্যন্ত কোন ক্লেম নাই। যারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তাদের কাগজপত্র দেখাতে বলেন।