সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০১৯
প্রথম পাতা » শিক্ষা ও ক্যারিয়ার » অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠান, সাইনবোর্ড টানিয়ে এমপিওভুক্তি!
অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠান, সাইনবোর্ড টানিয়ে এমপিওভুক্তি!
নেত্রকোনা ডেস্ক-
নেত্রকোনার মদনে অস্তিত্বহীন একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির তালিকায় অন্তর্ভুক্তি হয়েছে। এতে করে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয়দের মাঝে। নিয়ম অনুযায়ী নিজস্ব ভূমিতে প্রতিষ্ঠান থাকার কথা থাকলেও ভাড়া বাড়িতে রয়েছে শুধু মাত্র সাইনবোর্ড।
জানা যায়, ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় নেত্রকোনার মদন উপজেলায় ‘জনতা কারিগরি এন্ড বাণিজ্য কলেজ’। যার ইন নম্বর ১৩২১৯৮। প্রতিষ্ঠান কোড ৫৮০২৯। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ আব্দুল আজিজ আলম। তিনি জেলা কারিগরি এন্ড কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি।
দীর্ঘদিন পর সারাদেশে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির তালিকায় অন্তর্ভু্ক্ত করেছে সরকার। নেত্রকোনা জেলায় স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, কারিগরিসহ মোট ৬০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এই তালিকায় রয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে ৮টি কারিগরি কলেজ। এই ৮ কলেজের মধ্যে রয়েছে ‘জনতা কারিগরি এন্ড বাণিজ্য কলেজ’।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জনতা কারিগরি ও বাণিজ্য কলেজটি জেলার মদন উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের হাসামপুর এলাকায় থাকার কথা থাকলেও সেখানে প্রতিষ্ঠানটির নেই কোন নিজস্ব ভূমি। নেই কোন ঘর। নেই কোন সাইনবোর্ড। এছাড়াও দেখা মেলেনি কোন শিক্ষক-শিক্ষার্থীর।
এদিকে মদন উপজেলা সদরের মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের পেছনে জনৈক জসিম উদ্দিনের একটি ভাড়া বাসায় একটি সাইনবোর্ড দেখতে পাওয়া যায়।
বাড়ির মালিক জানায়, ‘প্রায় ৩ বছর যাবৎ ৫ হাজার টাকায় ভাড়া নিয়ে তার বাড়িতে সাইনবোর্ড টানিয়ে প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।’
স্থানীয় অনেকের সাথে কথা বলে জানা যায়, ‘দীর্ঘদিন আগে বালালী বাজারে একটি সাইনবোর্ড টানানো ছিল। আর এই সাইনবোর্ড দেখিয়ে অনেকের কাছ হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তাদের চোখে কোনদিন এর কার্যক্রম পরিলক্ষিত হয়নি। কোনদিন কোন শিক্ষক-শিক্ষার্থী তাদের চোখে পড়েনি। এ নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন স্থানীয়রা।’
এদিকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ফখরুদ্দিন জানান, এলাকায় ‘জনতা কারিগরি ও বাণিজ্য কলেজ’ নামে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তার চোখে পড়েনি। কিন্তু কিভাবে এই প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত হল তা নিয়ে শংকা প্রকাশ করেন।
জনতা কারিগরি এন্ড বাণিজ্য কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল আজিজ আলম বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, ‘তার প্রতিষ্ঠানে আড়াইশত শিক্ষার্থী, ১১ জন শিক্ষক রয়েছে। প্রতিবছর পরীক্ষার ফলাফলও ভাল। তবে সরকারি সহযোগিতা না পাওয়ায় অবকাঠামো না থাকায় অন্যের বাড়ি ভাড়া করে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। যেহেতু প্রতিষ্ঠানটি এমপিও হয়েছে তাই নিজস্ব জায়গা নিয়ে ভবন নির্মাণ করা হবে। নিজস্ব জায়গা না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান।’
এ ব্যাপারে জেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুল গফুর বলেন, ‘নিজস্ব জায়গা, ঘর, প্রয়োজনীয় শিক্ষক শিক্ষার্থীসহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন থাকলেই একটি প্রতিষ্ঠান এমপিও হতে পারে। অন্যথায় তা এমপিও হওয়ার যোগ্যতা রাখেনা। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়ালীউল হাসান বলেন, ‘জনতা কারিগরি ও বাণিজ্য কলেজ নামে কোন প্রতিষ্ঠান আছে বলে জানা নেই। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
বাংলাদেশ জার্নাল/কেআই